নির্বাচনমুখী বিএনপির প্রবাসী নেতারা

জুবায়ের আহমেদ, লন্ডন

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ০৯:২৯ এএম

নির্বাচনমুখী বিএনপির প্রবাসী নেতারা

ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদ অথবা স্থানীয় নির্বাচন- দেশের নির্বাচনি মাঠে বরাবরই প্রবাসীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে দেখা যায়। গত ১৫ বছর দেশের নির্বাচনগুলোতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সেভাবে অংশ না নিলেও এবার তারা রয়েছেন সরব। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার এখন ক্ষমতায়। 

সদ্য সেনাপ্রধান আগামী ডিসেম্বর বা তার কাছাকাছি দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলেছেন। এরই মধ্যে নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বিএনপির একাধিক প্রবাসী নেতা। এতে এগিয়ে রয়েছেন লন্ডন-আমেরিকায় অবস্থানরত নেতারা। 

জানা যায়, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমেদ, ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সৌদ আরব বিএনপির সভাপতি আহমদ আলী মুকিব, শিকাগো বিএনপির সভাপতি শাহ্ মোজাম্মেল নান্টু, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল লতিফ সম্রাট, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সদস্য গিয়াস আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সদস্য জিল্লুর রহমান জিল্লু, বর্তমান কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন ভুঁইয়া, ডা. মুজিবর রহমান মজুমদার, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ সোলায়মান ভূঁইয়া, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন বাদল, সাবেক সহ-সভাপতি দিনাজ খান (ফ্লোরিডা), সাবেক যুগ্ম সম্পাদক পারভেজ সাজ্জাদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাবেক সভাপতি এ কে এম রফিকুল ইসলাম ডালিম, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ আহমেদ। এসব নেতার অনেকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছেন। অনেকে বাংলাদেশ থেকে ফিরেছেন এবং আবার যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আগামী নির্বাচনে সিলেট-৩ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এম এ মালেকের নির্বাচনি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে ‘সাউথ সুরমা অ্যাসোসিয়েশন মিডল্যান্ড ইউকে’। এতে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন রাজনীতি করার পর এখন এলাকার মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করছি। 

আমার এলাকার দেশে এবং প্রবাসের মানুষের ব্যাপক জনসমর্থন আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর দেশে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন উন্নয়ন বঞ্চিত আমার দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের উন্নয়নে নিজেকে উজাড় করে দিতে চাই।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ সোলায়মান ভূঁইয়া জিয়াউর রহমানের সময় থেকে বিএনপির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তিনি ফেনী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। 

কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন এবং নিজ এলাকায় তার বিশেষ পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির নির্যাতিত ও পঙ্গু হয়েছেন এমন নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। গত ৭-৮ বছর ধরে তাদের মামলার খরচ জোগান। 

ঈদ উপলক্ষে তার ইউনিয়নের দরিদ্রদের মধ্যে সেমাইসহ নানা সামগ্রী বিতরণ করেন। কারাবন্দি নেতাকর্মীদের জন্য ‘লুঙ্গি-পাঞ্জাবি পাঠিয়েছেন। একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আকাক্সক্ষায় যেসব বিএনপি নেতা বাংলাদেশে ছুটে গেছেন তাদের বেশির ভাগই লন্ডন-আমেরিকার নাগরিক। বাংলাদেশের আইনে অন্য দেশের নাগরিকত্ব আছে এমন কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। তবে এসব নেতারা বলছেন, মনোনয়ন পেলে নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে রাজি আছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত সভায় দলের নেতাকর্মীদের নির্বাচনমুখী হওয়ার দিকনির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি। এ জন্য জনবান্ধব কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির মধ্যদিয়ে নির্বাচনের ব্যাপারে জনগণের মধ্যে দলের ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে। 

পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ রুখতে এবং বিএনপিকে যাতে ভেঙে ফেলতে না পারে এজন্য তৃণমূলের ঐক্য ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এ সভায়। জাতীয় সংসদের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বর্ধিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!