মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরের প্রত্যাহার দাবিতে উত্তাল মালয়েশিয়া বাংলাদেশি প্রবাসী।
মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরের প্রত্যাহারের দাবিতে দূতাবাস ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মালয়েশিয়া বাংলাদেশি প্রবাসীরা। তাকে প্রত্যাহার করার দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশিরা।
বিক্ষোভে সালাউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাসেল সরদার, সোহানুর রহমান, মামুন, জুয়েল ও পারভেজসহ অন্যান্য প্রবাসীরা।
এসময় লিখিত বক্তব্যে প্রবাসীরা বলেন, যদি আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরের প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে বাংলাদেশ দূতাবাসকে চরম মূল্য দিতে হবে। আমরা তার দ্বারা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছি। পাসপোর্ট করতে গলে ৬ থেকে ৭ মাস লেগে যায়। বিভিন্ন দালাল ধরতে হয়। আমরা নানান হয়রানির মধ্যে ভুগতেছি। আমাদের যাতে আর পেরেশানি না হতে হয় সেজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি কামনা করি। এসময় তারা – ‘খোরশেদের কালো হাত; ভেঙে দাও, ঘুড়িয়ে দাও’ স্লোগান দিতে থাকেন।
নেতৃত্বে থাকা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের বিশ্বস্ত এই আমলাকে প্রবাসীদের দাবির প্রেক্ষিতে পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বদলির অর্ডার করা হয়। পরে সমালোচনার মুখে সেই বদলির আদেশও বাতিল করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইস্ট এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র তৌফিক হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ই-পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা কার্যক্রমের জন্য চুক্তি সম্পাদন করা হলেও চুক্তি বহির্ভূতভাবে ট্রাভেল পাস ও এনআইডি সেবার মত অত্যন্ত সংবেদনশীল কাজও বাগিয়ে নেয় ইএসকেএল কোম্পানি। ৪৫ রিঙ্গিতের বিনিময়ে হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পাসের জন্য সাধারণ প্রবাসীদের অতিরিক্ত ২০ রিঙ্গিতের চার্জ আদায় করা হচ্ছে কোন প্রকার চুক্তি ছাড়া।
তিনি বলেন, কোন প্রকার সরকারি ফি ছাড়া প্রবাসীদের যে এনআইডি সেবা প্রদান করার কথা, সেই সেবা নিতে প্রবাসীদের থেকে ৭৫ রিঙ্গিত আদায় করা হচ্ছে। চুক্তি বহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক অতিরিক্ত চার্জ আদায়ও করা হচ্ছে প্রবাসীদের নিকট হতে। একাজে নির্লিপ্তভাবে সহযোগিতা করেছিলেন কাউন্সেলর জিএম রানার। যিনি নিজেকে ডেপুটি হাইকমিশনারের অত্যন্ত আস্তাভাজন হিসেবে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের কাছে পরিচিত ছিলেন।
মো. ফারুক নামে আরেক প্রবাসী বলেন, বিগত সরকারের আমলে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের পাসপোর্ট সেবা প্রদানে তৎকালীন সরকার কোনরকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র ছাড়াই এবং পূর্বে কোন অভিজ্ঞতা না থাকা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ট্রাভেল পাস, পাসপোর্ট এবং এআইডির মতো স্পর্শকাতর কাজের দায়িত্ব ইএসকেএল নামক একটি বেসরকারি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়। এর পর দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে ততকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ভিডিও কলের মাধ্যমে ইএসকেএল উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, দূতাবাসের পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে অকার্যকর করার নীল নকশা চলেছে। চুক্তি অনুসারে প্রতিটা পাসপোর্ট আবেদনের বিপরীতে দুতাবাসের একাউন্টে রিঙ্গিত জমা করার কথা থাকলেও জুন মাস পর্যন্ত তা না করে খেয়াল খুশি মত রিঙ্গিত জমা করায় আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। দুতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন এর দোহাই দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইএসকেএলকে অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন। দুতাবাসের কর্মকর্তাদের বরাদ্দ দেয়া পাসপোর্টের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ইএসকেএল কোম্পানীকে পাইয়ে দেন ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর।
আপনার মতামত লিখুন :