ঢাকা: রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় থেকে অবৈধভাবে জমি দখল করে সেটাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। পরিবারের সদস্যরা বলেন,
জোরপূর্বক বাড়ি দখল সম্পর্কে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীমকে জড়িয়ে দেওয়া অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে জমির প্রকৃত মালিকরা এ অভিযোগ করেন। এতে জমির মালিক জাকেরা ইসলাম, নাসরীন সুলতানা, নাহিদ ইসলাম মনিকা, আবিদা ইসলাম, সরফুদ্দিন সোহাগ এবং তাবাসসুম ফেরদৌস শাওন উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে পরিবারের পক্ষে নাহিদ ইসলাম মনিকা বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের সহিত জানাচ্ছি যে, শুক্রবার জনৈকা পারভীন সংবাদ সম্মেলনে হয়তো কোন ব্যক্তি বিশেষের প্ররোচনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা শিকারের উদ্দেশ্যে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীমকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন- যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, আমি বা আমার পরিবারের কেউ কখনই এই বিষয়ে ব্যারিস্টার অসীমের স্মরনাপন্ন হয়নি এবং তিনি আমার জানা মতে এবিষয়ে কোন কিছুই জানেন না। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার অসীম সাহেবকে জড়িয়ে মিথ্যাচার এবং তার নাম বার বার উচ্চারণের মাধ্যমে প্রমাণীত হয়েছে যে, পারভীন গং নিজেদের স্বার্থ এবং তার আশ্রয়দাতারা ফায়দা হাসিলের জন্য ঘৃণ্য সরযন্ত্রে লিপ্ত। এছাড়া ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার জেরে আরো কয়েকজনের নাম জড়ানো হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।
মনিকা বলেন, এই বাড়ি ও জমি আমাদের, আমরা এর প্রকৃত মালিক হওয়া স্বত্ত্বেও তারা আজও পর্যন্ত বাড়িটি জরবদখল করে আছে। সংবাদ সম্মেলন করলে আমরা করবো, আমরা সাংবাদিক ভাইদের কাছে এই বাড়ি উদ্ধারের জন্য অনুরোধ করবো। আমাদের প্রত্যাশা আপনারা সত্য ও সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করার মধ্যমে আমাদের ন্যয় বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করবেন।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘ প্রায় ৫০ বৎসর যাবত আমার বাবা এডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদার বৈধভাবে ক্রয় করে উক্ত জমি ভোগ দখল করে আসতেছিল। কিন্তু কিভাবে পারভীন গংরা অবৈধভাবে কোন রকম কাগজপত্র ছাড়া জমির মালিকানা দাবি করে এবং গত ১৪ সেপ্টেম্বর জোরপূর্বক সেই বাড়ি দখল করে আছেন সে সম্পর্কে আপনাদেরকে অবহিত করার জন্যই আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।
নাহিদ ইসলাম মনিকা বলেন, আমার বাবা এডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদার পারভীন গং এর মাকে দয়া করে সেখানে আশ্রয় সরূপ থাকতে দেয়। পরবর্তীতে তিনি দেখাশুনা করেন এবং প্রতি মাসের ভাড়া উত্তোলন করিয়া আমার নিকট পৌঁছে দিবেন এবং এর বিনিময়ে তাদের থাকার জন্য একটি রুম দেয়া হয়। এভাবেই চলে আসতেছিল। কিন্তু আমার বাবা ও মা মারা যাবার পরে তারা নানা রকম প্রতারণা করে বাড়িটি দখলের পাঁয়তারা করেন এবং বাড়িটিকে মাদকের আখরায় পরিণত করেন। পরবর্তীতে তাদের এই অপচেষ্টা রোধের বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হতে আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং আমাদের বিরুদ্ধে থানায় ও আদালতে মিথ্যা মামলা দেয়। যা আইনগত প্রক্রিয়ায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রমানিত হয়।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে ১৮নং ওয়ার্ডের আওয়ামি লীগের সভাপতি বিপ্লব সরকারের যোগসাজসে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা জোরপূর্বক আদায় করে এই জমিতে আর কোনদিন আসবে না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়। এরপর বিগত ২ বছর যাবৎ বাড়িটি নতুন করে মেরামত ও নির্মানণ করে ভোগদখল করে আসতেছিল। কিন্তু আমার সাংসারিক অভাব অনটনের কারণে আমাদের নগদ টাকার প্রয়োজন হলে মো. হানিফ খন্দকার গংয়ের দ্বারস্থ হই এবং জমির আইনি প্রক্রিয়া শেষে রেজিস্ট্রিশেন সম্পূর্ন করার সর্তে রেজিস্ট্রি দলিলে নোটারি পাবলিক কর্তৃক সত্যায়ন পূর্বক চুক্তিবদ্ধ হই এবং আমার যৌথভাবে ভোগদখল করতে থাকি।
মনিকা বলেন, সংবাদ সম্মেলনে পারভীন দাবি করেন এই জায়গাটি সরকারি ও পরিত্যাক্ত যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা যে এই সম্পত্তির মালিক তার যথাপযুক্ত দালিলিক প্রমাণাদি আমাদের নিকট আছে তা আপনাদের হাতে তুলে দিলাম কিন্তু পারভীন গংদের কাছে বিন্দুমাত্র কোন বৈধ দালিলিক প্রমানাদি আছে কী না তা আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন। এই পারভীন, ট্যাবলেট বাবু, পিন্টু নীলক্ষেত, কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোডসহ সমগ্র ১৮নং ওয়ার্ডের মাদক সম্রাজ্ঞী নামে সুপরিচিত যাদের নামে নিউ মার্কেট থানায় কমপক্ষে ৮-১০টি মাদক এবং পারভীন ও ট্যাবলেট বাবুর নামে ২টি চেন ও মোবাইল ছিনতাইয়ের মামলা আছে। এ পর্যন্ত তারা আনুমানিক ৬ বার পুলিশের কাছে আটক হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিল। যার প্রমাণ আপনার থানায় খবর নিলে জানতে পারবেন।
তিনি বলেন, এই বাড়িটি যে, নুরুল ইসলাম তালুকদার চেয়ারম্যান বাড়ি নামে পরিচিত তা এলাকার শতভাগ আপামর জনগণের বিগত ৫০ বছর থেকে জানা। বাড়িটি জবর দখল হবার পর এলাকার গণ্যমান্য সুপরিচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য পারভীন গংদের কাছে গেলে তারা পূর্বের ন্যায় পুনরায় থাকার জন্য একটি রুম দাবি করেন। এ অবস্থায় বিষয়টি রয়েছে কিন্তু তারা রাজনৈতিকভাবে ফয়দা নেয়ার জন্য বিভিন্ন গ্রুপের দারস্থ হয়ে এক নোংরা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির করে আমাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :