ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ, ২০২৫

বসুন্ধরায় তোপের মুখে সারজিস, ফেসবুকে দিলেন যে ব্যাখ্যা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৫, ০৯:২৮ এএম
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর তোপের মুখে পড়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। তার ওই এলাকায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে চিৎকার-চেঁচামেচি ও হাতাহাতির একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি পোস্ট করে কেউ কেউ দাবি করেছেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’ সারজিস আলমকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১০টার পরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে। ক্যাপশনে লেখা হচ্ছে, এনসিপিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করার পর সারজিস আলম আজ (বুধবার) এসেছিলেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার অনুসারীদের নিয়ে শোডাউন দিতে। এ খবর শুনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, এআইইউবি (আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ), আইইউবির (ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ) সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে সারজিসের অনুসারীদের ওপর চড়াও হন। পরে সবার সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে সারজিস তার গাড়িতে উঠে বসুন্ধরা এলাকা থেকে চলে যান। এ সময় সারজিসকে বসুন্ধরা এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সারজিস আলম বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এসেছিলেন। এরপর প্রায় তিন ঘণ্টা তিনি ওই এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে আড্ডা দেন। রাত ১০টার পর প্রায় ১৫ জন তরুণ হঠাৎ অন্য পাশ থেকে সারজিসকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। একপর্যায়ে সারজিসের সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে দুই পক্ষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধক্কির ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে সারজিস গাড়িতে উঠে সেখান থেকে চলে যান। এরপর আবার দুই পক্ষে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এদিকে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনার ব্যাখ্যা করে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সারজিস আলম, যেখানে তিনি দাবি করেছেন, ছাত্রদলের নেতা শাকিল এই ঘটনায় জড়িত।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এই নেতা তার স্ট্যাটাসে লিখেন, “ইফতারের পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির সহযোদ্ধাদের সঙ্গে চায়ের আড্ডা দিতে এবং তাদের কথা শুনতে যাই। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে গল্প-আড্ডা হয়, চায়ের আড্ডা হয়। এনএসইউ, আইইউবি, এআইইউবি, ইউআইইউ—এই ৪টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক সহযোদ্ধার সঙ্গে আড্ডা দিয়ে এনএসইউ’র সামনে দিয়ে হেঁটে আসছিলাম। আমার সঙ্গে ১৫-২০ জন প্রাইভেটের সহযোদ্ধা ছিল।”

তিনি আরও জানান, “পরে এনএসইউ’র গেটের সামনে দেখি ১০-১২ জন ঢাবি সিন্ডিকেট নিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। এর মধ্যে ছাত্রদলের সেন্ট্রাল নেতা আহমেদ শাকিল ছিল। আমি এগিয়ে যাই তাদের কথা শুনতে। কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমার সঙ্গে থাকা প্রাইভেট শিক্ষার্থীদের গালাগাল করতে থাকে। তাদের মধ্যে ১-২ জনকে ছাত্র মনে হলেও বাকিরা ভাড়া করা টোকাই দুষ্কৃতকারী মনে হচ্ছিল। বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।”

তিনি আরও বলেন, “আমি দুই পক্ষকে চলে যেতে বলি এবং চলে আসি। পরবর্তীতে ছাত্রদলের শাকিল তার নেতৃত্বে তার সঙ্গে থাকা টোকাই দুষ্কৃতকারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে পূর্বে আমার সঙ্গে থাকা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছেলেদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এবং সরাসরি মাথায় ও পিঠে আঘাত করে একাধিকজনকে রক্তাক্ত করে। ছাত্রদলের শাকিলসহ বাকি সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।”