রোজা হলো আল্লাহর প্রিয় একটি ইবাদত। তিনি তার বান্দাকে ভালোবেসে এই ইবাদত উপহার দেন। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রোজার ব্যাপারে যে সমস্ত ফজিলত, বরকত ও পুরস্কারের ওয়াদা রয়েছে, তা পেতে হলে আল্লাহর কাঙ্খিত লক্ষ্যে আত্মশুদ্ধি করতে হবে। তাই প্রত্যেক রোজাদারের উচিত তার ব্যক্তিগত আদবসমূহের উপর ব্যাপক যত্নবান হওয়া। কেননা আল্লাহ নৈতিক মানুষকে ভালোবাসেন। রোজার উপরোক্ত ফযীলত ও বরকতসমূহ অর্জিতর জন্য আমাদের হতে হবে একজন প্রকৃত মুসলমান। শক্ত করতে হবে নিজেদের আদবসমূহ।
আসুন ব্যক্তিগতভাবে একজন রোজাদারের আদবের ক্ষেত্রে কি কি করণীয় জেনে নেওয়া যাক.....
১) দৃষ্টিকে সর্বপ্রকার গুনাহ থেকে হেফাযত করা। যেমন বেগানা মেয়েদের প্রতি দৃষ্টিপাত করা থেকে, টিভি-সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকা।
২) জবানের হেফাযত। অর্থাৎ মিথ্যা, গীবত-পরনিন্দা, অশ্লীল কথাবার্তা ও ঝগড়া-বিবাদ থেকে দূরে থাকা।
জবানের ব্যাপারে হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি রোযা অবস্থায় মিথ্যাচারিতা ও মন্দ কাজ করা পরিত্যাগ করেনি তার পানাহার পরিত্যাগের কোনোই গুরুত্ব আল্লাহর কাছে নেই। আল্লাহ তাআলা তার পানাহার ত্যাগ করার কোনোই পরোয়া করেন না।’ -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০৩
৩) কানকে সর্বপ্রকার গুনাহের কাজ থেকে হেফাযত করা। যেমন গানবাদ্য, গীবত, পরনিন্দা ও অশ্লীল কথাবার্তা শোনা থেকে দূরে থাকা।
৪) এছাড়া অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন হাত ও পা ইত্যাদিকে গুনাহ ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখা। যেমন, অন্যে কোনোকিছু ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট না করা।
৫) সাহরী ও ইফতারে হারাম আহার পরিহার করা। ইমাম গাজ্জালী রাহ. বলেন, যে ব্যক্তি সারাদিন রোযা রেখে হারাম মাল দ্বারা ইফতার করল, সে যেন একটি অট্টালিকা নির্মাণ করল এবং একটি শহর ধুলিস্যাত করে দিল।
৬) রোযা অবস্থায় আল্লাহ তাআলার আজমত ও বড়ত্বের কথা এবং তার হুকুম আহকাম বেশি বেশি স্মরণ রাখা। রোযাদারের অন্তরে এ চিন্তা জাগরুক থাকা উচিত যে, আল্লাহ তাআলা হাজির নাজির আছেন। আমি তার হুকুমে এবং তারই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পানাহার ত্যাগ করেছি। তাকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমাকে ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত থাকতে হবে।
এভাবে এক মাস রোজা রাখলে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাকওয়া ও সংযমের মহামূল্য সম্পদ দান করবেন, যার মাধ্যমে ইহকালীন ও পরকালীন প্রভূত কল্যাণের দ্বার উন্মুক্ত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :