মাহে রমজান মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত পবিত্র মাস। এটি শুধুমাত্র রোজা রাখার মাস নয়, বরং আত্মবিশ্লেষণ, তাকওয়া অর্জন এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক বিশেষ সময়। রমজান মাসে কিছু করণীয় এবং কিছু বর্জনীয় বিষয় রয়েছে যা আমাদের রোজা রাখার সঠিক পন্থা এবং আত্মবিশুদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়ক।
করণীয় বিষয়সমূহ:
রোজা রাখা:
রমজান মাসে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম পুরুষ ও নারীকে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখতে হয়। রোজা শুধু খাবার-পানীয় থেকে বিরত থাকার নাম নয়, বরং এর সাথে যাবতীয় পাপাচার ও খারাপ আচরণ থেকেও বিরত থাকতে হয়।
তারাবিহ নামাজ পড়া:
রমজান মাসে রাতে তারাবিহ নামাজ পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা সুন্নত এবং এটি মহান আল্লাহর কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয়।
কোরআন তিলাওয়াত:
রমজান মাসে কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব অনেক বেশি। প্রতি মুসলিমের উচিত এই মাসে যতটা সম্ভব কোরআন তিলাওয়াত করা এবং তার অর্থ বুঝে অধ্যয়ন করা।
ইতিকাফ করা:
রমজান মাসের শেষ দশ দিনে মসজিদে ইতিকাফ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। এই সময়ে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা এবং একাগ্রতার সাথে ইবাদত করা উচিৎ।
সদকাহ ও দান করা:
রমজানে সদকাহ ও দান করার গুরুত্ব অনেক বেশি। এটি রোজার স্বীকৃতির অন্যতম উপায় এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ।
দোয়া ও ইস্তিগফার:
রমজান মাসে বিশেষভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করা এবং নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত। রমজান হলো আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত এবং নাজাত লাভের মাস।
বর্জনীয় বিষয়সমূহ:
মিথ্যা বলা:
রমজান মাসে মিথ্যা বলা ও গীবত করা রোজাকে নষ্ট করতে পারে। আমাদের রোজার প্রতি সতর্ক থাকতে হবে এবং মিথ্যা, গীবত, চোগলখুরি থেকে বিরত থাকতে হবে।
অশালীন ভাষা ব্যবহার:
খারাপ ভাষা ব্যবহার, গালি দেওয়া বা অন্যকে উত্তেজিত করা রোজার মূল উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। রমজান মাসে এসব কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
অন্যদের ক্ষতি করা:
রমজান মাসে আমাদের উচিত নিজের মনোযোগ আল্লাহর ইবাদত এবং আত্মশুদ্ধির দিকে নিবদ্ধ রাখা, অন্যদের ক্ষতি করা বা কোনোভাবে তাদের কষ্ট দেওয়া উচিত নয়।
অতিরিক্ত খাওয়া:
সেহরি ও ইফতারি সময় অতিরিক্ত খাবার খাওয়া রোজার লক্ষ্যকে ব্যাহত করতে পারে। ইফতার ও সেহরির মধ্যে পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত।
জলখাবার বা পানীয়ের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ:
রোজায় পানি বা খাবার খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত আগ্রহ বা মনোযোগ রাখা ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি রোজার আত্মিক উপকারিতা কমিয়ে দেয়।
অতিরিক্ত ঘুমানো:
রমজান মাসে অতিরিক্ত ঘুমানো বা সময়ের অপচয় করা উচিত নয়। সময়ের সদ্ব্যবহার করে ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণে মগ্ন থাকা প্রয়োজন।
রমজান আমাদের আত্মবিশ্লেষণ এবং আত্মশুদ্ধির একটি সময়। এই মাসে যত বেশি সম্ভব আল্লাহর পথে চলা, ভালো কাজ করা, এবং ইবাদত-বন্দেগী করা আমাদের উচিত।
আপনার মতামত লিখুন :