ঢাকা বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

ভাইরাল ‘ঈদ বাজেট’ নিয়ে আহমদুল্লাহ’র স্ট্যাটাস

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ১১:১৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত

এই সময়ের অনেক বিত্তবানের সন্তানদের ঈদের বাজেট শুনলে চোখ কপালে উঠে যায়। অবাক ব্যাপার হলো, তাদের এই বিশাল বাজেটের ভেতর দরিদ্র মানুষ তো থাকেই না, এমনকি পাড়া-পড়শি, চাচা-চাচি, চাচাতো ভাইবোনও থাকে না। শুধু কি তাই, এই বিশাল বাজেটের ভেতর জায়গা হয় না নিজের বাবা-মারও  বলে জানিয়েছেন  বিশিষ্ট ইসলামিক গবেষক ও আলোচক শায়খ আহমদুল্লাহ।

রোববার (২৩ মার্চ) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন তিনি।

স্ট্যাটাসে শায়খ আহমদুল্লাহ লিখেন, এই সময়ের অনেক বিত্তবানের সন্তানদের ঈদের বাজেট শুনলে চোখ কপালে উঠে যায়। অনেক ছেলেমেয়ের ঈদের বাজেট দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা!
অবাক ব্যাপার হলো, তাদের এই বিশাল বাজেটের ভেতর দরিদ্র মানুষ তো থাকেই না, এমনকি পাড়া-পড়শি, চাচা-চাচি, চাচাতো ভাইবোনও থাকে না। শুধু কি তাই, এই বিশাল বাজেটের ভেতর জায়গা হয় না নিজের বাবা-মারও।

তিনি লিখেন, ক্যামেরার সামনে তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলে, এটা আমার বাজেট, শুধুই আমার। এই টাকা দিয়ে আমি এই কিনব এই কিনব। অনেকে বলবেন, বাবা-মা, চাচা-চাচিদের তো আলাদা বাজেট থাকেই। তারপরও কেন তাদেরকে দিতে হবে! আসলে এটা তো শুধু পোশাক উপহার দেয়া নয়, এটা পরিবারের ভেতর ভালোবাসার বিনিময়। এর মাধ্যমে আমাদের পারিবারিক বন্ধন মজবুত হয়।

তিনি  আরও লিখেন, বাবা আমাকে আমার শপিংয়ের জন্য টাকা দিয়েছেন, আমি যদি গোপনে সেই বাজেট থেকে বাবার জন্যও একটা পাঞ্জাবি কিনি আর বাবাকে চমকে দিই, আমরা ধারণাও করতে পারব না, বাবারা কতটা খুশি হবেন! আনন্দে অজান্তেই তাদের চোখ ভিজে উঠবে আর হৃদয় থেকে চলে আসবে দোয়া।  আপনার দেয়া পাঞ্জাবি পরে ঈদগাহে যাচ্ছে আপনার বাবা অথবা চাচা, কিংবা চাচাতো ভাইয়েরা, এটা আপনার জীবনের সেরা আনন্দময় মুহূর্তগুলোর একটি হওয়ার কথা। কিন্তু যারা শুধু নিজের বাজেট এবং নিজের কেনাকাটায় মত্ত থাকে, তারা অপরকে উপহার দেয়ার এই নির্মল আনন্দের ঐশ্বর্য কীভাবে অনুভব করবে!

শায়খ আহমদুল্লাহ লিখেন, যৌথ পরিবারে বেড়ে ওঠা আমাদের শৈশব-কৈশোরগুলো ছিল এমনই আনন্দমুখর, ত্যাগের মহিমায় প্রোজ্জ্বল। সেখানে শুধু ভোগই ছিল না, ছিল সহমর্মিতাও। আর ঈদ তো আসে সহমর্মিতার ওই সৌরভটুকু ছড়িয়ে দেয়ার জন্যই। এখনকার তরুণদের এই আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা অতুল ঐশ্বর্যের ভেতর একা একা বেড়ে ওঠার ফল। যারা নিজের জীবনের বাইরে অন্যকিছু ভাবতেই পারে না। এর ফলে আমাদের সময়কার ঈদের সেই সম্মিলিত ভালোবাসার নদী, যা সবকূলকে ছাপিয়ে যেত, ভিজিয়ে দিত সবার হৃদয়-মাটি, তা দিনকে দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখনকার ঈদগুলো বড্ড একা, বড্ড ঘরবন্দি হয়ে পড়ছে।

তিনি লিখেন, নতুন প্রজন্মের এই ভোগবাদী মানসিকতার কারণে সন্তানরা বখে যাচ্ছে, তরুণদের ভেতর অপরাধ-প্রবণতা বাড়ছে, বাবা-মার অবাধ্য একটি প্রজন্ম গড়ে উঠছে। এই সমস্যা দূর করতে সমাজের সব স্তরে ইসলামের ত্যাগের শিক্ষার বিস্তার প্রয়োজন। তবেই না আমাদের ঈদগুলো সত্যিকারের ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।