মধ্যপাচ্যের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম কুয়েত। উন্নতির ধারা বজায় রাখতে দেশটির পরিচ্ছন্নতাকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস, আদালত, শপিংমল, রাস্তাঘাট, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষি বাগানসহ নানা কাজে বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিক নেওয়া হয়।
পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে কুয়েতের ভিসা নিতে কোনো সমস্যা না হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রয়েছে ভিন্নতা। প্রয়োজন হয় কুয়েতের উচ্চপর্যায়ের বিশেষ অনুমতি বা লামানা। এই লামানার অজুহাত দেখিয়ে একটি চক্র ভিসার দাম করে রেখেছে আকাশচুম্বী।
অন্যদিকে, কিছু অসাধু দালালের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে বিভ্রান্ত হয়ে প্রবাসীরা ২০ নম্বর খাদেম গৃহকর্মী ভিসা, ১৮ নম্বর শোন ভিসা কিংবা ছোট কোম্পানির ভিসা নিয়ে কুয়েতে এসেও পড়ছেন বিপদে। যথাযথ সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় অনেকেই নিজের অজান্তেই অবৈধ হয়ে যাচ্ছেন। এতে কুয়েতে একদিকে যেমন- বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, তেমনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কর্মীরা।
এ অবস্থায় কুয়েতের বাংলাদেশি দূতাবাস সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ রক্ষার্থে একক ভিসা সত্যায়নের আবেদন শুধু কুয়েতি মালিক বা কফিল দ্বারা দূতাবাসে গ্রহণ করা হচ্ছে। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রবাসীরা। তারা বলছেন, কফিল বা স্পন্সর খোঁজে পাওয়া সহজ হবে এবং দায়বদ্ধতার জায়গা থাকবে। এ ছাড়া এতে জাল ভিসার দৌরাত্ম্য কমবে। কোনো সমস্যা হলে কুয়েতিদের জবাবদিহিতা থাকবে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, কুয়েতে সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগে দূতাবাসের সত্যায়ন বাধ্যতামূলক করা হলে একদিকে যেমন ভিসা জালিয়াতি অনেকাংশে কমবে, তেমনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বেঁচে যাবেন প্রবাসীরা।
কুয়েতে গৃহকর্মী বা একক শ্রমিক ভিসা সত্যায়নের ক্ষেত্রে মালিককে সশরীর উপস্থিত থাকার নির্দেশনাকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশটির বাংলাদেশি কর্মীরা যেন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দূতাবাস।
কুয়েতে বর্তমানে তিন লাখেরও অধিক প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের বড় একটি অংশ কাজ করছেন দেশটির ক্লিনিং কোম্পানিগুলোতে। গত কয়েক বছরে ‘আখুদ হুকুমি’বা দেশটির সরকারি প্রজেক্টে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষিত বিভিন্ন কারিগরি কাজে দক্ষ থাকা সত্ত্বেও আকামা জটিলতার কারণে নিজে দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি। এবার সেই জটিলতা লাঘব হবে বলে মনে করছেন শ্রমিকরা।
আপনার মতামত লিখুন :