ঢাকা বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বানভাসি স্বজনদের বাঁচাতে প্রবাসীদের কান্না

এসএম শাফায়েত, ইউএই ব্যুরো

প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম

বানভাসি স্বজনদের বাঁচাতে প্রবাসীদের কান্না

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বন্যা কবলিত এলাকায় পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনদের আটকে থাকার খবরে আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচের অসংখ্য প্রবাসী আহাজারি করছেন। হাজারো চেষ্টার পর কোন খবর  না মেলায় চোখের পানিতে বুক ভাসাচ্ছেন অসহায় নিরুপায় রেমিটেন্স যোদ্ধারা। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ ফিরতে চান স্বজনদের কাছে। তবুও যদি পাওয়া যায় তাদের সন্ধান। ব্যবস্থা করা যায় একটু বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও ওষুধের।

গত কয়েক দিন যাবত দানব আকার ধারণ করেছে বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি। কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, ফঠিকছড়ি, খাগড়াছড়িতে বন্যা কবলিত অঞ্চলে লাখ লাখ মানুষ আটকে আছেন পানি বন্দি হয়ে। খাবার ও পানির অভাবে হাহাকার করছেন এসব অঞ্চলের অগণিত মানুষ। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ না থাকায় এসব  অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে কয়েকদিন থেকে। এ পরিস্থিতিতে প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে বিদেশে বসে আহাজারি করছেন। অনেকে পরিবার-পরিজনের কথা চিন্তা করে হাউমাউ করে কান্না করছেন দূর প্রবাসে বসে। 

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসকারী সংগীত শিল্পী বঙ্গ শিমুল রুপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কয়েকদিন থেকে। আমি কারো সন্ধান পাচ্ছি না ‘

শিমুল জানান, আমার পরিবার বাড়ীর ছাদে অবস্থান নিয়েছে। তাছাড়া এলাকার অসংখ্য মানুষ ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ে সংলগ্ন ৯নং লেমুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর, মন্ডলবাড়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। প্রতি মিনিটে সেখানে পানির উচ্ছতা বাঁড়ছে। সেখানে প্রচন্ড খাদ্য এবং সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে গর্ভবতী মহিলাও।

তিনি বলেন, ‘সেখানে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছিনা।’ এ এলাকায় দ্রুত উদ্দারকারী দল পাঠানোর জন্য এই প্রবাসী আকুতি জানান সবার কাছে। এ অবস্থার মধ্যে কোন কূলকিনারা না পেয়ে কোম্পানি থেকে জরুরি ছুটি নিয়ে চড়া দামে টিকিট কেটে ফিরেছেন বাংলাদেশে। দুবাই থেকে একটি নিয়মিত ফ্লাইটে চট্টগ্রাম অবতরণ করেন তিনি। সেখান থেকে দ্রুত নিজ গ্রামে ফেরার চেষ্টা করছেন শিমুল। শত কষ্ট আর খরচের পরও যদি পরিবারকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার এবং খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থা করতে পারলে সেটিই এখন গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন এই প্রবাসী।

এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশের বন্যা কবলিত অঞ্চলের অসংখ্য প্রবাসী এখন চরম উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। সকলের একই আকুতি নিজ নিজ এলাকায় অবস্থানকারী পরিবার পরিজনকে সহায়তা করেন। এলাকার মানুষকে বাঁচান। উদ্ধারকারী দল পাঠান, নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান। প্রবাসীদের এই আকুতি সহয়তাকারী দলের কাছে পৌঁছে যাবেন এটায় প্রত্যাশা তাদের।

আরবি/জেডআর

Link copied!