যদি আমার বিরুদ্ধে কোন রকম আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রমাণ থাকে, তবে প্রমাণ সাথে নিয়ে থানায় গিয়ে কেস করে আসবেন। ফেসবুকে বমি ছড়াবেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন তিনি।
স্ট্যাটাসে নুসরাত তাবাসসুম লিখেন, ওকে, এখন বিষয়টা যথেষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, পরিস্থিতি সাপেক্ষে হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বিতাও মেনে নেয়া যায়। কিন্তু তাই বলে রাজনৈতিক হিংসা!! রিডিকিউলাস! একের পর এক মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগকে অপরাধ বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভালো করে ভেবেও দেখছেন না অভিযোগগুলো কতটা অসম্ভব!! একটা দল ভেঙে তিন চার টুকরা হয়ে গেছে তাও শিক্ষা হলো না যে আচরণটা একটু সভ্য মানুষের মত করি!!সেই আগস্ট থেকে শুরু করেছে প্রোপাগান্ডা।
তিনি লিখেন, কিছু দিন একবার রটল ১০০ কোটির টেন্ডারবাজি করেছি, তারপর আসল নিয়োগ বাণিজ্য তারপর আবার তদবির বাণিজ্য!! অথচ চলতেছি চাকরি করে! বেতনের টাকায় ঢাকা শহরে খেয়ে-পরে চলা মুশকিল! রাজনীতি করি আব্বু আম্মুর সাহায্যে আর আত্মীয় স্বজনের ভরসায়। বিরাট বড় করে ছবি দিয়ে এমন ভাবে নিউজ হলো যেন ওয়াসায় নিয়োগ বাণিজ্য চালাচ্ছি!! খোদা না খাস্তা!!
তিনি আরও লিখেন, ১৬ ডিসেম্বরে আমার সাথে দুজন আহত ভাই দেখা করেন, তারা জানান তারা জুলাইতে আন্দোলনের জন্য চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন, তারপর ২৬ তারিখের দিকে আহতও হয়েছেন। যেহেতু শিক্ষাগত যোগ্যতা সামান্য তাই নতুন করে কোন চাকরি জুটাতে পারেন নি, ৬মাস বেকার। তাদের মধ্যে একজনের ঘরে ছোট বাচ্চাও ছিল।
তারা আমাকে জানালেন ওয়াসায় চুক্তিভিত্তিক নিউজ হচ্ছে। আমি যদি একটু সাহায্য করি। আমি সরাসরি বলে দিয়েছিলাম চাকরি দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। তারপর আরেকদিন সেই ভাইয়ের স্ত্রী নিজের অসুস্থ ছোট বাচ্চা নিয়ে আমার কাছে আসেন। আমি ওয়াসার এমডি সাহেবকে অনুরোধ করেছিলাম জুলাই আন্দোলনের দুজন সহযোদ্ধাকে যদি সম্ভব হয়, কোন ভ্যাকেন্সী থাকে আর যোগ্যতায় মেলে তাহলে যেন অন্তত কিছুদিনের জন্য একটু কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। তিনি যে অনুরোধ রেখেছেন সেই খবরটাও আমার রাখা ছিল না।
নুসরাত লিখেন, জুলাইয়ে আমাদের অনেক সহযোদ্ধা কাজ হারিয়েছে। আপনারাই দু`দিন পর পর বাই তোলেন যে সহযোদ্ধাদের দেখভাল করা হচ্ছে না। আমার পক্ষে সবার জন্য কিছু করা সম্ভব না। তবুও যাদের জন্য কিছু করতে পারি আমি করব। আমি অন্তর থেকে চাই যারা একবারও না ভেবে জুলাইয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল সেই সব মানুষগুলা ভালো থাক।
শুধু কি এই দুই জন!! আমি এছাড়াও কয়েকজন সহযোদ্ধাদের সন্তানদের পড়ার খরচ চালাই, রমজানে কয়েকজন আহত ভাইকে আমি যথাসাধ্য ইফতার উপহার দেয়ার চেষ্টা করেছি। এক জনের ব্যবসায় ছোটখাট সাহায্য পাঠিয়েছি। যদি ফলাও করে প্রচার করতে চাইতাম তাহলে করতে পারতাম। যারা আন্দোলনের পর বিপাকে পড়ে সাহায্য নেয় তাদেরও আত্মসম্মান আছে তাই এসব কথা তুলি না। চুপ করে থাকি বলে দু`জন সহযোদ্ধাকে করা সাহায্যকে আপনারা বাণিজ্য বলে উপহাস করলেন!!
এনসিপির এই নেতা লিখেন, এবার আসি যশোর প্রযুক্তির কথায়!!! সর্বাঙ্গীণ মিথ্যা কথা!!! দুয়েকমাস আগে (আমার সঠিক মনেও নাই!!) যশোর প্রযুক্তির কয়েকজন শিক্ষার্থী (এই পোস্টের আমি যোগাযোগ করলে তারা নাম প্রকাশে অস্বস্তি জানায়) আমার কাছে এসে বলে তাদের শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে আবেদন আছে, তারা গণসাক্ষর সমেত দরখাস্ত এনেছে। যেহেতু তাদের প্রত্যক্ষ ভাবে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখেছি তাই তাদের আবেদনের জন্য আমি উপদেষ্টা সাহেবের পিএস(কিংবা এপিএস! আমার ঠিক মনে নেই তবে ইন্টারনেট ঘেঁটে নাম্বার বের করেছিলাম) মারফত তাদের একটা এপয়েন্টমেন্ট করে দিই। পরে জানতে পারি যাস্টের ভিসির কিছু একচোখো আচরণের কারণে তারা প্রো-ভিসির চাহিদা অনুভব করছে এবং সেই আবেদন করেছে। আমি যেন একটু খেয়াল রাখি। আমি বলি এসব তাদের ক্যাম্পাসের বিষয়, আমি এত দূর থেকে ভালো করে বুঝবও না। তারা বারবার অনুরোধ করে চলে যায়। তার অনেক পরে একদিন রাফে সালমান ভাইয়ার সাথে আমার কথা হয়। বেশ কিছু কনভার্সেশনের পর ভাইয়াকে আমি সরাসরি বলি যাস্টে কে প্রোভিসি হলো না হলো আমার তাতে তো কোন মাথাব্যথা নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর কর্তৃপক্ষের পছন্দ এটা! তারপর এ নিয়ে উনার সাথেও আর কোন দিন কথা হয় নি। এরমধ্যে কোন রকম আর্থিক লেনদেন আছে সেই অভিযোগ কোন গোয়েন্দা সংস্থাও প্রমাণ করতে পারবে না!
তিনি লিখেন, আপনারা তিল কে তাল বানাতে বানাতে তাল হারিয়ে ফেইলেন না। সব কিছুর একটা সীমা আছে। যদি আমার বিরুদ্ধে কোন রকম আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রমাণ থাকে, তবে প্রমাণ সাথে নিয়ে থানায় গিয়ে কেস করে আসবেন। ফেসবুকে বমি ছড়াবেন না। যত্তসব!
তিনি আরও লিখেন, আপনার দলের উপজেলা কমিটির দুই নাম্বার নেতা যে আমার বাড়িতে আরেক লোকের অবৈধ বালু উত্তোলনের লাইসেন্সের দালালী করতে আসছিল সেটা কি আমি ফেসবুকে বলে গেছি? নেহাৎ ভদ্রলোকের বাড়ি তাই পুলিশ ডাকিনি। দলীয় মিটিংয়ে একটু জবাবদিহিতা চালু কইরেন। আর আমার দলে আমার উর্ধ্বতন পদধারীগণ আছেন। তারা যদি মনে করে আমার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগে কোন দলীয় ব্যবস্থা দরকার তাহলে তারা তদন্ত কমিটি করে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি সেই ফোরামে সবরকম জবাবদিহির জন্য তৈরি আছি।ধন্যবাদ।
আপনার মতামত লিখুন :