চলতি বছরের জুনের মধ্যেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্ভব বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ কথা লিখেন তিনি।
স্ট্যাটাসে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লেখেন, জুনের মধ্যেই সম্ভব স্থানীয় সরকার নির্বাচন।
সম্প্রতি এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন ৬৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ মানুষ। বিপরীতে ২৯ শতাংশ মানুষ জাতীয় নির্বাচনের পরেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ। আর দলীয় প্রতীকে এই নির্বাচন করার কথা বলেছেন প্রায় ২৮ শতাংশ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ সভায় এ বিষয়ে আলোচনার পর দলটির নীতিনির্ধারকেরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেন। এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৩ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় সিদ্ধান্ত জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আগে সংসদ নির্বাচন চাই। আমাদের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হচ্ছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রশ্নই আসে না। কারণ, এখন তো পুরো দেশের, পুরো জাতির ফোকাসটা হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন হতে পারেনি। মানুষ সে জন্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথটাকে পূরণ করতে চায়।’
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আমার একান্ত ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, সর্বাগ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়াই ভালো। একটা নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, সে সরকার স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এটা যদি না হয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে যে লড়াই শুরু হবে, সেটা অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘জরিপে কীভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, আমি জানি না। এ মুহূর্তে মানুষ বিক্ষুব্ধ আছে স্থানীয় সরকারের নাগরিক সেবা নিয়ে। সে কারণে কেউ কেউ এমনটা বলে থাকলে সেটাকে আমি সাধারণভাবেই দেখি। কিন্তু দেশের এখনকার আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় জাতীয় নির্বাচনই আগে করা উচিত। সরকার নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারে কাজ করছে। আমি মনে করি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার করে তারপরই নির্বাচন করা উচিত হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গণতন্ত্র উত্তরণে কোনটা আগে কোনটা পরে, সেটা চিহ্নিত করতে হবে। নির্বাচনের আগে যে সংস্কারগুলো করা যাবে, সেগুলো শেষ করাই হচ্ছে এখনকার জাতীয় অগ্রাধিকার। আমরা মনে করি, সেদিকেই মনোযোগ বেশি থাকা দরকার। আর কোন নির্বাচন আগে করতে হবে, সেটা অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন সব সময়েই ঝামেলার। এখন এ নির্বাচন করতে চাইলে আওয়ামী লীগের মুখচেনা দাগিরাও ঢুকে যাবেন। এতে এলাকাভিত্তিক গন্ডগোল হওয়ার আশঙ্কা আছে। এটা মোকাবিলার করার মতো যে ধরনের সরকার থাকতে হয়, এ সরকার সে রকম জনসম্পৃক্ত সরকার নয়। তাই আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়াই উত্তম।