ঢাকা সোমবার, ০৩ মার্চ, ২০২৫

রমজানে যে তিন আমল অবশ্যই করবেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২৫, ০২:০৮ পিএম

রমজান মাসে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষের জন্য রোজা রাখা ফরজ। তাকওয়া অর্জনের জন্য আল্লাহ তায়ালা রোজা বিধান দিয়েছেন। রোজা রাখার জন্য সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার বিষয়টি সহজ। শিশু বৃদ্ধের জন্য তুলনামূলক কঠিন। রমজানে তিনটি আমল অবশ্যই করার চেষ্টা করবেন।

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ জামাতে আদায়

ফরজ ও নফল নামাজ পুরো বছরের নিয়মিত আমল হলেও রমজানে এর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন মুসলমানেরা। অনেকে পুরো বছরে কখনো কখনো নামাজ আদায়ে গড়িমসি করলেও রমজানে নিয়মিত নামাজ আদায় করেন।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার কাজগুলোর মধ্যে নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। যদি সঠিকভাবে নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে, তবে সে নাজাত পাবে এবং সফলকাম হবে। যদি নামাজ নষ্ট হয়ে থাকে, তবে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (নাসায়ি)

রমজানে নামাজ পড়লেও অনেকে জামাতে নামাজের প্রতি গুরুত্ব দেন না। অথচ জামাতে নামাজ আদায়ের সওয়াব অন্য যেকোনো আমলের তুলনায় বেশি।জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া একাকী নামাজ পড়ার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি মর্যাদার।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৫, মুসলিম,  হাদিস : ৬৪০)

অযথাই অবহেলা করে জামাতে নামাজ আদায় না করা ব্যক্তির জন্য রাসূল সা. হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন—

‘আমার প্রাণ যাঁর হাতে, তাঁর কসম করে বলছি! অবশ্যই আমি সংকল্প করেছি, আমি কাঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেব, তারপর আমি নামাজের হুকুম দেব এবং এ জন্য আজান দেওয়া হবে, তারপর আমি এক ব্যক্তিকে হুকুম করব সে লোকদের নামাজ পড়াবে। এরপর আমি ওই লোকদের দিকে যাব, যারা জামাতে হাজির হয়নি। এবং তাদের বাড়িঘর তাদের সামনেই জ্বালিয়ে দেব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪২০)

কোরআন তিলাওয়াত

রমজানের প্রাণ হলো কোরআন। এই মাসেই কোরআন নাজিল হয়েছে। রাসূল সা. নিজেও এই মাসে কোরআন তিলাওয়াত করতেন বেশি বেশি। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা। অন্তত প্রতিদিন এক পৃষ্ঠা বা কিছু সময় হলেও কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত।

প্রতি রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ও জিবরাইল (আ.) পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। ফাতেমা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তার পিতা তাকে বলেছে, প্রতি রমজানে জিবরাইল (আ.)-কে একবার কোরআন তেলাওয়াত করে শোনাতেন। কিন্তু মৃত্যুর বছর তিনি তাকে দু’বার কোরআন শোনান।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৮৫)

তারাবি, নফল, সুন্নত নামাজ ও ইবাদত

রমজানের বিশেষ ইবাদত রাতের তারাবি নামাজ। এশার নামাজের পর এই নামাজ আদায় করা হয়। তারাবির সঙ্গে অন্যান্য নফল, সুন্নত নামাজ ও ইবাদতগুলোও নিয়মিত আদায় করা উচিত।

সুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (বুখারি : ২০৪৭)

তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রোজা রাখেন, তারাবি নামাজ পড়েন এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করেন, তার জীবনের আগের সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (মিশকাত, হাদিস : ১৮৬২)