মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৪, ১২:৪২ এএম

শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস লিকুরও আছে রাজপ্রাসাদ!

হাসিবুল ইসলাম, বরিশাল

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৪, ১২:৪২ এএম

শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস লিকুরও আছে রাজপ্রাসাদ!

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু সরকারি অর্থ লুটপাট করে বরিশালে পাহাড়সম সম্পত্তি বানিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের ২৪নং ওয়ার্ডের গ্যাস্টারবাইন এলাকায় প্রধান সড়ক লাগোয়া বিশাল আয়তনের ভূমি ক্রয় করে গড়ে তুলেছেন একটি রাজপ্রাসাদ। দূর থেকে বাউন্ডারি ঘেরা বিশাল মাঠ ও গাছপালা দেখা গেলেও অভ্যন্তরের প্রাসাদ কখনো কারো চোখ আটকায়নি। 

সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিনে সুন্দরী তরুণীদের এনে এখানে রাতযাপন করাসহ নেশায় বুঁদ হয়ে আনন্দ-ফূর্তি করলেও এলাকাবাসী কখনো টের পায়নি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক থাকায় ডাকবাংলো স্টাইলের বাসাটি লুটপাট হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় লিকু বা তার পক্ষে কেউ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশকে লিখিত বা মৌখিক অবহিত করেনি।

অবশ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ লিকুর অঢেল সম্পদ নিয়ে ৫ আগস্টের পর দেশের গণমাধ্যমগুলো ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংস্থাটি জানিয়েছে, শেখ হাসিনার বাবার পৈতৃক বাড়ি গোপালগঞ্জের সন্তান গাজী হাফিজুর রহমান লিকু প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়ে কমিশন বাণিজ্য এবং প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার মূল বেতন ৫ হাজার ১০০ টাকা দিয়ে শুরু হলেও দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। 

শুধু নিজের নামে নয়, স্ত্রী-শ্যালক ও আত্মীয়স্বজনের নামে বিঘার পর বিঘা জমি এবং ডজনখানেক বাড়ি নির্মাণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পর সেগুলোর সন্ধান মিলছে। তবে লিকু বরিশালেও যে শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক তা আলোচনায় আসেনি এবং দুদকও প্রাথমিক তদন্তে এ তথ্য পায়নি বলে জানা গেছে। 

রূপালী বাংলাদেশের অনুসন্ধানে গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর বরিশালে থাকা এই অবৈধ সম্পদের তথ্য-উপাত্ত উঠে এসেছে। 

অনুসন্ধানী সূত্র বলছে, ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে গাজী হাফিজুর রহমান লিকু সারা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার করতে থাকেন। তিনি বরিশাল শহরের দক্ষিণ রুপাতলী এলাকার গ্যাস্টারবাইনসংলগ্ন একাধিক বাসিন্দার কাছ থেকে ভূমি ক্রয় শুরু করেন। 

আওয়ামী লীগ শাসনামলের শেষ ১০ বছরের মধ্যে তিনি ওই এলাকায় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৫ একর অর্থাৎ ৫০০ শতাংশ জমি কিনে নেন। সেখানে কিছুদিনের মধ্যে ১০ ফুট উচ্চতার বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ভবন নির্মাণকাজ শুরু করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, প্রথমে কিছু জমি ৫ লাখ টাকা করে শতাংশ কিনলেও পরবর্তীতে মূল্য বেড়ে যায়। কিন্তু গাজী হাফিজুর রহমান লিকু অর্থের দিকে না চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে অর্থাৎ ১০-১২ লাখ টাকায়ও শতাংশ ক্রয় করেছেন। এমনিভাবে তিনি ২০২০ সাল পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত মানুষের কাছ থেকে ৫০০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন। পরে সেখানে আলিশান ভবন নির্মাণ করে প্রমোদ বিনোদনের ব্যবস্থা করেন।

ভূমি বিক্রেতাদের মধ্যে দুজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজী হাফিজুর রহমান লিকু প্রথমে যেখানে ভূমি ক্রয় করেন, তার পাশেই ছিল আব্দুল মালেক এবং হালিম হাওলাদারের (ছদ্মনাম) জমি। ২০১৭ সালের দিকে লিকু তাদের দুজনের ২০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করার প্রস্তাব দেন, কিন্তু বাজার মূল্য অপেক্ষা দাম কম বলায় তখন মালেক-হালিম তাকে না বলে দেন। 

এতে তিনি ক্ষুব্ধ হলেও কাউকে বুঝতে দেননি, পরে ওই দুজন ভূমি মালিককে চাপে ফেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ১০ লাখ টাকা করে শতাংশ কিনে নেন। বাদবাকি সম্পত্তি কারও কাছ থেকে ৮, ১০ ও ১২ লাখ টাকায়ও কিনে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, স্বৈরাচারের দোসর লিকু বরিশালে এলে সর্বদা কালো গ্লাসের গাড়ি নিয়ে আসতেন এবং তাতে ২-৪ জন সুন্দরী তরুণী, এমনকি কখনো কখনো অভিনেত্রী বা মডেলদের দেখাও মিলত। 

সামান্য বেতনভুক্ত কর্মচারী হয়ে লিকু গোটা দেশে কীভাবে এত অর্থ-সম্পদ গড়লেন? এ নিয়ে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করলেও বরিশালের সম্পদ হিসাবের খাতা থেকে বাদ পড়ে যায়। যদিও দুদক বলছে, তদন্ত শেষ হয়নি, কেবল শুরু হয়েছে। 

সংস্থাটি জানিয়েছে, নিজেকে আড়ালে রাখতে সব ধরনের ছলনার আশ্রয় নিয়েছেন লিকু। দালিলিকভাবে নিজ নামে সম্পদ কম দেখিয়ে বেনামে গড়ে তুলেছেন অধিকাংশ অবৈধ সম্পদ। এ ছাড়া ভিয়েতনামে শতকোটি টাকা পাচার করেছেন। শ্যালককে সে দেশের ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে পালিয়ে গিয়ে শ্যালক-দুলাভাই দেশটিতে বিলাসী জীবনযাপন করছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে তার নিজ ও আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় কমিশন থেকে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

দুদক বলছে, গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ২০০৯ সালে অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। গোপালগঞ্জের কর অঞ্চল-৪ এর করদাতা তিনি, তারা মোট ৫ ভাই। ২০২৩ সালে এপিএস হিসেবে বাদ পড়ার পর সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। সেখান থেকে ভিয়েতনামে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, লিকু প্রথম আয়কর প্রদান করেন ২০০৯-১০ করবর্ষে। তার আয়কর ফাইলে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ করবর্ষে মূল বেতন ৬৭ হাজার ১০ টাকা, নিট আয় ৯ লাখ ৫ হাজার ৪৪৪ টাকা এবং নিট সম্পদ এক কোটি চার লাখ ৮৭ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। 

আয়কর রিটার্নের বাইরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ৬০ লাখ ২১ হাজার ২৮৮ টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ২০২৩ সালের ২৫ জুন স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে ৫০ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া মেটলাইফ এলিকোতে ২৮ লাখ টাকার পলিসির সন্ধান পেয়েছে দুদক।

রাজধানী ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলায় ‘মধু সিটিতে’ এক বিঘা জমির ওপর ৬তলা ভবন নির্মাণ করেছেন লিকু, যার মূল্য কোটি টাকা। এ ছাড়া রাজধানীর আদাবরের ৬ নম্বর রোডের ৫৮৩ নম্বর বাড়ির এ-৬ ফ্ল্যাটটি তার স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে। 

ওই বাড়ির মালিক নজরুল ইসলাম রহিমা আক্তারের বন্ধু বলে জানা গেছে। ২৫ মিতালী রোড, আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক, ধানমন্ডি, ঢাকায় লিকুর বেনামে আরও একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। স্ত্রী ও অন্যদের নামে অর্ধডজন প্রাইভেট গাড়ি ও মাইক্রোবাসের খোঁজ পাওয়া গেছে। 

লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের নামে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন রামদিয়াতে ‘মেসার্স রাফি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজ’ নামের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার জমির পরিমাণ ৪৭১ শতাংশ এবং দালিলিক মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। 

খুলনা-ঢাকা-সাতক্ষীরা-গোপালগঞ্জ রুটে ‘ওয়েলকাম এক্সপ্রেস’ নামে ৪২টি যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল করছে। এর মধ্যে সাতটি গাড়ি তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। গাড়িগুলো টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কালু ও তার যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিটি গাড়ির মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। 

এ ছাড়া ঢাকা মহানগরে ওয়েলকাম বাস সার্ভিসেও তার শেয়ার রয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানাধীন কুশলা ইউনিয়নসহ গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন কাজুলিয়া গ্রামে ৪০০ বিঘা জমিতে মৎস্যঘের আছে। এ ছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন থানাপাড়া রোডে পৈতৃক জমিতে পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেছেন, যার বাজার মূল্য দুই কোটি টাকার বেশি। 

গোপালগঞ্জের একটি সূত্র জানায়, লিকুর শ্যালক শেখ মো. ইকরাম ওরফে হালিম মোল্লা, তিনি গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে মূলত হুন্ডি ব্যবসা করতেন। হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তিনি ভিয়েতনামে বসবাস করেন। 

গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর সব অবৈধ অর্থ বৈধ করার কাজে তিনি সহযোগিতা করেন। দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। নিজ বাড়ির পাশে থানাপাড়া রোডে অনির্বাণ স্কুলের দক্ষিণ পাশে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন লিকু। সেখানে তার শ্বশুর-শাশুড়ি বসবাস করছেন।

গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাকুড় নিলের মাঠের পাশে ১৩ শতাংশ জমির ওপর শ্যালক শেখ মো. ইকরাম ওরফে হালিম মোল্লার নামে (বেনামে) ১০তলা কমার্শিয়াল ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করেছেন, যা ‘স্বর্ণা টাওয়ার’ নামে পরিচিত। আলোচ্য হালিম মোল্লা তার স্ত্রী স্বর্ণা খানমের নামে এটি গড়েছেন।

অনুসন্ধানী সূত্র জানিয়েছে, শুধু বরিশাল শহরে নয়, পটুয়াখালীর কুয়াকাটার ‘ওশান ব্লু’ নামের রিসোর্টের মালিকও লিকু। তার সেজো ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপু রিসোর্ট দেখাশোনা করেন। সেখানে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানেরও শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর গোবরা নামক স্থানে লিকুর শ্যালক হালিম মোল্লার শ্যালক রিপন ফকিরের নামে ১৫ শতক জমিতে আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ির সন্ধান মিলেছে। একই ওয়ার্ডে হালিম মোল্লার অপর শ্যালক মিল্টন ফকিরের নামে তিনতলা বাড়ি এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাকুড় নামক স্থানে নিলের মাঠের পাশে ১০ শতাংশ জায়গায় একতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। 

লিকুর আপন ছোট ভাই গাজী শফিকুর রহমান ছোটনের নামে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ শতাংশ জমি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে শ্যালকের নামে সোয়া কোটি টাকার সাত কাঠা জমি, গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম মোড়ে স্ত্রী রহিমা বেগমের নামে ৮ শতাংশ ও ১০ শতাংশ বসতভিটা, গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫ বিঘা জমি, ভায়রা ভাই ওমর আলীর নামে পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চারতলা বাড়ি ক্রয় করেছেন। দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানেও এসব উপাত্ত বেরিয়ে এসেছে।

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়ে এবং এত কম বেতনে চাকরি করে আওয়ামী লীগের দোসর লিকু কীভাবে এত অর্থ-বিত্তের মালিক হলেন- এমন তথ্য খুঁজতে যখন গোয়েন্দা সংস্থার কর্তাদের কাজে বেগ পেতে হচ্ছে, ঠিক তখনই রূপালী বাংলাদেশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এলো বরিশালে তার আরও অঢেল সম্পদের নথিপত্র।

জানা গেছে, গ্যাস্টারবাইন এলাকার রাজপ্রাসাদটি দেখভালের জন্য স্থানীয় তিন ব্যক্তিকে ভালো বেতন দিয়ে রেখেছেন লিকু। তারাই বছরের পর বছর পুরো সম্পত্তি দেখাশোনা করেন। ২০২৩ সালে সৌদি আরবে ওমরাহ করতে যাওয়ার আগে লিকু মাসে অন্তত দুইবার সেখানে যেতেন, সাপ্তাহিক ছুটির দুদিন মোজ-মাস্তিতে মেতে উঠতেন কথিত রাজপ্রাসাদের অন্দরমহলে। 

অবশ্য এসব তথ্য কেয়ারটেকার মামুন প্রমোদ বিনোদনের বিষয়টি স্বীকার না করলেও বলছেন, স্যারকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কখনো আসতে দেখা যায়নি। তিনি দেশে থাকতে প্রতি মাসে ২-৪ বার বরিশালে আসতেন এবং সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে চলে যেতেন। 

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ঠিক মাসখানেকের মাথায় অর্থাৎ ৫ সেপ্টেম্বর বিশাল আয়তনের ভবনটিতে লুটপাট হয়েছে। কেয়ারটেকার মামুন জানান, বাসাটি থেকে কী পরিমাণ অর্থ-সম্পদ লুট হয়েছে, তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ অর্থ-সম্পদের পরিসংখ্যান শুধু লিকু স্যারের কাছেই থাকত, তিনিই ভালো বলতে পারবেন। 

তবে অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মাত্র ১০ লাখ টাকা বাসায় ছিল। এই ঘটনায় থানা পুলিশ বা অন্য কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও অভিযোগ করা হয়নি, জানান মামুন। 

ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তিনি কিছুদিন হলো যোগদান করেছেন। ফলে আগে কী হয়েছে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই সংক্রান্তে কোনো অভিযোগ নেই, এমনটাই অনুমান করছেন তিনি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!