ইফতারে কেন খেজুর দিয়েই রোজা ভাঙবেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ০৫:১১ পিএম

ইফতারে কেন খেজুর দিয়েই রোজা ভাঙবেন?

ছবি: সংগৃহীত

আল্লাহ তাআলার কাছে বড় ইবাদতের মধ্যে রোজা হলো বড় একটি ইবাদত। এই সময়ে সারা বিশ্বেই মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এক টুকরো খাবার ও এক ফোঁটা পানিও মুখে দেন না। ইসলাম ধর্মের পরম্পরা অনুযায়ী, ইফতারে খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙা হয়। পবিত্র হাদিসেও খেজুর দিয়ে ইফতার করার কথা বলা আছে।

ভাবতে পারেন কেন খেজুর খেয়েই রোজার ভাঙা হয়? সেই প্রসঙ্গে সবার আগে চোখ রাখা জানা যাক ধর্মীয় ঐতিহ্য।  ধর্মীয় ঐতিহ্য বলছে,  এই খেজুর ছিল রাসূলের অত্যন্ত প্রিয় ফল। তিনি নিজেও খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙতেন।

এ পৃথিবীতে নবী হজরত মহম্মদ ছিলেন অতুলনীয় জ্ঞানী। কেন তিনি সব সময়ে খেজুর খেয়েই রোজা ভাঙতেন এবং অনুরাগীদেরও প্রেরণা দিয়েছেন? এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কারণও রয়েছে-

খেজুর ইফতারের বিশেষ অনুষঙ্গ...

খেজুরের পুষ্টিগুণের কারণে এ ফলটি অনেক জনপ্রিয়। এটি স্বাস্থ্যসম্মত ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি খাবার। হাদিস শরিফেও খেজুর দিয়ে ইফতার করার নির্দেশ রয়েছে। হজরত সালমান ইবনে আমির রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ ইফতার করে, সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে। কেননা, তাতে বরকত ও কল্যাণ রয়েছে।’ (মেশকাত ১৮৯৩)

পুষ্টিগুণ

রোজা রেখে খেজুর খাওয়া খুবই উপকারী। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি প্রদান করে এবং খুব সহজেই হজম হয়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, তামা, সেলেনিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম।

পুষ্টিবিদদের মতে, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। সারা দিন রোজার পরে শরীরে প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট দ্রুত পূরণ করতে সাহায্য করে এই ফল।

হেজমের জন্য উপকারী

সারা দিন রোজা থাকলে সন্ধ্যায় বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা তৈরি হয়। যার ফলে পেটের রোগ, হজমে গণ্ডগোল এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। ইফতারের সময় খেজুর খাওয়া খিদে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সারা দিন উপবাসের পরে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলাও আটকায়। এতে প্রচুর ফাইবার থাকার কারণে অল্পেতেই পেট ভরা লাগে।

তা ছাড়া খেজুর আমাদের শরীরে উৎসেচক ক্ষরণে সাহায্য করে। যার ফলে হজম ভালো হয়।

অ্যাসিডিটি হতে দেয় না

সারা দিন রোজা থাকার কারণে অ্যাসিডিটি হতে পারে। তবে খেজুর শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে শারীরিক অস্বস্তি কমায়।

খেজুর এনার্জি বাড়ায়
রোজা রাখলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। খেজুর শারীরিক ক্লান্তি দূর করে এনার্জি জোগাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে শর্করা যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ রয়েছে। এতে সুগারের পরিমাণ এতটাই বেশি, যে এক কামড়েই অনেকটা এনার্জি পাওয়া যায়। ফলে দীর্ঘক্ষণ উপবাসের পর শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধি করে খেজুরের এই সব গুণ। এ ছাড়া খেজুরে থাকা ডায়েটারি ফাইবারও আমাদের শরীরে দীর্ঘ সময় এনার্জি বজায় রাখে।

শরীর ডিটক্সিফাই করে

সারা দিন রোজা থাকার ফলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল জমা হতে পারে। আর এই খারাপ কোলেস্টেরল ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে খেজুর।

আরবি/জেডি

Link copied!