ছাত্রদলের হাত থেকে বাঁচতে চায় আইটি উদ্যোক্তা তন্ময়!

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫, ০৩:০১ পিএম

ছাত্রদলের হাত থেকে বাঁচতে চায় আইটি উদ্যোক্তা তন্ময়!

ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

‘প্লিজ, সবাই আমার পাশে থাকুন। আমি লাইফ রিস্কে আছি’- এমনটাই জানিয়েছেন ছাত্রদলের চাঁদাবাজির শিকার আইটি উদ্যোক্তা তন্ময় শিকদার। তার ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘I am dead inside. অনেক ভাই মারা গেছেন এই দেশের জন্য। আমি মারা গেলেও সমস্যা নেই। কিন্তু এটার সুষ্ঠু বিচার হওয়া চাই। চাঁদাবাজরা কোনো দলের হতে পারে না।’

২৪’র গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু কিছু স্থানে ছাত্রদলের চাঁদাবাজি যেন একের পর এক সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যার চরম শিকার হয়েছেন টাঙ্গাইলের তন্ময় শিকদার। তার কাছ থেকে স্থানীয় ছাত্রদলের কয়েকজন সদস্য দুই ধাপে ৯৭ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন। এমনকি, তন্ময়ের গায়ে হাত তুলে, তার মরা মা’কে গালিগালাজ করেছে স্থানীয় ছাত্রদল নেতা লিমন ও তার বাহিনী। এই চাঁদা নেয়ার পরও আরও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয় তন্ময়ের কাছ থেকে। দেয়া হয়েছে মৃত্যুর হুমকিও। রূপালী বাংলাদেশের হাতে এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে তন্ময় জানান, তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে টাকার অফার দেয়া হচ্ছে। এমনকি, পরিবারের উপরও চাপ দেয়া হচ্ছে। তাকে নিয়ে নতুন করে গল্প বানাচ্ছে, জানিয়ে তন্ময় বলেন- আমি নাকি ছাত্রদল নেতা মিম এর কাছে গাড়ি বিক্রি করেছিলাম। আপনারা চাইলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে পারেন। থানাতে পাবেন, এমনকি আনসার ক্যাম্পেও ফুটেজ পাওয়া যাবে। থানার ওসি’ও জানে, এই গাড়ি আমি কিনেছিলাম।

এর আগে, তন্ময়ের ‘এই দেশে মানুষ বসবাস করবে কেমনে?’- শিরোনামে দেওয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রূপালী বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশের পরই বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী ছাত্রদলের কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়েছে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলকে। 

কারণ দর্শানোর নামে যেনো বিষয়টি চাপা না দেওয়া হয়৷ আমার বিশ্বাস বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তাদের সাংগঠনিক এবং বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আমাকে সঠিক বিচার নিশ্চিত করবে৷

Posted by Tonmoy Sikder Parves on Tuesday, February 4, 2025

আর এরপরই তন্ময়কে মৃত্যুর হুমকিসহ নানানভাবে হেনস্থা এবং আরও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়ার দাবি করা হয় বলে তিনি জানিয়েছেন।

এর আগে তন্ময় তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন- আমার যদি কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে এরাই আমার ক্ষতি করবে। কেননা, আমার কারো সাথে কোনো শত্রুতা নেই। তন্ময় জানান, জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ রাতে ৭-৮ জন ছেলে তার গাড়ি আটকায় এবং থানায় নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন, কাউসার রহমান লিমন, যিনি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। এছাড়াও রয়েছেন- লিখন, রিফাত, মিম ও আসিফ।

জানা যায়, লিমনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে মারার অভিযোগ রয়েছে। তখন তার মা  মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান থাকায় আইনি প্রক্রিয়া থেকে পার পেয়ে যান তিনি। এছাড়া লিমন ইন্টারনেটের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে সরকারি রাস্তা ও পুকুর দখল করে চাঁদা আদায় করেন। মিমও একটা সময় আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন, যে কি-না এখন ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে চলছে।
 

আরবি/এফআই

Link copied!