ঢাকা সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ধৈর্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস ও উক্তি

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫, ০২:২২ পিএম

ধৈর্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস ও উক্তি

ছবি: সংগৃহীত

ধৈর্য নিয়ে ইসলামিক উক্তি ও বাণীও আমাদেরকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর উদাহরণ দিয়ে দেখা যায় যে, তিনি ১২ বছর ধরে তার পুত্র ইউসুফ (আঃ) এর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। এটি প্রমাণ করে যে, ধৈর্য এবং বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা যে কোনো কষ্ট সহ্য করতে পারি। 

ধৈর্য নিয়ে ক্যাপশন ও স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার জন্যও খুবই জনপ্রিয়। উদাহরণস্বরূপ, “ধৈর্য ধরো, তোমার জন্য যেটা বরাদ্দ সেটা দেরিতে হলেও আসবে।” এই ধরনের ক্যাপশনগুলো আমাদেরকে প্রেরণা দেয় এবং আশা জাগায়।

এছাড়া, “যার ধৈর্য আছে, তার চাওয়া একদিন পূরণ হবে” — এই ধরনের বাণী আমাদের শেখায় যে, ধৈর্য ধরলে সফলতা আসবেই। জীবনের প্রতিটি সমস্যার জন্য ধৈর্য হচ্ছে উত্তম প্রতিকার। তাই আমাদের উচিত ধৈর্য ধারণ করা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া।

অতএব, ধৈর্য নিয়ে কিছু কথা বলতে গেলে বলা যায় যে, এটি শুধু একটি গুণ নয়, বরং এটি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই আসুন আমরা সবাই ধৈর্য ধরতে শিখি এবং সফলতার পথে এগিয়ে যাই।

১. আল্লাহর পক্ষ থেকে ধৈর্যের পুরস্কার
শিরোণাম: ধৈর্যধারণকারীদের জন্য আল্লাহর বিশেষ পুরস্কার

বর্ণনা:
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন:
"হে বিশ্বাসীরা! তোমরা ধৈর্য ধারণ করো, দৃঢ়তা দেখাও এবং আল্লাহর পথে প্রস্তুত হও। আর আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের সহায়ক হবে।"
(সুরা আলে ইমরান, আয়াত ২০০)

এই আয়াতে আল্লাহ মুসলিমদের ধৈর্য ধরার জন্য আহ্বান করেছেন এবং তাদের জন্য বিশেষ পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যারা ধৈর্য ধরে আল্লাহর পথে চলবে, তাদের জন্য আল্লাহ সহায়তা এবং পুরস্কার প্রদান করবেন।

২. ধৈর্য ঈমানের অর্ধেক
শিরোণাম: ধৈর্য ঈমানের অর্ধেক

বর্ণনা:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
"ধৈর্যই ঈমানের অর্ধেক।"
(সহীহ মুসলিম)

এই হাদিসে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, ধৈর্য ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যে ব্যক্তি জীবনের কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য ধারণ করতে পারে, সে তার ঈমানকে শক্তিশালী করবে।

৩. দুঃখ-কষ্টের মুহূর্তে ধৈর্যের গুরুত্ব
শিরোণাম: দুঃখ-কষ্টের সময়ে ধৈর্যের গুরুত্ব

বর্ণনা:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে অবশ্যই একটি পুরস্কার দেবে, যা সে কল্পনা করতে পারে না।"
(সহীহ মুসলিম)

এখানে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, যখন কোনো মুসলিম ব্যক্তি দুঃখ বা কষ্টের মধ্যে পড়ে, তখন সে যদি ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে এমন পুরস্কার দেবেন, যা তার কল্পনাতেও আসবে না।

৪. ধৈর্য হলো মুসলিমের গুণ
বর্ণনা:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
"কোনো মুসলিমের জন্য একটি দুঃখ বা কষ্টের মুহূর্তে ধৈর্য ধারণ করা ছাড়া অন্য কোন জিনিস একে ভালো করতে পারে না।"
(সহীহ বুখারি)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, কোনো মুসলিম ব্যক্তি দুঃখ বা কষ্টের মধ্যে পড়লে, সে যদি ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে তা তার জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ।

৫. আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গেই আছেন

বর্ণনা:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
"যখন আল্লাহ তোমাকে কোনো পরীক্ষার মধ্যে ফেলেন, তখন তোমাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। কারণ আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।"
(সহীহ বুখারি)

এই হাদিসে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন। তাই যখন আমাদের জীবনে কোন সমস্যা বা পরীক্ষা আসে, তখন ধৈর্য ধারণ করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এই সব হাদিস এবং উক্তি আমাদের শেখায় যে, জীবনের কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য ধরার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সাহায্য এবং পুরস্কার পেতে সক্ষম হব। ধৈর্যই হচ্ছে আল্লাহর প্রতি আমাদের অবিচল বিশ্বাসের প্রতীক, যা আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং ঈমানকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!