সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

বিডার চেয়ারম্যানকে নিয়ে স্ট্যাটাস, ক্ষমা চাইলেন ছাত্রদলের সেই নেত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২৫, ০৫:৫২ পিএম

বিডার চেয়ারম্যানকে নিয়ে স্ট্যাটাস, ক্ষমা চাইলেন ছাত্রদলের সেই নেত্রী

ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম। ফেসবুকজুড়ে তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। ওই পোস্টের কারণে যারা আহত হয়েছেন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মানসুরা।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান আশিক চৌধুরীকে অসম্মান করা তার উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি জানান প্রায় ১৪ ঘণ্টা তার ফেসবুক আইডি ডিজেবল ছিল।

ওই পোস্টে তিনি বলেন, প্রথমত, এপোলজি দিয়ে শুরু করতে চাই যারা আমার একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে আহত হয়েছেন। গত ১৪ ঘণ্টা আইডিটি ডিজেবল থাকায় সেটা আমি করে উঠতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূস সরকার বা তার পরিচালিত কোনো কাজকেই আজ পর্যন্ত একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি তাচ্ছিল্য করিনি, বরং এপ্রিশিয়েট করেছি বারবার। আমার বিগত অনেক এপ্রিসিয়েশন পোস্ট আপনারা দেখেছেন আশা করি। এই দেশে কেউ কাজ করতে আসবেন, দেশের হয়ে কাজ করবেন- এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যের ব্যাপার। বিশেষ করে আমরা যারা এত বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি একটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বাংলাদেশের জন্য। আশিক চৌধুরী বা বিনিয়োগ সম্মেলনের মতো প্রজেক্ট নিয়ে আমার ন্যূনতম কোনো সমালোচনার জায়গা নেই। বরং এপ্রিসিয়েশনের জায়গা অনেক বড়।

মানসুরা আলম বলেন, আমার সেই পোস্টের উদ্দেশ্য আশিক চৌধুরীকে অসম্মান করা ছিল না। বরং যারা আশিক চৌধুরীকে তার কাজের চেয়েও বেশি কিছু করে দেখছেন, তাকে মহাপুরুষ বানাচ্ছিলেন তাদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছিল। আমি নিশ্চিত আশিক চৌধুরী নিজেও তেমন কিছু দেখতে চান না, তিনিও তার নিজের কাজ করে যেতে চান।

মানসুরা আলম আরও বলেন, আমরা একটা সময় সুলাইমান সুখন, আরও বিভিন্ন তথাকথিত স্মার্ট ফিগার দেখেছি ফ্যাসিস্ট আমলে। মাশরাফি, সাকিবদের নিয়ে গালভরা গল্প দেখেছি। শেষে তাদের অবস্থা কি আমরা জানি। আমাদের মনে একটা ভয় থেকে যায় যখন কাউকে হঠাৎ ফিগার বানাতে দেখি। আমরা এর সাফারার।

ছাত্রদলের এ নেত্রী বলেন, আশিক চৌধুরীসহ যারা বাংলাদেশকে ধারণ করে কাজ করে যেতে চান, তাদের জন্য আমাদের শুভকামনা সবসময়। সে সঙ্গে আশিক চৌধুরীদের ইমেজ বিল্ড করতে গিয়ে তাকে তার কাজের চেয়েও বেশি কেউ বানাবে না, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দেশে সেটাও আমাদের প্রত্যাশা। সঙ্গে বাকস্বাধীনতা (কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ বাদে) চর্চার জন্য তার সোশ্যাল লাইফে হামলে পড়াও আমার লড়াই করা ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামের স্বপ্নে ছিল না। আমার বিরুদ্ধে আসা বেশিরভাগ সমালোচনা আমি দেখি না অথবা এড়িয়ে যাই। এমনকি ভয়ানক মিথ্যাচার ও তথ্যবিকৃতিও।

নিজের দায় স্বীকার করে তিনি বলেন, আমার দায় ছিল শুধু আশিক চৌধুরীর ব্যাপারে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার মিথ্যাচার, এডিটেড ছবি, স্ক্রিনশট কোনো কিছু নিয়ে আমার জবাবের দায় নেই। ব্যক্তিগত আক্রমণের জবাব আমি দেবো না। সেসব দায় তাদের যারা এই ঘৃণ্য বাকস্বাধীনতা চর্চা করে অন্যের স্বাধীনতা ও ত্যাগকে অস্বীকার করছেন। আপনাদের সুস্থতা কামনা করি। নিজের পরিবারের প্রতি মনোযোগ দেন। মানুষকে মানুষ মনে করেন। কেউ সমালোচনা করলেই তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে হয় না, এটাও পারিবারিক শিক্ষা।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (০৯ এপ্রিল) দুপুরের পর বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর একটি উপস্থাপনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেন পাড়ায় প্রশংসায় ভাসতে থাকেন। এরই প্রেক্ষিতে এক স্ট্যাটাসে মানসুরা লেখেন, ‘শুনলাম, নেটিজেন পাড়ায় নাকি নতুন আব্বু এসেছে।’ এমন স্ট্যাটাসের পর নেটিজেনদের রোষানলে পড়েন মানসুরা আলম।

আরবি/জেডি

Link copied!