ঢাকা সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: আল্লাহর গুণাবলি এবং মানবতার জন্য শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত: আল্লাহর গুণাবলি এবং মানবতার জন্য শিক্ষা

ছবি: সংগৃহীত

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত আল্লাহর মহিমা, তাঁর পরিচয়, এবং তাঁর অদ্বিতীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। এই আয়াতগুলো মুসলমানদের জন্য শক্তিশালী নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে এবং আল্লাহর অসীম শক্তি ও ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে সাহায্য করে।

এখানে সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের বিশদ বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো:

আয়াত ২২:
“আল্লাহ তা‍‍`আলা আসমান ও যমীনসহ সকল কিছুতে অদ্বিতীয়। তিনি জীবিত, অমর, সদা-চলমান, সকলকিছুর নিয়ন্তা। তিনি যা কিছু সিদ্ধান্ত নেন, তা হয়। আর তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, তাঁরই তায়ালার বিশাল ক্ষমতা ও শক্তি অগণিত।” এই আয়াতে আল্লাহ নিজেকে সর্বশক্তিমান, অমর, এবং অপরিমেয় গুণাবলীর অধিকারী হিসেবে তুলে ধরেছেন। 

তিনি জীবিত, অবিনশ্বর, এবং সকল সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা। আল্লাহর ক্ষমতা কোনো সীমানায় আবদ্ধ নয়, তিনি পুরো সৃষ্টি জগতের নিয়ন্ত্রণকারী। তাঁর সিদ্ধান্ত অবর্তমান, অর্থাৎ তিনি যা চান তা অবশ্যই ঘটে। এই আয়াতটি আল্লাহর এককত্ব এবং একমাত্র উপাস্য হিসেবে তাঁর পরিচয়ের স্পষ্ট ঘোষণা।

আয়াত ২৩:
“হে মানুষেরা, তোমরা কখনও আল্লাহর প্রতি শিরক কোরো না, তাঁকে ছাড়া কোনো উপাস্য নেই।” এই আয়াতটি শিরকের বিপক্ষে একটি সতর্কবার্তা। আল্লাহ স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছেন যে, তারই উপাস্য হওয়া উচিত এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কোন উপাস্য গ্রহণ করা শিরক। 

শিরক হল একমাত্র আল্লাহর সাথে অন্য কোন সত্তার সহানুভূতি বা সমকক্ষতা প্রতিষ্ঠা করা, যা ইসলামে একেবারে নিষিদ্ধ। এই আয়াতটি মুসলমানদের আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস স্থাপন করতে উদ্বুদ্ধ করে এবং সব ধরনের শিরক থেকে দূরে থাকতে সতর্ক করে।

আয়াত ২৪:
“তিনি আল্লাহ ছাড়া, মূর্তির সৃষ্টি, যাঁকে দেখতে, অনুভব করতে যে কেউ প্রকাশ করেন, তাঁর উদ্দেশ্য দুনিয়ার সুখ ছাড়া কখনও অর্জন হয় না।” এই আয়াতে আল্লাহ তাঁরই স্বত্ব এবং প্রতিটি সৃষ্টির মাঝে তাঁর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখানে মূলত বলা হচ্ছে, যে কোন সৃষ্টির আরাধনা বা উপাসনা শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত। 

আল্লাহ ছাড়া কোন অন্য সত্তা বা মূর্তির প্রতি ভক্তি, যারা আল্লাহর স্থান পূর্ণ করতে পারে না, তা মানুষের দুনিয়াবী সুখের জন্যে অর্থহীন এবং তা কখনো পূর্ণতার দিকে পরিচালিত করতে পারে না। আল্লাহ শুধু একমাত্র সত্তা যাঁর উপাসনা সত্যিকারের সফলতা এবং শান্তি নিয়ে আসে। 

এই তিনটি আয়াত আল্লাহর একত্ব এবং তাঁর মহান গুণাবলীর প্রতি আমাদের অবিচল বিশ্বাস স্থাপন করার গুরুত্ব প্রদান করে। আমাদেরকে শিরক থেকে দূরে থাকতে এবং একমাত্র আল্লাহকেই পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং উপাসনা করার জন্যে উৎসাহিত করা হয়েছে। আল্লাহ একমাত্র জীবন্ত, অমর এবং সৃষ্টির সর্বশক্তিমান। 

তাঁর ইচ্ছার বাইরে কিছু ঘটে না এবং তাঁর শক্তি সীমাহীন। এই তিন আয়াত আমাদেরকে ন্যায়, সত্য ও শান্তির পথে চলার নির্দেশ দেয় এবং শিরক থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করে। এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর পরিচয়, গুণাবলি, এবং তাঁর প্রতি অবিচল শ্রদ্ধা রাখার উপদেশ দেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!