বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ১১:৩২ এএম

‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ধর্মীয় মূল্যবোধের তোয়াক্কা করা হয়নি’

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ১১:৩২ এএম

‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ধর্মীয় মূল্যবোধের তোয়াক্কা করা হয়নি’

মিজানুর রহমান আজহারী। ছবি: সংগৃহীত

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের প্রস্তাবে জনতার ধর্মীয় মূল্যবোধের মোটেও তোয়াক্কা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ কথা জানান তিনি।

স্ট্যাটাসে মিজানুর রহমান আজহারী লিখেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি জনপরিসরে প্রকাশিত না হলেও, গণমাধ্যমে বেশকিছু সুপারিশ উঠে এসেছে। দুঃখজনক ব‍্যাপার হলো, জনতার ধর্মীয় মূল্যবোধের মোটেও তোয়াক্কা করা হয়নি এ সংস্কার প্রস্তাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরোধিতার নাম সংস্কার নয়। রাষ্ট্রীয় এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে, অবশ্যই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধকে আমলে নিতে হবে। 

তিনি লিখেন, সুপারিশসমূহে অন্যান্য বিষয়ের সাথে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণের মতো ধর্মীয়-নীতি-অনুসরণকারী আইনগুলোর ওপর আনা হয়েছে সংস্কার প্রস্তাবনা। মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মে স্বতন্ত্র পারিবারিক আইন বিদ্যমান থাকলেও, প্রস্তাব এসেছে—একটি অভিন্ন পারিবারিক আইন তৈরি করা। যুক্তি হিসেবে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইনে নারীর প্রতি বৈষম্য বিদ্যমান।’ 

তিনি  আরও লিখেন, প্রতিটি ধর্মেই বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। বিয়ের মাধ্যমে দুজন নারী-পুরুষের মাঝে গড়ে ওঠে পবিত্র বন্ধন, তৈরি হয় যৌন-সম্পর্কের বৈধতা। তবে, সমাজ ও বাস্তবতা বিবর্জিত একটি বিশেষ শ্রেণি বৈবাহিক সম্পর্কের মাঝেও ধর্ষণের গন্ধ খুঁজে পান। তথাকথিত ব্যক্তিস্বাধীনতার নামে তারা স্বামী-স্ত্রীর সহজাত খুনসুটিকে দেখানোর চেষ্টা করেন ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ হিসেবে। মূলত, আবহমানকাল ধরে চলে আসা এ দেশের পারিবারিক কাঠামো ও ঐতিহ্যকে ভেঙে চুরমার করে ফেলাই এই শ্রেণিটির উদ্দেশ্য।

মিজানুর রহমান আজহারী লিখেন, এ ছাড়া তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণের ক্ষেত্রে ইসলামের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। সেই দিকনির্দেশনা ও সেসবের কার্যকারিতা যে যাচাই করা হয়নি—ধর্মকে রাষ্ট্রের মুখোমুখি দাঁড় করানো ও নারী-বৈষম্যের হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা থেকেই বিষয়টি স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। তাদের মতে, ধর্ম যেহেতু নারী-সমাজের প্রতিপক্ষ, তাই রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে বিতাড়িত করা জরুরি। সেই লক্ষ্যেই তারা সংবিধানের ২(ক) নং অনুচ্ছেদের সংশোধনী চায়—যেখানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম স্বীকৃত। 

তিনি  লিখেন, বাংলাদেশের প্রচলিত সংবিধানের ১৮ (২)নং অনুচ্ছেদে পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ হলেও, কমিশন সেটি মানতে নারাজ। সংস্কার কমিশনের সদস্যরা পতিতাবৃত্তিকে নিবৃত্ত করার প্রচেষ্টাকে চিহ্নিত করেছেন মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে। উপরন্তু, বেশ্যাবৃত্তিকে তারা পেশা হিসেবে মূল্যায়ন করতে চান। অথচ বেশ্যাবৃত্তি হচ্ছে নারীত্বের সর্বোচ্চ অপমান। চরম অশ্লীলতার এহেন জঘন্য কাজের অস্তিত্ব কোনো সভ্য সমাজে যে থাকতে পারে না, সুস্থ বিবেকবান মানুষমাত্রই তা স্বীকার  করবে। তা ছাড়া যাদের জন্য এই আইনের সংশোধনী চাওয়া হচ্ছে অর্থাৎ পতিতারা তারাও এই অন্ধকার জগতের অভিশাপ থেকে বাঁচতে চায়।

এই মাওলানা আরও লিখেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন’ সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের একাধিক ধারায় পরিবর্তন আনার সুপারিশও করেছেন। সেখানে প্রায় সব জায়গায় ‘নারী-পুরুষ’ শব্দবন্ধের পরিবর্তে ‘লিঙ্গ পরিচয়’ শব্দদ্বয় ভুক্তির প্রস্তাবনা দিয়েছেন, যা সমকামী, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার—তথা এলজিবিটিকিউ মতবাদকে অন্তর্ভুক্ত করার দুরভিসন্ধি বলেই মনে হয়।

তিনি লিখেন, নীতি-আদর্শ বিবর্জিত সমাজবিধ্বংসী এসব প্রস্তাবনা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ দেশের জনসাধারণ কেউ মেনে নেবে না। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি—অনতিবিলম্বে এই বিতর্কিত ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন’ বিলুপ্তি ও এর প্রতিবেদন বাতিল করা হোক। পাশাপাশি, সমাজের ধর্মীয় অনুশাসন ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে, নারী-পুরুষের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!