আন্তর্জাতিক সংগঠন কানেক্ট বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল’র উদ্যোগে লন্ডনের আইভি হলে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও নবগঠিত কার্যকরী কমিটির অভিষেক সম্পন্ন হয়েছে।
বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবীণ সংসদ সদস্য যুক্তরাজ্য সরকারের স্টেট মিনিস্টার ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস স্যার স্টিফেন টিমস। বিশেষ অতিথি ছিলেন লন্ডন বারা অফ কেমডেনের সম্মানিত মেয়র সমতা খাতুন। এছাড়া বিভিন্ন বাংলাদেশি সামাজিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রধানগণ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- বৃহত্তর চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশনের ফাউন্ডিং চেয়ারমান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন, জামালপুর জিলা সমিতির সভাপতি মোহাম্মাদ ওবাইদুল্লাহ, ঢাকা অ্যাসোসিয়েসনের সভাপতি ব্যারিস্টার মূফতী নাফিজ, মানিকগঞ্জ সমিতির জেনেরাল সেক্রেটারি মাহবুব উদ্দিন ভুইয়া, বৃহত্তর ঢাকা অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি কাজী মনসুর আহমেদ শিপু, বৃহত্তর পাবনা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ অ্যাসসিয়েশনের মোয়াজ্জেম হোসেন, বৃহত্তর বগুড়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জেড এ ফারুখ রতন, গ্রেটার রংপুর অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সংগঠনের যুগ্ম সচিব মীর রাশেদ আহমেদ ও সহ-সভাপতি আঞ্জুমান চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রথম পর্বে ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসের ওপর আলোচনা। এছাড়া শিশুদের জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রাম বিষয়ক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
এ সময় সভাপতি আবু আহমেদ খিজির নবগঠিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কমিটিকে সকলের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেন।
সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন- সহ-সভাপতি কাউন্সিলর সৈয়দ ফিরোজ গনি, শওকত মাহমুদ টিপু, নুরুল আমিন, অর্থ সম্পাদক, আনিসুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার কাজী নজরুল ইসলাম, পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী রেজা, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মামুনুর রশিদ, মোহাম্মাদ সাইফুদ্দিন, একাউন্টান্ট রাজ্জাকুল হায়দার বাপ্পি, শেখ গাজী, নওশীন মাহমুদ, শহিদুল মাওলা, শেখ নূর, মইন আহমদ, আব্দুল হান্নান তরফদার, ইফেত আহমেদ, বুলবুল আহমেদ প্রমুখ।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন আঞ্জুমান চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী রেজা প্রমুখ।
সারা বিশ্বে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার, সমস্যা ও বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ে আন্তর্জাতিক এই সংগঠন বিগত কয়েক বছর কাজ করে যাচ্ছেন। সারা বিশ্বে বেশ কয়েকটি দেশে এই সংগঠনের শাখা ও প্রশাখা রয়েছে।
সভাপতি আবু আহমেদ খিজির সংগঠনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি সকলের মাঝে তুলে ধরেন।
এসময় তিনি বলেন, আমরা জরুরী ভিত্তিতে কিছু সমস্যার আশু সমাধান চাই। এইগুলোর সমাধানে কানেক্ট বাংলাদেশ সরকারের সাথে এবং প্রশাসনের সাথে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাবে। বিশেষ করে সরকারের কাছে দাবী ও উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন-
1. বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
2. এনআরবিদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতা নিশ্চিত করতে হবে-
3. প্রবাসীদের দেশে দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তাদের সম্পত্তি ও সম্পদের বেআইনি দখল বন্ধ করতে হবে।
4. প্রতারণা এবং অসৎভাবে NRB-এর উত্তরাধিকারদের সম্পতি হস্তগত করা বন্ধ করতে হবে ।
5. সরকারিভাবে এনআরবিরা ভোটার হলেও আমরা বিদেশ থেকে ভোট দিতে পারি না । এনআরবি দের ভোট দানের সুব্যবস্থা করতে হবে।
6. দূতাবাস থেকে কেউ তাদের পাসপোর্ট এবং আইডি কার্ড পেতে পারে তবে জন্ম সনদ ছাড়া এটি সম্ভব নয়। যেটার একটা গ্রহন যোগ্য সমাধান করতে হবে ।
7. তাদের নিজ নিজ দূতাবাস থেকে বিদেশে জন্মগ্রহণকারী NRB-এর শিশুদের জন্য জন্ম সনদ পাওয়া একটি অসম্ভব কাজ যেটার একটা বিহিত করতে হবে।
8. 18 মিলিয়ন এনআরবি এবং রেমিট্যান্স উপার্জনকারীর সংসদে কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই।
9. রেমিটেন্স প্রধানকারী প্রবাসীদের জন্য বিমান বন্দরে হেল্প ডেস্ক ও স্পেশাল সাপোর্ট টিম থাকতে হবে।
10. যদিও এনআরবি এবং রেমিট্যান্স উপার্জনকারীরা বাজেটের 25% অবদান রাখে, কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নির্মাণে আমাদের কোন অংশগ্রহণ বা সম্পৃক্ততা নেই।
11. প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা ও দাবীকে সামনে রেখে কানেক্ট বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল সতের দফা দাবি ইতিমধ্যে সরকারের কাছে পেশ করেছে। আমারা বিস্বাশ করি সরকার আমাদের দাবি দাওয়া গুলো অভিলম্বে পুরন করবে।
আলোচনায় প্রধান অতিথি ব্রিটিশ সরকারের প্রতিমন্ত্রী স্যার স্টিফেন টিমস বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির সাথে তার একটা আত্মার সম্পর্ক বিরাজ করছে। তাদের অকুন্ঠ সমর্থনে তিনি বারবার এই এলাকায় এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবার তাদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে আরও সুদৃঢ এবং মন্দা কাটিয়ে উঠতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। স্বাস্থ্য সেবা পরিধি এবং NHS কে আরও বেশি সমৃদ্ধ করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটির যেকোনো সমস্যা এবং প্রয়োজনে তার সরকার এবং তিনি স্থানীয় এমপি হিসেবে কমিউনিটির পাশে থাকবেন। তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। প্রবাসীদের সমস্যা ও অধিকার আদায়ে তার সরকার কানেক্ট বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতায় পাশে থাকবেন।
আপনার মতামত লিখুন :