ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার

শিবলী আল সাদিক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৩:১৫ পিএম

শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার

ছবি: ইন্টারনেট

সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি না করলে বিশাল শ্রমবাজার হারাতে পারে বাংলাদেশ। কেননা বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে অন্যান্য শ্রম রপ্তানিকারক দেশগুলোর নেতিবাচক প্রচারণাসহ সরকার পরিবর্তনের প্রাক্কালে কিছু ঘটনাবলি আমিরাতের শ্রমবাজারসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বর্তমানে শুধুমাত্র আভ্যন্তরীণ ভিসায় অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়া ছাড়া বাংলাদেশিদের জন্য আরব আমিরাতের সকল ভিসা বন্ধ রয়েছে। সৌদি আরবের পরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শ্রমশক্তি রপ্তানি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।

বেসরকারি হিসাবে ১৫ লাখের কাছাকাছি প্রবাসী বাংলাদেশি এ দেশটিতে বসবাস করলেও সাম্প্রতিক সময়ে নানা কারণে আবারও বাংলাদেশিদের জন্য সকল ক্যাটাগরির ভিসা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কবে নাগাদ এই রুদ্ধদ্বার খুলতে পারে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে দেশটিতে। সাধারণ ক্ষমার আওতায় আভ্যন্তরীণ ভিসা চালু থাকলেও মাইগ্রেশন কষ্ট বেশি হওয়ার কারণে অনেক অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন চরম বিপাকে। তাছাড়া বাংলাদেশ প্রসঙ্গে অন্যান্য শ্রমিক রপ্তানি দেশগুলোর নেতিবাচক প্রচারণাও মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের শ্রমবাজার হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। একটু পেছনের খবর পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আরব আমিরাতে বাংলাদেশিসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির কারণে ২০১২ সালে সকল প্রকার ভিসা বন্ধ করে দেয় দেশটি।

২০২০ সালের শেষ নাগাদ এসে আবারও চালু হয় বাংলাদেশিদের জন্য আমিরাতের ভিসা। সংশ্লিষ্টদের মতে এই সুযোগটিও অপব্যবহার করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ফলে আবারও শ্রমবাজারের ওপর কঠিন বিধি নিষেধ নেমে এসেছে বলে ধারণা করেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিধি নিষেধের ফলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং বড় বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ব্যাপক। এই মুহূর্তে শ্রমবাজারের সংকট কাটাতে এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ ধরে রাখতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত ইমেজকে কাজে লাগানোর অনুরোধ জানিয়েছেন অনেকে। এদিকে শ্রম বাজারকে স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে দেশটির সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে স্থানীয় বাংলাদেশ মিশনের শ্রম বিভাগের সম্পর্ক উন্নয়নে যে ভূমিকা রাখার প্রয়োজন ছিল সেখানে তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে দাবি প্রবাসীদের। তাছাড়া শ্রমবাজারকে গতিশীল করার পরিবর্তে মিশনগুলো বাংলাদেশ থেকে আমিরাতে প্রত্যাগত শ্রমিকদের ভিসা সত্যায়নসহ নানা প্রতিবন্ধকতার জন্ম দেওয়ায় শ্রমবাজারের গতিশীলতা হারিয়েছে বলে মনে করেন প্রবাসীরা। দেশটির স্থানীয় টাইপিং ও ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম সেন্টারের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। এই সময়ে বাংলাদেশিদের জন্য ভ্রমণভিসা বন্ধ থাকায় এবার বিপুলসংখ্যক ভ্রমণপিপাসু বাংলাদেশি আরব আমিরাত তথা দুবাই ভ্রমণ থেকে বঞ্চিত হবেন। ভ্রমণের জন্য আসতে পারবে না দেশটিতে। তাছাড়া স্টুডেন্ট ও ফ্যামেলি ভিসা বন্ধ থাকায় মারাত্মক সংকটে পড়েছে প্রবাসী পরিবারগুলো। তবে এ ব্যাপারে কিছু বলতে চান না বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই।

আরবি/ আরএফ

Link copied!