সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রের ছক

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৫, ১০:০২ পিএম

ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রের ছক

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। দ্রব্যমূল্য অনেকটাই নাগালের মধ্যে আসায় খুশি সাধারণ মানুষ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এরইমধ্যে থেমে নেই পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপি, নেতাকর্মী ও সুবিধাভোগীদের ষড়যন্ত্র। 

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও ভারতীয় বিজেপি সরকার, গদি মিডিয়া ও সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানা অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। গত দেড় দশকের মতো এখনো মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে দেশের মানুষকে বোকা বানাতে তৎপর ফ্যাসিস্ট অনুসারীরা। 

বর্তমানে তারা সাইবার ওয়ারে (ভার্চুয়াল যুদ্ধ) মাঠে নেমেছে। সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে, বিশেষ রাত হলে তাদের ভার্চুয়াল যুদ্ধ বৃদ্ধি পায়। আওয়ামী ঘরানার বাম সংগঠনগুলোকে ঢাকার রাজপথে নামিয়ে দিয়ে, হাসিনার দোসর চিহ্নিত কয়েকটি টেলিভিশন, দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টাল পরিকল্পিতভাবে, মিথ্যা তথ্য, বানানো সংবাদ, নানা গুজব ও উসকানি ছড়িয়ে স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে মরিয়া।

সাইবার যুদ্ধে একের পর এক সেঞ্চুরি করছে আওয়ামী লীগ। তবে মাঠের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বাম সংগঠনগুলো। আর তাদের সহায়তা করছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর একাধিক মিডিয়া। কোনোকিছু ঘটনা ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে নিজস্ব আওয়ামী সমর্থিত দলীয় কিছু ইউটিউবার এবং আওয়ামী সমর্থিত মিডিয়া হাইপ ক্রিয়েট করতে সহযোগী ভূমিকা পালন করছে। 

এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পেশাল ড্রাইভ দিতে দেখা গেছে পতিত ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগকে। এর মধ্যে সব থেকে আলোচিত ঘটনাটি হচ্ছে দেশে জরুরি অবস্থা জারিকেন্দ্রিক। দেশের অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও দেশের সাধারণ মানুষের মনোবল নষ্ট করতেই মূলত এই ওয়ার চালিয়েছে। তবে জরুরি অবস্থা জারির এই গুজব ছড়ানোর পেছনে ছিল আরেক নীলনকশা- সেটি হচ্ছে ড. ইউনূসের চীন সফরে বাগড়া দেওয়া। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ড. ইউনূস যাতে চীন সফর না করতে পারে এ রকমটা চাচ্ছিল।

রাজধানীর শাহবাগ, শহিদ মিনার ও জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকাকে টার্গেট করা হচ্ছে। চলমান বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজপথ দখল ও পুলিশের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হচ্ছে। পরবর্তীতে সেটি পুলিশই তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বলে সাইবার জগতে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর বাইরে ড. ইউনূস সরকার ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে ভারতীয় গদি মিডিয়ায় গাল-গল্প বা কল্পকাহিনি প্রচার-প্রকাশ করা হচ্ছে।

আর তাদের সহায়তা করছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ভারতীয় মিডিয়ায় সে দেশের সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। ঢাকা থেকে মিথ্যা তথ্য ও ভিডিও-ছবি দিয়ে সহায়তা করছে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিচার্জ অ্যান্ড ইনফরেশন (সিআরআই) ও ফ্যাসিস্ট হাসিনা ঘনিষ্ট সংবাদকর্মীরা। 

ভারতীয় মিডিয়ার ঢাকা ব্যুরো অফিস ও প্রতিনিধিদের ব্যবহার মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ৫ আগস্টের আগে-পরে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামীপন্থি বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মী, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। তারা দেশ মৌলবাদীদের দখলে, জুলাই আন্দোলনে জঙ্গি হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে দাবি করে আসছে।

ফ্যাসিস্ট আমলে বাম সংগঠনগুলোকে দেখা না গেলেও, এমনকি কিছু বাম আওয়ামী সুবিধাভোগীরা হঠাৎ যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ধর্ষণ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার বাসা ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বামদের ব্যাপক উগ্র এবং ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা যায়। এর পরবর্তীতে বাম নেতা লাকি আক্তারের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ভাবিয়ে তোলে সারা দেশকে। 

তবে আওয়ামী লীগের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মেসেজের স্ক্রিনশটগুলো লক্ষ্য করলেই দেখা যায় সেখানে শাহবাগের কুশীলব প্রধান লাকী আক্তারকে আওয়ামী লীগের সমর্থন দিতে দেখা যায় এবং তার ধর্ষণবিরোধী  কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের লোকজনকে মাঠে নামতে আহ্বান করা হয়। সেসব স্ক্রিনশট রূপালী বাংলাদেশের হাতে এসেছে। 

সেখানে বলা হয়েছে, লাকি রাস্তা তৈরি করেছে, কেউ বাসায় বসে থাকবেন না। এ ছাড়া আরও একটি স্ক্রিনশটে ধর্ষণবিরোধী মিছিলে সব আওয়ামী নেতাকর্মীদের অংশ নিতে বলা হয়। তবে হাসনাতের স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে বাম সংগঠনগুলোর ধর্ষণ ইস্যুটা মোটামুটি ঝিমিয়ে পড়ে, বন্ধ হয়ে যায় বামদের মাঠের কার্যক্রম, কিন্তু সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের আন্দোলনে আবারও প্রাণ ফিরে পায় বাম নেতারা। 

এরইমধ্যে প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক আন্দোলনে বাম নেতা দিলীপ রায়কে হাতেনাতে ধরে পুলিশ, সেখানে একটি লাঠি দিয়ে পুলিশকে বেধড়ক মারতে দেখা যায় বাম নেতা দিলীপ রায়কে। এর পরবর্তীতে পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধরলে তার পরিচয় প্রকাশ পায়। এ ছাড়াও শ্রমিকদের আন্দোলনে পুলিশদের ওপর হামলা করতে দেখা গেছে মুখে সার্জিক্যাল মাস্ক পরা কিছু সন্ত্রাসীকে। এর পরবর্তীতে আবারও পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা কর্মসূচি দিতে দেখা গেছে বাম নেতাদের। এ ছাড়া গতকাল রাতে মশাল মিছিল করতে দেখা গেছে বাম নেতাদের।

আওয়ামী লীগ আমলে কিছু মিডিয়া সুবিধা পেয়ে নিয়োজিত ছিল বিরোধী দল দমন নিপীড়নে, এমনকি জঙ্গি নাটকে পারদর্শী ছিল কিছু মিডিয়া। হাসিনা পতনের পর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ ইস্যুতে মিডিয়াকে বেশ ষড়যন্ত্রে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে স্পেশাল ড্রাইভ ছিল ধর্ষণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে উপদেষ্টার বাড়ি ঘেরাও, এসব মিছিলে মোট ১০-২০ জনের বেশি লোক না থাকলেও পতিত হাসিনা সমর্থিত মিডিয়া লাইভ করে, আনকাট দিয়ে দিয়ে ব্যপক হাইপ ক্রিয়েট করতে দেখা গেছে। 

মিডিয়া হাইপ ক্রিয়েট করে নজর কাড়ার চেষ্টা হয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিবের। বোঝানো হয়েছে দেশের নারী ও শিশুরা এই সরকারের কাছে নিরাপদ নয়। এছাড়া এসব ভিডিও দিয়ে টুইটারেও ব্যাপক হাইপ ক্রিয়েট করা হয়েছে। টুইটারের এসব ভিডিও ফরেন্সি চেক করলে দেখা যায়, এগুলো বাংলাদেশি মিডিয়ার আনকাট ভিডিও ডাউনলোড করে আপলোড করা।

গোয়েন্দা তথ্যমতে, আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা থেমে নেই। প্রতিনিয়ত তারা নানা ছক কষছেন। স্বৈরাচার হাসিনার দোসরদের চাওয়া দেশকে অস্থিতিশীল রাখা। জনগণের জীবনযাত্রাকে নানাভাবে ব্যাহত করা। এসব কাজে তারা দেশ-বিদেশ থেকে অনুসারীদের মাঝে টাকাও বিলি করছে। 

আওয়ামী দেশে-বিদেশে পলাতক লাখ লাখ নেতাকর্মী ছাড়াও সিআরআই’র হাতে গড়া এক লাখ সাইবার যোদ্ধা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়ার থেকে নিজেদের হারানো মসনদ ফিরে পেতে মরিয়া। আর তাদের শেষ ভরসা ভারতীয় বিজেপি সরকার, সে দেশের গদি মিডিয়া। আর তাদের সহায়তা করছে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী দোসররা।

দেশকে অস্থিতিশীল করার মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে এগুচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সহায়তাকারী সহযোগী রাজনৈতিক দল এবং তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে পরিকল্পিতভাবে মাঠে নামানো হচ্ছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নতুন করে মাঠে নেমেছে বামপাড়ার দলগুলো। 

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনরোষের ভয়ে যখন দেশে-বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পলাতক থাকলেও তারা দেশে অনুসারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন, দিচ্ছে আর্থিক সাপোর্ট। এই প্রতিবেদকের কাছে তথ্য রয়েছে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর শাখা সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ প্রতিমাসে তার অনুসারীদের ৫-৬ লাখ টাকা বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাচ্ছেন। 

রিয়াজ গত ৬ আগস্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক হন। রহস্যজনক কারণে পরে তাকে ছেড়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর গোপনে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে বসেই সরকারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। 

সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ঘনিষ্ঠ সহচর রিয়াজ চাঁদাবাজির মাধ্যমে কয়েকশ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন। সেই অর্থে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। সেই ব্যবসার লাভের একটা অংশ দেশে থাকা অনুসারীদের কাছে পাঠান প্রতি মাসে। রিয়াজের নির্দেশমতো তার অনুসারীরা সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত।

একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী, সংসদ-সদস্যসহ অধিকাংশ শীর্ষ নেতাসহ প্রায় অর্ধ লাখ আওয়ামী সদস্য ভারতে আত্মগোপনে রয়েছেন। ভারতে পলাতক থাকাবস্থায় ভার্চুয়াল জগতে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় যুদ্ধ চলমান। 

৫ আগস্ট পরবর্তী ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, রাহাজানিসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের ইস্যুকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সাইবার যুদ্ধে অংশ নেওয়ায় সরকারের একাধিক সংস্থা সাইবার পেট্রলিং বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশে-বিদেশে যারা প্রতিনিয়ত সরকার, সেনাবাহিনী ও দেশের জনগণকে মিথ্যাচার করছে তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। দিন দিন সেই তালিকায় নামের সংখ্যা বাড়ছে। মিথ্যাচার, গুজব, উসকানি ও দেশকে যারা অস্থিতিশীল করবে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০২১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাবস্থায় স্বৈরাচার হাসিনা বলেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের হয়ে লড়াই করতে এক লাখ সাইবার যোদ্ধা তৈরি করবে আওয়ামী লীগ। 

দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপকমিটির তত্ত্বাবধানে সাইবার যোদ্ধাকে ট্রেনিং দেয় বিশেষজ্ঞরা। দলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন- সিআরআইর মনিটরিংয়ে আওয়ামী লীগের বা হাসিনার অনুসারী সেই এক লাখ সাইবার যোদ্ধা এখন মাঠে। সে সময় সরকারের খরচে এই এক লাখ সাইবার যোদ্ধা তৈরি করা হয়। 

তারাই এখন ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা বর্তমান সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে গুজব, অপপ্রচার, উসকানিমূলক বক্তব্য, মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র  করে যাচ্ছে। এসব সাইবার যোদ্ধারা মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে অপপ্রচার।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!