ভেঙে দেয়া ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটি শীঘ্রই ঘোষনা করা হবে, এমনটাই জানিয়েছেন দলের শীর্ষ একাধিক নেতা। এদিকে কমিটিতে পদ পেতে যার যার অবস্থান থেকে দৌড়-ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য নেতারা।
শীর্ষ নেতারা বলছেন, কমিটিতে কাকে কাকে নেতৃত্ব দেয়া হবে, সেটা নিয়ে কাজ চলছে। যে কোনো সময় কমিটি ঘোষনা করবেন বিএনপির হাই কমান্ড।
তৃনমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, যাদের সাংগঠনিক দক্ষতা বেশি, অভিজ্ঞতা আছে। রয়েছে ক্লিন ইমেজ। যাদের কাছে জনগনের যানমাল ও ইজ্জত নিরাপদ এমন নেতাকেই নেতৃত্বে আনা উচিৎ। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারন করবেন বিএনপির হাইকমান্ড।
সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরবকে আবারো নেতৃত্বে আনার দাবী জানিয়ে তারা বলছেন, সাইফুল আলম নিরব তৃনমূল থেকে উঠে আসা পরিক্ষিত নেতা।
তাদের দাবী, দলীয় রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকে, নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা থাকে। অসুস্থ প্রতিযোগীতা কাম্য নয়। প্রতিপক্ষরা নিরবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। আবারো নিরবকে দায়িত্ব দিলে তার অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে উত্তর বিএনপিকে আরো সংগঠিত করতে সক্ষম তিনি।
দলের সিনিয়র নেতারা বলছেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিনে সাংগঠনিকভাবে দক্ষ অসংখ্য নেতা রয়েছে। সে তুলনায় উত্তরে নেতা কম। তাই দক্ষ নেতার হাতেই নের্তৃত্ব তুলে দিতে হবে।
দলীয় সূত্রে গেছে, ভেঙে দেয়া উত্তরের কমিটিতে পদ পাওয়া বেশ কয়েকজনকে জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে গুরুত্বপূর্ন পদ দেয়া হবে। সাইফুল আলম নিরব ও আমিনুল হকসহ আগের কমিটিরি অনেকেই আবারো নেতৃত্বে আসতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। উত্তরের নের্তৃত্বে আবারো সাবেক আহ্বায়ক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের নাম জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে। দুইবারের সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হকও রয়েছেন আলোচনায়। এছাড়া সভাপতি বা আহ্বায়ক পদে আলোচনায় রয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এমএ কাইয়ুম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন ও এ জি এম শামসুল হক। আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন সাইফুল আলম নিরব ও এমএ কাইয়ুম।
এদিকে সাধারন সম্পাদক বা সদস্য সচিব পদে আলোচনায় রয়েছেন আহসান উল্লাহ চৌধূরী হাসান, ফয়েজ আহমেদ ফরু, এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ, এস এম জাহাঙ্গীর, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ফখরুল ইসলাম রবিন, গোলাম কিবরিয়া মাখন ও এ বিএম রাজ্জাক। তাদের মধ্যে আক্তার হোসেন, এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন এর আগে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
ছাত্রনেতা
শেরেবাংলা নগর থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সালামত খান সজিব বলেন, সাইফুল আলম নিরব সর্বস্তরের জনপ্রিয় নেতা। তিনি দলের বিভিন্ন পদে নের্তৃত্বের পরিক্ষা দিয়েছেন। তিনি উত্তরের প্রতিটি এলাকায় ছাত্রদল-যুবদলসহ সকল নেতকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করে মজবুত সেতুবন্ধন তৈরি করেছেন। নিরব ভাই সংগঠনকে যেভাবে চালাতে পারবে উত্তরে তেমন কাউকে আমরা দেখছি না।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসাইন মতি বলেন, যাদের ইমেজ ক্লিন ও অভিজ্ঞাতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা আছে এমন নেতৃত্ব নেতাকর্মীরা চায়। নিশ্চই হাইকমান্ড মাঠের নেতরাকর্মীদের কাছে গ্রহনযোগ্য নেতাকে নের্তৃত্ব দেবেন। এক্ষেত্রে সাইফুল আলম নিরব বা কাইয়ুম ভাই নের্তৃত্বে আসতে পারেন।
তিনি বলেন, আমাদের ত্রুটি বিচ্যুতি ছিলো। ৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে যে ভুমিকা পালন করতে পারিনি সেজন্য হয়েতো কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।
সাইফুল আলম নীরব বলেন, আমার দল যেটা ভালো মনে করে সেটাই করবে। আমি কনভেনার ছিলাম সেহেতু আমি সভাপতি পদ আশা করতেই পারি।
আমিনুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেন নি।
আহসান উল্লাহ হাসান বলেন, আশা করি আগামী কমিটিতে দল মূল্যায়ন করবে।
কফিলউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, তিন যুগ থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এমন কোনো জায়গা নেই নেতাকর্মীদের পাশে থাকিনি। সব কিছু বিবেচনা করে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে বলে বিশ্বাস করি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কমিটি গঠনের কাজ চলছে। শিগগির ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে হঠাৎ করে কোনো কারণ উল্লেখ না করে আড়াই মাসের ব্যবধানে সাইফুল আলম নিরব ও আমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন দলের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে বিএনপি।
আপনার মতামত লিখুন :