সামাজিক মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়, রাস্তার পাশের গাছ কিংবা সরকারি জমিতে থাকা গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করার বিষয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, এগুলো খাওয়া কি ইসলামী দৃষ্টিকোণে বৈধ? এই বিষয়ে আমাদের অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা না থাকায় অনেক সময় দ্বিধায় পড়ে যাই।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শায়খ আহমাদুল্লাহ একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়। বক্তব্যটিতে দেখা যায় এক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করেন, ‘রাস্তার পাশের গাছ থেকে ফল খাওয়া যাবে কি?’
প্রশ্নের জবাবে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, রাস্তার পাশের যেসব গাছ আছে তার কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির মালিকানাধীন নয়, সরকারি জমিতে হলেও প্রশাসন বা সরকারের পক্ষ থেকে সেগুলোর ফল হেফাজত করার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফল-ফুল ছিড়তে নিষেধও করা হয়নি বরং সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে, এ রকম গাছের ফুল ও ফল খাওয়া ও নিজের কাজে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ নয়।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন:
هُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ لَكُمۡ مَّا فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا...
‘তিনিই তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীর সবকিছু।’ (সুরা বাকারা: ২৯)
তবে শায়েখ স্পষ্ট করে দেন, যদি কোনো গাছ ব্যক্তিমালিকানাধীন হয়, এবং মালিক সেটিকে উন্মুক্ত করে না দেয় বা অনুমতি না দেয়, তাহলে সে গাছের ফল বা ফুল ব্যবহার করা জায়েজ নয়। অর্থাৎ, অন্যের সম্পদে অনুমতি ছাড়া হস্তক্ষেপ করা ইসলামসম্মত নয়।
এ সময় আরও একটি প্রসঙ্গ উঠে আসে—গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল খাওয়া যাবে কি না? এ বিষয়ে শায়েখ বলেন, যদি মালিক পক্ষ থেকে নিষেধ না করা হয় বা কোনো অসন্তুষ্টির ইঙ্গিত না পাওয়া যায়, তাহলে সে ফল কুড়িয়ে খাওয়া জায়েজ। তবে যদি মালিকের অসন্তুষ্টি বোঝা যায়, তাহলে তাও গ্রহণযোগ্য নয়।
একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করেন, সরকারি বা ওয়াকফকৃত কবরস্থানের গাছ, কাঠ, ফুল বা ফল—এসব কিছুই ঐ কবরস্থানের সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। তাই এসব গাছের ফল নিজ ইচ্ছেমতো খাওয়া যাবে না। কবরস্থান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ এগুলো সংরক্ষণ ও বিক্রয়ের মাধ্যমে আয়ের অর্থ কবরস্থানের উন্নয়নে ব্যয় করতে পারে।