আল্লাহভীতি বা তাকওয়া হলো ইসলামের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা মানুষকে আল্লাহর ভয় এবং তার আদেশ পালন করতে উদ্বুদ্ধ করে। বিখ্যাত ফকিহ আবুল লাইস সামারকান্দি (রহ.) আল্লাহভীতির ১০টি নিদর্শন উল্লেখ করেছেন, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনুশীলন করতে হবে। নিচে তার বর্ণিত ১০টি নিদর্শন তুলে ধরা হলো:
১. গিবত থেকে জবানকে হিফাজত করা
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তোমরা একে অপরের গিবত করো না। (সুরা হুজুরাত, আয়াত ১২)
২. খারাপ ধারণা থেকে বেঁচে থাকা
আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা নানা প্রকার ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চই কতক ধারণা পাপ। (সুরা হুজুরাত, আয়াত ১২)
৩. তিরস্কার থেকে বেঁচে থাকা
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, হে ঈমানদাররা, কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য কোনো সম্প্রদায়কে তিরস্কার না করে, হতে পারে তারা তিরস্কারকারীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। (সুরা হুজুরাত, আয়াত ১১)
৪. হারাম বিষয় থেকে চক্ষুকে অবনমিত ও সংযত রাখা
আল্লাহ তাআলা বলেন, মুমিন পুরুষদের বলো, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করবে। (সুরা নুর, আয়াত ৩০)
৫. সত্য ও ন্যায়সংগত কথা বলা
আল্লাহ তাআলা বলেন, যখন তোমরা কিছু বলবে, তখন বাস্তব ও ন্যায়সংগত কথা বলবে। (সুরা আনআম, আয়াত ১৫২)
৬. আল্লাহর নেয়ামতের কথা বেশি বেশি স্মরণ করা
আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ তোমাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে তিনি তোমাদের হেদায়াতের পথ দেখিয়েছেন। (সুরা হুজুরাত, আয়াত ১৭)
৭. ধন-সম্পদকে সৎ পথে ব্যয় করা
আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে। (সুরা ফুরকান, আয়াত ৬৭)
৮. দম্ভ, অহংকার ও বড়াই না করা
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, এই হচ্ছে আখিরাতের নিবাস, যা আমি তাদের জন্য নির্ধারিত করি, যারা জমিনে ঔদ্ধত্য দেখাতে চায় না এবং ফাসাদও চায় না। (সুরা কাসাস, আয়াত ৮৩)
৯. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে আদায় করা
আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা সব নামাজের প্রতি যত্নবান হও। বিশেষভাবে মধ্যবর্তী (আসরের) নামাজের ব্যাপারে।" (সুরা বাকারা, আয়াত ২৩৮)
১০. আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আদর্শ ও বিশ্বাসে অবিচল থাকা
আল্লাহ তাআলা বলেন, এটি তো আমার সোজা পথ। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ করো এবং অন্যান্য পথ অনুসরণ করো না। (সুরা আনআম, আয়াত ১৫৩)
এগুলো হলো আল্লাহভীতির ১০টি নিদর্শন, যা আমাদের জীবনে বাস্তবায়িত করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই গুণগুলো অর্জন করার তাওফিক দান করুন, আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :