বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ১২:৫৫ পিএম

সুরা ফিল অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ১২:৫৫ পিএম

সুরা ফিল অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ

প্রতীকী ছবি

সুরা ফিল পবিত্র কোরআনের ১০৫ নম্বর সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরায় ৫টি আয়াত রয়েছে। আরবি ফিল শব্দের অর্থ হাতি। মক্কি সুরার আলোচ্য বিষয়- ইয়েমেনের বাদশাহ আবরাহার বিশাল হস্তিবাহিনী ধ্বংসের বিবরণ। এ সুরায় হস্তীবাহিনীর ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে।

কাবাঘর ভূমিসাৎ করার উদ্দেশে তারা হস্তিবাহিনী নিয়ে মক্কায় অভিযান করেছিল। আল্লাহ তাআলা নগণ্য পাখিদের মাধ্যেমে তাদের বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে তাদের ষড়যন্ত্র ধুলোয় মিশিয়ে দেন।

সুরা ফিলের আগের সুরা হলো- সুরা হুমাযাহ এবং পরবর্তী সুরা হলো- সুরা কুরাইশ।

সুরা ফিল :

أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيلِ (1) أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ (2) وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ (3) تَرْمِيهِم بِحِجَارَةٍ مِّن سِجِّيلٍ (4) فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّأْكُولٍ (5)

উচ্চারণ:

আলাম তারা কাইফা ফাআলা রাব্বুকা বিআসহা-বিল ফিল। (০১) আলাম ইয়াজ-আল কাইদাহুম ফি তাদলিল (০২) ওয়া আরসালা আলাইহিম তাইরান আবা-বিল। (০৩) তারমি-হিম বিহিজা-রাতিম মিন ছিজ্জিল। (০৪) ফাজাআলাহুম কাআসফিম মা’কুল। (০৫)

বাংলা অর্থ:

তুমি কি দেখনি যে, তোমার প্রতিপালক হাতি-ওয়ালাদের সাথে কিরূপ (আচরণ) করেছিলেন? (০১) তিনি কি তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেন নি? (০২) তাদের বিরুদ্ধে তিনি ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী পাঠিয়েছিলেন। (০৩) যারা তাদের উপর পোড়া মাটির কঙ্কর নিক্ষেপ করেছিল। (০৪) অতঃপর তিনি তাদের চিবানো তৃণ-ঘাসের মতো করে দিয়েছিলেন। (০৫)

সংক্ষিপ্ত আকারে আবরাহার হস্তি বাহিনীর ঘটনা

হাবশার বাদশাহর পক্ষ থেকে ইয়েমেন দেশে আবরাহা গভর্নর ছিল। সে ‘সানআ’তে একটি খুব বড় গির্জা নির্মাণ করিয়েছিল। আর চেষ্টা করল, যাতে লোকেরা কাবাঘর ছেড়ে দেয় এবং ইবাদত ও হজ-উমরাহর জন্য এখানে আসে। এ কাজ মক্কাবাসী তথা অন্যান্য আরব গোত্রের জন্য অপছন্দনীয় ছিল। অতএব তাদের মধ্যে একজন আবরাহার নির্মাণকৃত উপাসনালয়ে মলমূত্র ত্যাগ করে নোংরা করে দেয়।

আবরাহার কাছে খবর পৌঁছাল যে, গির্জাকে কেউ নোংরা ও অপবিত্র করে দিয়েছে। যার প্রতিক্রিয়ায় সে কাবা ঘরকে ধ্বংস করার দৃঢ়সংকল্প করে নেয়। সে বহু সংখ্যক সৈন্যসহ মক্কায় হামলা করার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বেশ কিছু হাতিও তাদের বড় অস্ত্র হিসেবে ছিল। মক্কার কাছে পৌঁছে সৈন্যরা (মক্কার সর্দার) নবী (সা.)-এর দাদার উটগুলো দখল করে নেন।

এ ব্যাপারে আবদুল মুত্তালিব আবরাহাকে বললেন, আমার উটগুলো ফিরিয়ে দাও; যা তোমার সৈন্যরা ধরে নিয়েছে। (আবরাহা বলল, এখন আমরা তোমাদের কাবা ধ্বংস করতে এসেছি, আর তুমি কেবল উট ছেড়ে দেওয়ার দাবি করছ? তিনি বললেন, উটগুলো আমার। তাই আমি সেগুলোর হিফাজত চাই।) বাকি থাকল কাবাঘরের ব্যাপার- যেটা তুমি ধ্বংস করতে এসেছ। সেটা হলো- তোমার ব্যাপার আল্লাহর সাথে। কাবা হলো আল্লাহর ঘর। তিনিই হলেন তার হিফাজতকারী। তুমি জানো আর বায়তুল্লাহর মালিক আল্লাহ জানেন।

অতঃপর যখন এই সৈন্যদল (মিনার কাছে) ‘মুহাসসার’ উপত্যকার নিকট পৌঁছল, তখন আল্লাহ তাআলা একটি পাখির দল প্রেরণ করলেন- যাদের ঠোঁটে এবং পায়ে পোড়া মাটির কাঁকর ছিল; যা ছোলা অথবা মসুরির দানা সমপরিমাণ ছিল। পাখিরা ওপর থেকে সেই কাঁকর বর্ষণ করতে লাগল। যে সৈন্যের গায়ে এই কাঁকর লাগল, সে গলে গেল; তার শরীর হতে গোশত খসে পড়ল এবং পরিশেষে সে মারা গেল। ‘সানআ’ পৌঁছাতে পৌঁছাতে খোদ আবরাহারও একই পরিণাম হল। এভাবে আল্লাহ তাআলা নিজ ঘরের রক্ষা করলেন। (আয়সারুত তাফাসির থেকে সংক্ষেপিত)

শিক্ষা ও নির্দেশনা

১. আল্লাহর ক্ষমতা অসীম। তিনি যা চান, তাই করতে পারেন। তিনি চাইলে এক নিমিষে জালিমের জুলুম গুঁড়িয়ে দিতে পারেন। সব অনাচার শেষ করে দিতে পারেন। কিন্তু যেহেতু দুনিয়া পরীক্ষার জায়গা, এখানে মুমিনদের জীবনেও দুঃখ-কষ্ট আসে, কাফির-জালিমদেরও আল্লাহ ছাড় দেন। তবে মাঝে মাঝে মানুষ অতি মাত্রায় সীমালঙ্ঘন করলে আল্লাহ তার ক্ষমতার প্রকাশ ঘটান।

২. সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। নবিজি তখন মক্কার কাফেরদের শত্রুতা ও জুলুম মোকাবেলা করছিলেন। এ সুরা অবতীর্ণ করে আল্লাহ নবিজিকে (সা.) সান্ত্বনা দিয়েছেন যে, যেভাবে তিনি হাতিবাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিলেন, মক্কার কাফেরদেরও তিনি পরাজিত ও নির্মূল করবেন। পরবর্তীতে তাই হয়েছিলো।

৩. হাতিবাহিনীর ঘটনা ঘটেছিলো রাসুলের (সা.) জন্মের বছর। রাসুল (সা.) যখন ইসলাম প্রচার করছিলেন, তখনও মক্কায় হাতিবাহিনীর ঘটনা মানুষের মুখে মুখে ফিরতো। এ সুরা অবতীর্ণ করে আল্লাহ মক্কাবাসীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তার নেয়ামতের কথা; কীভাবে তিনি তাদের রক্ষা করেছিলেন। অথচ তারা এখন তার প্রেরিত রাসুলকে না মেনে তার নাফরমানি করছে!

Link copied!