কোনো মুসলিম ব্যক্তি মারা গেলে তার ক্ষমা প্রার্থনার জন্য মরদেহ সামনে রেখে যে বিশেষ নিয়মে দোয়া করা হয় সেটিকেই মূলত জানাজার নামাজ বলা হয়। জানাজার নামাজ ফরজে কেফায়া। অর্থাৎ, কয়েকজন মিলে জানাজার নামাজ আদায় করলে তা সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। তবে কেউই যদি আদায় না করে তবে সবাই গুনাহগার হবে।
এ ক্ষেত্রে কারও জানাজায় অংশ নিলেও আছে বিশেষ সওয়াব। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশায় কোনো মুসলিমের জানাজায় অনুগমন করে এবং তার জানাজা আদায় ও দাফন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সঙ্গে থাকে, সে দুই কিরাত সওয়াব নিয়ে ফিরবে। প্রতিটি কিরাত হলো উহুদ পর্বতের মতো। আর যে ব্যক্তি শুধু জানাজা আদায় করে এবং দাফন সম্পন্ন হওয়ার আগেই চলে আসে, সে ব্যক্তি এক কিরাত সওয়াব নিয়ে ফিরবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৫)
জানাজার নামাজ মূলত চার তাকবিরের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এরমধ্যে প্রথম তাকবির বলে উভয় হাত কান পর্যন্ত ওঠাতে হয়। এরপর নাভির নিচে হাত বেঁধে সানা পড়তে হবে। তবে সানার মধ্যে ‘ওয়া তাআলা জাদ্দুকা’-এর পর ‘ওয়া জাল্লা সানাউকা’ পড়তে হয়। এরপর তাকবির বলে দরুদে ইবরাহিম পড়তে হয়। তারপর তাকবির বলে নির্দিষ্ট দোয়া পড়তে হয়। সবশেষ চতুর্থ তাকবির বলে ডানে-বাঁয়ে সালাম ফেরাতে হয়।
এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো- প্রত্যেক তাকবিরে হাত উঠাতে হবে কিনা? বিষয়টি নিয়ে একাধিক মত থাকলেও অধিকাংশ আলেমদের মত, জানাজার নামাজে প্রথম তাকবিরের পর হাত বেঁধে আর হাত ওঠাতে হয় না। খোদ রাসুল (সা.) ও এভাবে জানাজার নামাজ আদায় করতেন।
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) আবিসিনিয়ার বাদশাহ আসহামা-নাজাশীর জানাজার সালাত (নামাজ) আদায় করলেন। তাতে তিনি ৪ তাকবির বললেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২৫৩)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত অপর হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) জানাজায় তাকবির দেন। তিনি এর প্রথম তাকবিরে হাত উঠিয়েছিলেন এবং ডান হাত বাম হাতের ওপর রেখেছিলেন। (তিরমিজী, হাদিস: ১০৭৭)
আপনার মতামত লিখুন :