ঢাকা সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

১১টি কার ব্যবহার করতেন এমপি রণজিত

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৭:৫৫ পিএম

১১টি কার ব্যবহার করতেন এমপি রণজিত

ছবি সংগূহীত

ঢাকা: যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বাবু রণজিত কুমার রায় নির্বাচিত হওয়ার আগে পরিবার নিয়ে থাকতেন একটি খুপড়ি ঘরে। তিনি আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৫ বছর। এই লম্বা সময় খুপড়ি ঘর থেকে পরিববর্তন হয়েছে অনেক কিছু। একইসাথে, দেশের বাইরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। অবস্থার পরিবর্তনের সাথে তিনি এবং তার পরিবারের চার সদস্য ব্যবহার করতেন ১১টির বেশি প্রাইভেট কার।

এমপি যেমন হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক অন্যদিকে কিছু না করেও দেড় দশকে এমপির স্ত্রী নিয়তি রানিও বনে গেছেন কোটিপতি। নির্বাচনী হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেলেও তাদের সন্তানদের উন্নতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হলেও ব্যক্তিগত উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও এমপি হতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন নানা অপরাধে অভিযুক্ত এই রণজিত রায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রণজিত। তখন থেকে টানা তিনবার সংসদ সদস্য থাকায় তার ভাগ্যবদল হয়। এ সময় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রকেট গতিতে বেড়েছে। সঙ্গে তার স্ত্রী নিয়তি রানিও অর্জন করেছেন অঢেল সম্পদ। এমপি হওয়ার পর থেকে ভারতে বসবাস করতে বেশ পছন্দ করতেন এই দম্পতি।

পুলিশের গোপন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এক কোটি টাকা দামের একটি পাজেরো জিপ, দুই ছেলের ৬০ লাখ টাকা মূল্যের দুটি প্রাইভেটকার, স্ত্রীর ৩০ লাখ টাকা মূল্যের প্রাইভেটকার ও ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭টি কাভার্ডভ্যান রয়েছে। এ ছাড়াও কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন রণজিৎ রায় ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে যশোরের জেস টাওয়ারে জনতা ব্যাংকের শাখায় একটি লকারে রক্ষিত দুশ ভরি স্বর্ণের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন রণজিৎ রায়। ওই সময় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের মালিকানা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

আরেকটি সূত্র জানায়, রণজিত কুমার ঢাকার মোহাম্মাপুর, গাবতলী, মুন্সিগঞ্জ, উত্তরা, বাড্ডা ও মিরপুরে একাধিক বাড়ি ও ফ্লাট রয়েছে। যেটা তার বড় ছেলে রাজীব রায় দেখভাল করেন। তবে এই দম্পতির অধিকাংশ সম্পদ নামে-বেনামে রয়েছে। এরমধ্যে কিছু সম্পদ তার দুই পুত্রবধুর নামেও আছে।

জানা যায়, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এমপি রণজিত কুমার রায়ের যশোর শহরের রেল রোডে একটি পাঁচতলা ও একটি তিনতলা বাড়ি রয়েছে। শহরের লোহাপট্টিতে একটি বাড়ি, নিউমার্কেটে দুটি ফ্ল্যাট, বাঘারপাড়ায় একটি দুইতলা বাড়ি, খাজুরায় একটি চারতলা বাড়ি, ঢাকার মিরপুরে দারুস সালাম রোডে দুটি ফ্ল্যাট, দুই ছেলের নামে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত ও সল্টলেকে দুটি বাড়ি আছে।
 

আরবি/এস

Link copied!