ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বহিষ্কৃৃত থেকেও যুবলীগের ‘সম্রাট’

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৪, ১২:৪৯ এএম

বহিষ্কৃৃত থেকেও যুবলীগের ‘সম্রাট’

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ক্যাসিনোকাণ্ডে বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট জেলের ভিতরে-বাইরে যেখানেই থাকতেন, সেখানে বসেই রাজধানীর অঘোষিত ‘সম্রাট’ ছিলেন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞে তারই মদদে যুবলীগের নেতাকর্মীরা সরাসরি অংশ নেয়। তাদের অস্ত্র-অর্থ সরবরাহ করেন ঢাকা মহানগরের একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারকারী সম্রাট।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার গত দেড় দশকে যুবলীগকে ব্যবহার করে সম্রাট শুধু ঢাকা মহানগর নয়, বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ ক্যাসিনো, দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার করে মালেয়শিয়ায় সেকেন্ড হোম, সিঙ্গাপুর, নেপাল, ভারত, আমেরিকা, কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যতে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। 

ক্যাসিনোকাণ্ডে মাঝে কয়েক বছর জেলে থাকলেও সম্রাটের রাজত্ব শেষ হয়নি। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞে অস্ত্রসহ অর্থ দিয়ে মদদ দেওয়া এই আলোচিত যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও বর্তমান সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন ঢাকার অপরাধ জগতের এই ‘রাজা’।

সর্বশেষ গত জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে মাঠে সক্রিয় হন সম্রাট। কাকরাইল এবং আশপাশে এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। পূর্বের ন্যায় দমন-পীড়নে অনুসারীদের নিয়ে অস্ত্রহাতে প্রকাশ্য মহড়ায় অংশ নেন। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ঢাকার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যুবলীগসহ আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অর্থ এবং অস্ত্র সরবরাহ করেন। আন্দোলনের সময় অনুসারীদের বলতেন শেখ হাসিনার সরকারকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। 

এবার ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে পারলে রাজনীতিতে আমি বা আমরা পুনরায় আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারব। দলে নিজের অবস্থান ফিরে পেতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন রুখতে সম্রাটের অনুসারী কোমর বেঁধে মাঠে নামেন। যদিও ৫ আগস্টের পর নিজে এবং অনুসারীরা আত্মগোপনে চলে যান।

 ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্রাটের একাধিক অনুসারীকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে। গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাটের অর্থ এবং অস্ত্র সরবরাহের কথা শিকার করছেন। সম্রাট এবং অনুসারীদের ধরতে চিরুনী অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একাধিক কর্মকর্তা।

সম্রাটের বড়ভাই বাদল চৌধুরী ঢাকায় তার ক্যাসিনো ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। ছোটভাই রাশেদ ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন। তার বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। মা বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর সম্রাটের পরিবারের সবাই গা ঢাকা দেন।

সম্রাটের ঘনিষ্ঠ দুই সহচর হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। যুবলীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা জিকে শামীমও সম্রাটকে অবৈধ আয়ের ভাগ দিতেন। ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ রাজধানীর জুয়াড়িদের কাছে বেশ পরিচিত নাম। সম্রাটের নেশা ও ‘পেশা’ ছিল জুয়া খেলা। 

প্রতি মাসে অন্তত ১০ দিন সিঙ্গাপুরে যেতেন জুয়া খেলতে। সেখানে টাকার বস্তা নিয়ে যেতেন তিনি। সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় জুয়ার আস্তানা মেরিনা বে স্যান্ডস ক্যাসিনোতে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ থেকেও আসে জুয়াড়িরা। কিন্তু সেখানেও সম্রাট ভিআইপি জুয়াড়ি হিসেবে পরিচিত ছিল।

প্রথমসারির জুয়াড়ি হওয়ায় সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি এয়ারপোর্টে তাকে রিসিভ করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও ছিল। এয়ারপোর্ট থেকে মেরিনা বে স্যান্ডস ক্যাসিনো পর্যন্ত তাকে নিয়ে যাওয়া হতো বিলাসবহুল গাড়ি ‘লিমুজিনে’। সিঙ্গাপুরে জুয়া খেলতে গেলে সম্রাটের নিয়মিত সঙ্গী হতেন সম্রাটের ক্যাসিনো গুরু যুবলীগ দক্ষিণের নেতা আরমানুল হক আরমান, মমিনুল হক সাঈদ ওরফে সাঈদ কমিশনার, সম্রাটের ভাই বাদল ও জুয়াড়ি খোরশেদ আলম।

গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট, কাপ্তান বাজার, গুলিস্তানসহ পুরান ঢাকার লেগুনাস্ট্যান্ড, ফুটপাত প্রতিদিন চাঁদা তুলতেন সম্রাটের লোকরা। রাজধানীর মতিঝিল এলাকাসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকার ফুটপাতের চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারই অনুসারীরা। 

প্রতিদিন চাঁদার কোটি কোটি টাকা সম্রাটের কাছে জমা হতো। এরপর সেই টাকা বিভিন্ন অংকে ভাগ হয়ে চলে যেত প্রশাসন-পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। ঢাকার ক্লাবগুলোতে জুয়ার আধুনিক সংস্করণ ‘ক্যাসিনো’ ব্যবসাও যুক্ত করেছেন সম্রাট। 

জুয়াড়িদের কাছে তিনি ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ পরিচিত ছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একক নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজি, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, বাড়ি ও জমিদখল সবই করেছেন সম্রাট। নানা অপকর্মের বিপরীতে সম্রাট যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি কাড়েন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘লোকবল’ সাপ্লাই আর অর্থ দিয়ে। তার রয়েছে বিশাল ‘কর্মীবাহিনী’। 

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বড় ধরনের শোডাউন দেখাতেন তিনি। কর্মীবাহিনীকে একেক কর্মসূচিতে একেক ধরনের পোশাক পরিয়ে দৃষ্টি কাড়তেন সবার। এজন্য যুবলীগ চেয়ারম্যান সম্রাটকে শ্রেষ্ঠ সংগঠক বলে আখ্যায়িত করেন। এমনকি ক্যাসিনো ব্যবসার খবর প্রকাশের পরও তার পক্ষে অবস্থান নেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। গণমাধ্যমকর্মীদের একটি অংশের সঙ্গেও ছিল তার সখ্য। যে কারণে সম্রাটের যেকোনো কর্মসূচির মিডিয়া কাভারেজও ছিল চোখে পড়ার মতো।


ভবন দখল করে অফিস: রাজধানীর কাকরাইলের রাজমনি সিনেমা হলের উল্টো দিকে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অফিস খুলেছিলেন সেই ভবনও দখল করে নেন সম্রাট। দখল হওয়ার পর ভবনের মালিক পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সহযোগিতা পাননি। উল্টো সম্রাটের নাম শুনে হুমকি দিয়েছে পুলিশ। 

২০১২ সালের দিকে সম্রাট চারতলায় অফিস শুরু করেন। পুরো ভবন দখলে নেন ইসমাইল হোসেন সম্রাট। ভবনটি দখল করলে সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় অভিযোগ করতে যান মদিনা রিয়েল এস্টেটের মালিক আবু সাইদ রুবেল। ওই সময় রমনা থানার ওসি ছিলেন শিবলী নোমান। 

ওসি অভিযোগ না নিয়ে উল্টো তাঁকে হুমকি দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন বলে জানান আবু সাইদ রুবেল। এরপর আর মালিক ভবনটির দখল পাননি। একটি সূত্র বলছে, সম্রাট ভবনটি তাঁর নিজের বলে দাবি করছেন। এর জন্য ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে মালিকানাও তৈরি করেছেন।

ফেনীর পরশুরাম উপজেলার অধিবাসী সম্রাটের বাবা রাজউকে ছোট পদে চাকরি করতেন। বাড়ি পরশুরামে হলেও সেখানে তাদের পরিবারের কেউ থাকেন না। বাবার চাকরির সুবাদে ঢাকায় বড় হন সম্রাট। পরিবারের সঙ্গে প্রথমে বসবাস করতেন কাকরাইলে সার্কিট হাউস সড়কের সরকারি কোয়ার্টারে। 

রাজনীতিতে সম্রাটের আগমন ঘটে ১৯৯০ দশকের শুরুর দিকে। এ সময় কিছুদিন ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অবশ্য তার আগে এরশাদের জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্রসমাজের সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততা ছিল। বিএনপির ১৯৯১-৯৬ আমলে ছাত্রলীগ ছেড়ে দিয়ে যুবলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দলের ছত্রছায়ায় রাজধানীর ব্যাংকপাড়া খ্যাত মতিঝিল, পুরান ঢাকা, গুলিস্তান ও পল্টনে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ ঢাকার ফুটপাতকেন্দ্রিক যত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক-মাসিক চাঁদা আদায়সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন সম্রাট ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হলেও পুরো মহানগরীর যুবলীগের নিয়ন্ত্রণ করতে তিনি। 

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুবলীগের মাধ্যমে লাইমলাইটে চলে আসেন। সে সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ঢাকা শহরে দখল-চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে দৃশ্যপটে চলে আসেন তিনি। 

মূলত ১৯৯৩ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৫৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে সম্রাটের পথ চলা শুরু। ২০০৩ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার মধ্য দিয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। 

বিএনপি সরকারের আমলে সমস্যা ছাড়াই পার করে দেন। ১/১১ এর পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসার কেন্দ্রীয় যুবলীগে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন এই মুকুটহীন সম্রাট। ২০১২ সালে যুবলীগের চেয়ারম্যান হন শেখ সেলিমের ভগ্নিপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। তার হাত ধরে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট যুবলীগের রাজনীতিতে পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসেন। সেই বছরই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় সম্রাটকে।

তৎকালিন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যক্তি পছন্দে মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি পদ পেয়ে খাটিয়ে রাজউক, সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত, সেক্রেটারিয়েটসহ সরকারি সব অফিসে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজিতে একক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। 

সম্রাটের অনুসারী যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্য অস্ত্রবাজি প্রদর্শন করে ‘ভাইয়ের লোক’ পরিচয়ে দিয়ে নগরজুড়ে জমি-বাড়ি দখল, ফুটপাট চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করত। আওয়ামী লীগের টানা চার মেয়াদের প্রথম মেয়াদে দেশে নিষিদ্ধ ক্যাসিনো ব্যবসা চালু করেন। পুরো ঢাকায় ক্লাব পাড়ায় ক্যাসিনো ব্যবসার একক নিয়ন্ত্রণ তার সিন্ডিকেটের কব্জায়। 

মতিঝিলের ইয়ংমেনস ক্লাব, আরামবাগ ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, দিলকুশা ও মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের ক্যাসিনো বা জুয়ার টাকার মোটা অংশের জমা হতো সম্রাটের ব্যক্তিগত তহবিলে। এর বাইরে ওমর ফারুক চৌধুরীর হয়ে দেশব্যাপী যুবলীগের পদ বাণিজ্যেও করতেন তিনি। পুরান ঢাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণে সম্রাটের ছিল শতাধিক ক্যাডার। এ ছাড়া ঢাকার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছিল তার আলাদা আলাদা ক্যাডার।


দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম’ কাছে চাঁদা দাবি করে আলোচনার জন্ম দেন। বিষয়টি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে নাম প্রকাশ না করে সম্রাটের চাঁদা চাওয়ার বিষয়টিতে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘নেতাকর্মীরা এখন লাশের কাছ থেকেও নেয়। 

দলীয়প্রধানের ক্ষোভ প্রকাশের পরও গ্রেপ্তার দূরে থাক কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় নেক আওয়ামী লীগ নেতাই অবাক হয়েছিলেন। বিভিন্ন গোয়েন্দার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ক্যাসিনো ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। তবে, ২০১৯ সালে ক্যাসিনো অভিযানে অনেক নেতাকর্মী আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন সম্রাট। 

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযানের মাধ্যমে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হয়। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেয় এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)। ওই অভিযানেই ৭জন ক্যাসিনো গডফাদারসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগ দক্ষিণের সে সময়ের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইয়ংমেনস ক্লাবের পরিচালক খালেদ মাহমুদ ভূইয়াকে। 

সম্রাটের অনৈতিক কাজের সমালোচনা মুখে ক্যাসিনোকাণ্ডে  অভিযান শুরুর উনিশ দিনের মাথায় ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ক্যাসিনোকাণ্ডের মূল হোতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার সহচর হিসেবে পরিচিত মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি এমরানুল হক আরমানকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। 

সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার ক্যাসিনোতে প্রায় ২২২ কোটি টাকা পাচার, ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদক, র‌্যাব ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) সর্বমোট চারটি মামলা দায়ের করে। সম্রাটকে কারাগারে পাঠানোর মধ্য দিয়ে যুবলীগের রাজনীতিতে সেই অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। প্রায় ৩২ মাস জেলে থাকার পর ২০২২ সালের ১১ মে চার মামলায় তিনটি শর্তে জামিন পান সম্রাট। 

আদালতের শর্তগুলো হচ্ছে- পাসপোর্ট জমা, স্বাস্থ্য পরীক্ষার আপডেট ও আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে তাকে। এদিন সম্রাট জামিনে মুক্তির পরপরই অনুসারী নেতাকর্মীরা আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। দুদকের দায়ের করা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!