ঢাকা বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

রোজা রেখে খাবারের স্বাদ নেওয়া যাবে?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৫, ০৮:৪৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত

 রমজান মাসে অনেক সময় খাবারে বা তরকারির লবণ হয়েছে কিনা তা চেখে দেখার প্রয়োজন হয়। কিন্তু রোজা ভেঙে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই তরকারির লবণ দেখেন না। ফলে ইফতারিতে কিংবা রাতের খাবারে লবণ বেশি হলে পরিবারের অন্যদের কষ্ট পোহাতে হয়।    

রোজা অত্যন্ত সতর্কতা ও পবিত্রতার সঙ্গে পালন করার বিধান আছে। কারণ, ছোটখাটো কিছু ভুলের কারণে রোজা মাকরুহ হয়ে যেতে পারে। রোজার পবিত্রতা নষ্ট হতে পারে। রোজা অবস্থায় বেশকিছু বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্বিধা আছে। এর একটি হলো রান্নার স্বাদ পরীক্ষা করতে অল্প খাবার জিহবায় লাগানো। এতে রোজার ক্ষতি হবে কি না জানতে চান অনেকে।  

আলেমরা বলেন, তরকারিতে লবণ-মসলার পরিমাণ কতটুকু হলো বা বাচ্চার খাবার কিংবা শরবতে চিনির পরিমাণ কতটুকু হয়েছে, তা যাচাই করা প্রয়োজন হলে অল্প খাবার মুখে নিলে রোজার ক্ষতি হবে না। বরং তা জায়েজ আছে। তবে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা সেরে নেওয়ার পরে পানি দিয়ে কুলি করে নেওয়া উচিত। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহ, বর্ণনা: ৯৩৮৫; ফাতাওয়া খানিয়া: ১/২০৪; আল-মুহিতুল বুরহানি: ৩/৩৫৬; আত-তাজনিস ওয়ালমাজিদ: ২/৪৮; আল-বাহরুর রায়েক: ২/২৭৯; তাবয়িনুল হাকায়েক: ২/১৮৪; ফতোয়া হিন্দিয়া: ১/১৯৯)

শাইখ ইবনে উছাইমীন বলেন, খেজুর, রুটি, ঝোল ইত্যাদি কোন খাবার প্রয়োজন ছাড়া চেখে দেখা মাকরুহ। তবে প্রয়োজন হলে অসুবিধা নেই। কারণ খাবারের কিছু অংশ পেটে চলে যেতে পারে যা ব্যক্তি নিজেও উপলব্ধি করতে পারবে না।

আলেমদের অনেকে বলেছেন, স্বাদ না দেখতে পারলে সেটাই উত্তম। যেমন ইমাম আহমদ বলেছেন, খাবার চেখে না দেখাটাই আমার নিকট পছন্দনীয়। তবে, যদি চেখে দেখা হয় তাতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। (আল-মুগনি: ৪/৩৫৯)

একই কথা বলেছেন, ইবনে তাইমিয়া। তাঁর ‘ফাতাওয়া কুবরা’ (৪/৪৭৪) গ্রন্থ অনুযায়ী, প্রয়োজন ছাড়া খাবার চেখে দেখা মাকরুহ; তবে এতে রোজা ভঙ্গ হবে না।  

খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করার পর কুলি করতে না পারলেও অবশ্যই থুথু ফেলতে হবে। আর সেটা অনিচ্ছায় গলার ভেতর চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে।

এভাবে রোজা ভেঙে গেলে সেক্ষেত্রে রোজাটি পূর্ণ করতে হবে এবং পরবর্তীতে একটি রোজা কাজা আদায় করতে হবে, কাফফারা লাগবে না। আর খাদ্যবস্তু ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেললে সে দিনের রোজাও পালন করবে এবং কাজা ও কাফফারা উভয় আদায় করতে হবে। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২০৬)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে রমজানের রোজার সব হুকুম আহকাম মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।