মুমিনের জীবনের একমাত্র আরাধনা হলো মহান আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর দেখানো পথে চলে দুনিয়ার হায়াত নামক সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে পরকালে জান্নাত লাভ করা। সেই জান্নাত লাভের বহু পথ-পদ্ধতি কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। সেগুলোর মধ্য থেকে এখানে এমন চারটি আমলের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে, যা করলে নির্বিঘ্নে জান্নাত যাওয়া যাবে।
সালামের প্রসার ঘটানো : একজনের সঙ্গে অপরজনের সাক্ষাৎ হওয়ার পর সালামের মাধ্যমে সম্ভাষণ জানানোর চেয়ে উত্তম কোনো সম্ভাষণ নেই। সালাম মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতা বৃদ্ধি করে। যে আগে সালাম দেয় সে অহংকার থেকে মুক্ত হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি হজরত রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, ইসলামে সর্বোত্তম কাজ কী? তিনি বললেন, চেনা-অচেনা সবাইকে সালাম দেবে। (রিয়াদুস সলেহিন ৮৪৯)
ক্ষুধার্তকে অন্নদান : কেয়ামত দিবসে বিচারকাজ শেষে জাহান্নামিদের প্রশ্ন করা হবে, কোন জিনিস তোমাদের জাহান্নামে দাখিল করছে? তারা বলবে, আমরা অভাবীদের খাবার খাওয়াতাম না। (সুরা মুদ্দাসসির ৪২-৪৪) হাদিস থেকে জানা যায়, শেষ বিচারের দিনে মহান আল্লাহ বলবেন, আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে খাবার দাওনি কেন? অপরাধীরা বলবে, হে আল্লাহ! আপনি তো মহান সত্তার অধিকারী। আপনাকে খাবার কীভাবে দিতাম? তখন মহান আল্লাহ বলবেন, তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা ক্ষুধার্ত ছিল? যদি তাকে খাবার খাওয়াতে তাহলে সেটার প্রতিদান এখন আমার কাছে পেতে।
আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখা : আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যেতে পারবে না। হজরত জুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ বুখারি ৫৯৮৪) সুতরাং জান্নাতে যেতে চাইলে অবশ্যই আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে এবং তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে।
তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় : তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহর নৈকট্য ও মর্যাদা লাভের সিঁড়ি। নবী (সা.)-কে তাহাজ্জুদের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়–ন। এটা আপনার জন্য নফল। শিগগিরই আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে।’ (সুরা বনি ইসরাইল ৭৯) মহান আল্লাহ আমাদের নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়সহ সালামের প্রসার, ক্ষুধার্তকে অন্নদান এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখার তওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :