ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

আল আমিন মুহাম্মদ স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী

নাইমুর রহমান শান্ত, বাহরাইন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম

আল আমিন মুহাম্মদ স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাহরাইনের সিত্রা স্ট্রাইকার্সের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাবের সার্বিক তত্ত্বাবধানে "আল আমিন মুহাম্মদ স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট" এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজ মাসুম ও আবদুল্লাহ ইকরামের যৌথ সঞ্চালনায় এই আয়োজন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

চ্যাম্পিয়ন ও পুরস্কার বিজয়ীরা ফাইনালে জিদালি ভিক্টোরিয়ান্সকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় বি-বাড়িয়া আশার আলো। এই টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন জিদালি ভিক্টোরিয়ান্সের সবুজ। ম্যান অব দ্য ফাইনাল এবং সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার অর্জন করেন হৃদয়। সেরা বোলার হিসেবে নির্বাচিত হন জামাল।

উপস্থিতি ও অতিথিদের বক্তব্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এ.কে.এম মহিউদ্দিন কায়েস। তিনি বলেন, আল আমিন মুহাম্মদ ছিলেন এক অসাধারণ সংগঠক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন একজন মানুষ। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব প্রবাসে বাংলাদেশিদের ঐক্যবদ্ধ করতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছে। শুধু তাই নয়, ক্লাবটি প্রবাসের বাইরেও দেশের ক্রান্তিকালে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করেছে যে দেশপ্রেম কোনো সীমারেখায় আবদ্ধ নয়।

এই স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুধু একটি ক্রীড়া আয়োজন নয়। এটি আল আমিনের স্বপ্ন, তাঁর মানবিক উদ্যোগ এবং দেশের প্রতি ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি অনন্য উদাহরণ। তিনি প্রবাসে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তোলার যে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন, তা বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাবের নতুন নেতৃত্ব এই ধারা অব্যাহত রাখবে এবং প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির কল্যাণে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ক্লাবটি যেভাবে এক দশক ধরে কাজ করেছে, তাতে এটি শুধু প্রবাসীদের নয়, পুরো দেশের গর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। আল আমিন মুহাম্মদের স্মৃতি ও আদর্শ নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাবে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগবে।"

প্রধান অতিথি আরও উল্লেখ করেন যে, এ ধরনের আয়োজন প্রবাসীদের মধ্যে সম্প্রীতি, সহমর্মিতা এবং সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলে। এ আয়োজনকে সফল করার জন্য তিনি আয়োজক কমিটি এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন তরুণ ব্যবসায়ী দেলায়োর হোসেন, জাহিদ হোসেন, আরিফ খান ইমন, ফয়েজ আহমেদ রাজু ও সাংবাদিক সৈয়দ মামুনসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

উল্লেখ্য, আল আমিন মুহাম্মদ এক অনুপ্রেরণার নাম ২০১৪ সালের মে মাসে বাহরাইনে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব, যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আল আমিন মুহাম্মদ। ‍‍`ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ‍‍` স্লোগান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন প্রবাসে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করে আসছে। কেবল প্রবাসে নয়, দেশের ক্রান্তিলগ্নেও ক্লাবটি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছরের ২৭ জুলাই কিডনি জনিত সমস্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আল আমিন মুহাম্মদ। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। টুর্নামেন্টের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ২০টি দলের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে মোট ৪৭টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। পুরো আয়োজন পরিচালনায় ছিলেন মোজাম্মেল কিং, রহমত উল্লাহ, আরিফুল, মহসিন, ইকরাম, রায়হান, লিটন, মোশারফ এবং সিত্রা স্ট্রাইকার্স ও বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাবের সদস্যবৃন্দ। বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাবের নতুন নেতৃত্ব ক্লাবের ঐতিহ্য ও অর্জনকে ধরে রেখে আগামীতেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আল আমিন মুহাম্মদ স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ছিল প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এক অনন্য উদাহরণ। এই আয়োজন কেবল খেলাধুলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি দেশের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের প্রতীক। আল আমিন মুহাম্মদের স্বপ্ন ও আদর্শ ধরে রেখে ক্লাবটি ভবিষ্যতে আরও বড় পদক্ষেপ নেবে-এমনটাই প্রত্যাশা।

আরবি/জেডআর

Link copied!