কোটা সংস্কার আন্দোলনে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১২৮ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ঢাবি প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে তামাশার সমতুল্য বলে মন্তব্য করেছেন ঢাবি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি এবং সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম।
আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি লেখেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৪ জুলাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ‘তুমি কে আমি কে— রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগানে প্রকম্পিত করে৷
গত ষোলো বছরের জুলুম-নির্যাতনকে বৈধতা দেওয়ার হাতিয়ার ট্যাগিংয়ের কল্পিত ন্যারেটিভকে এভাবে ভেঙে দেওয়ায় ফ্যাসিস্টরা বরদাস্ত করতে পারেনি।
১৫ জুলাই রাজু ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বুয়েট, সাত কলেজ, মেডিকেল কলেজসহ আশপাশের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে।
শান্তিপূর্ণ প্রোগ্রামের শেষের দিকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের নিরস্ত্র ভাই-বোনদের ওপর পৈশাচিক হামলা চালায়। সেদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বোনদেরকে রক্তাক্ত করা হয়েছিল নির্মমভাবে। এই ন্যক্কারজনক হামলার স্থিরচিত্রগুলো দেখলে এখনো আঁতকে উঠি।
রেজিস্ট্রার ভবনে সমন্বয়কসহ কিছু শিক্ষার্থী আটকা পড়ে। দ্রুত তাদের উদ্ধার করার ব্যবস্থা করি।
তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক Md Mohiuddin Khan আর আমি তাৎক্ষণিক ছুটে যাই ঢাকা মেডিকেলে।
আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য ইনিশিয়েটিভ নেই। তারই মধ্যে হাসপাতালে ঢুকে আবারও আহতদের হামলা চালায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ!
এই দিনগুলো এখনো চোখের সামনে জীবন্ত। মাত্র ১২৮ জনের বহিষ্কারাদেশ আমাদের সঙ্গে তামাশার সমতুল্য। আমরা প্রত্যেক হামলাকারীকে চিহ্নিত করে প্রমাণসমেত প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করি— যার সংখ্যা প্রায় পাঁচশ।
আমাদের ধারণা, হামলাকারী ও শিক্ষার্থী নির্যাতনকারীদের প্রকৃত সংখ্যা সহস্রাধিকের আশপাশে হবে।
এ জন্য আমরা এই তদন্ত রিপোর্ট ও গৃহীত পদক্ষেপে মোটেও সন্তুষ্ট নই। যেখানে ঢাবি ছাত্রলীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী সৈকত পার পেয়ে যায় সেখানে আর কোনো বিশ্বস্ততা থাকতে পারে না।
স্বল্পসময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।
আপনার মতামত লিখুন :