বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখার বিশেষ বিধান

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৭:২০ পিএম

বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখার বিশেষ বিধান

ছবি: সংগৃহীত

বছরের বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখার বিধান ইসলামিক শাস্ত্র অনুযায়ী, বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখার বিশেষ বিধান রয়েছে। কিছু সময়ে রোজা রাখা ফরজ বা সুন্নত, আবার কিছু সময়ে তা নিষেধও হতে পারে। এখানে বছরের বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখার বিধানগুলো আলোচনা করা হলো:

১. রমযান মাসে রোজা (ফরজ)
রমযান মাসে রোজা রাখা ফরজ। এটি ইসলামের পঞ্চম রুকন এবং সকল বালিগ মুসলমানের জন্য এই রোজা রাখা বাধ্যতামূলক। রমযান মাসে প্রতিদিন সেহরি থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখতে হয়। রোজা না রাখলে কাফফারা দিতে হয় এবং এটি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।

২. আশুরা দিবসে রোজা (সুন্নত)
আশুরা (১০ মহররম) দিনে রোজা রাখা সুন্নত। এটি একটি বিশেষ দিন, যখন নবি মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর মুসা (আঃ)-এর শিষ্যরা এই দিন রোজা রাখতেন।

এটি সুন্নত মুাক্কাদ্দাহ, অর্থাৎ এটি রোজা রাখা উচিত, কিন্তু ফরজ নয়।
আশুরা রোজার সাথে আরো একটি রোজা (৯ মহররম বা ১১ মহররম) রাখা সুন্নত, যাতে কাফিরদের অনুকরণ না হয়।
দোয়া:
নবি (সাঃ) বলেছেন, "আশুরা দিন রোজা রাখা, এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়।"

৩. দ্বাদশ রাবিউল আউয়াল (মিলাদুন্নবী) দিনে রোজা (নিষেধ)
মিলাদুন্নবী বা নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জন্মদিনে রোজা রাখা নিষেধ। ইসলামে এটি একটি বিশেষ দিন, কিন্তু এর সাথে রোজা রাখার কোনও শাস্ত্রীয় গুরুত্ব নেই। বরং, এটি মুসলিমদের জন্য আনন্দ এবং উৎসবের দিন হওয়া উচিত।

৪. সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা (সুন্নত)
নবি মুহাম্মদ (সাঃ) সোম এবং বৃহস্পতিবার দিনে রোজা রাখতেন। এটি সুন্নত রোজা। এই দিনগুলোতে রোজা রাখলে অনেক বরকত পাওয়া যায়। কিছু হাদিসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি সোম ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখবে, তার গুনাহ মাফ করা হবে এবং তার আমল নামা আসমানে উঠানো হবে।

৫. ছয়টি শাওয়াল মাসে রোজা (সুন্নত)
রমযানের পর শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত। এটি একটি বিশেষ আমল, যেটি নবি (সাঃ) থেকে এসেছে। যে ব্যক্তি শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, তার মতো যেন সে পুরো বছর রোজা রাখল।

হাদিস:
নবি (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রমযান মাসের রোজা পূর্ণ করল এবং শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল, তার জন্য সারা বছরের রোজা রাখার সমতুল্য হবে।" (মুসলিম)

৬. যিকর ও অকলামু রোজা (বিভিন্ন একক দিনের রোজা)
বিশেষ কিছু দিনে একক রোজা রাখা সুন্নত। কিছু উদাহরণ:

ইয়াওমে কিবত (৯ জিলহজ): এই দিনে রোজা রাখা সুন্নত এবং এটি গুনাহ মাফ করার একটি বড় সুযোগ।
ইয়াওমে কিবত (১৫ শাবান): এদিন রোজা রাখা সুন্নত, যা বিশেষভাবে মুসলিমদের জন্য বরকত লাভের দিন হিসেবে গণ্য হয়।
৭. না রোজা রাখা দিন (নিষেধ)
রোজা রাখার নিষেধাজ্ঞা:

ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা: ঈদ দিনে রোজা রাখা নিষেধ। ঈদের দিন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানানো এবং আনন্দ করা মুসলমানদের জন্য বিশেষ দিনের কাজ।
শুক্রবার একক রোজা (নিষেধ): শুধুমাত্র শুক্রবারের জন্য একক রোজা রাখা নিষেধ। তবে, যদি এটি কোনো বিশেষ দিনে (যেমন, আশুরা) আসে, তবে রোজা রাখা উচিত।
৮. শরতের দিন (বিশেষ নিয়ম)
যদি কেউ এক বা একাধিক দিনের মধ্যে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকে, বা তার menstruation বা অন্য কোনো কারণের জন্য রোজা রাখতে না পারে, তবে তার জন্য পরবর্তীতে কাফফারা (পূরণ) রাখা বা রোজা পুনরায় আদায় করা উচিত।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!