ঢাকা বুধবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৪

এসপি মিজানের ৪০০ কোটি টাকার মামলা ডিফফ্রিজেই

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম

এসপি মিজানের ৪০০ কোটি  টাকার মামলা ডিফফ্রিজেই

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ঘুষ, দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন, পুলিশ সদস্যদের দিয়ে নিজ বাড়ির রাজমিস্ত্রির কাজ করানো ও ভেজাল সারের ব্যবসার মতো গুরুতর অভিযোগ খোদ একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ৪০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করলেও গত ৬ বছর ধরে তদন্ত কার্যক্রম ডিপফ্রিজে। 

পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালন করা মিজানুর রহমান রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় দায়িত্ব পালন করেছেন। যদিও উচ্চ আদালতের বরাত দিয়ে তিনি নিজেকে অতিরিক্ত আইজিপি দাবি করতেন। বারবার রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টানো মিজান এখনো করে যাচ্ছেন ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতি। 

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি বেনজীরের ক্ষমতায় চাকরি জীবনে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন তিনি। গত ২২ সেপ্টেম্বরে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার। হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করা এসপি মিজানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় খোদ পুলিশ কর্মকর্তারা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। 

বাবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দিয়ে ১৯৯৮ সালে ১৭তম বিসিএস (পুলিশ) যোগ দেন। ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এসপি মিজান সারাদেশে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরাসরি হত্যাযজ্ঞে জড়িত মিজান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ছত্রছায়ায় চাকরি জীবনে নানান অপকর্ম করেছেন, গড়েছেন বিপুল সম্পদ। 

শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বেনজীর আহমেদের নামে ছড়ি ঘুরিয়েছেন পুরো পুলিশ বাহিনীতে। বর্তমানে বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া এসপি মিজান চাকরি জীবনে অর্জিত অবৈধ সম্পদ দেখভালে নিয়োজিত। দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং জমি-বাড়ি নিয়ন্ত্রণ করছেন ‘মিজান স্কোয়াড’-এর মাধ্যমে। প্রতিনিয়ত ক্ষমতার অপব্যবহার করে আদালতের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে পদোন্নতি বাগিয়ে ডিআইজি হন। 

ঢাকা-গোপালগঞ্জ বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে একাধিক বাড়ি-জমি রয়েছে। অনেক জায়গায় বেনজীর আহমেদের সঙ্গে যৌথভাবেও সম্পদ গড়েছেন। মিরপুর মাজার রোডে স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫ তলা বাড়ি। নিজ নামে উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরে ৭ তলা বাড়ি। এই বাড়ির নিচতলায় মিজান-সালমা জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা গড়ে তুলেছেন। 

পূর্বাচলের ৩০০ ফিটে সাবেক আইজিপি বেনজীরের বাড়ির পাশে পুলিশ হাউজিংয়ে ১ ও ২-এ রয়েছে ১০ ও ৩ কাঠার প্লট। তেজগাঁও বিজয় স্মরণির একটি টাওয়ারে রয়েছে ৬ কোটির টাকার ৩টি ফ্ল্যাট। ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের জগন্নাথপুরে বিশাল বাংলোবাড়ি ও সার তৈরির কারখানা। 

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতি বাজারে ছেলের নামে মাসরুর মিজান প্যালেস নামে একটি বহুতল ভবন (এসপি মার্কেট নামে পরিচিত এবং মিলিনিয়াম ট্রেড সেন্টার। এখানেই রয়েছে সালমা ওয়াটার কর্নার ও সালমা সরোবর নামের দুটি স্থাপনা। 

ডুমুরিয়া ইউনিয়নের লেবুতলা ব্রিজের পাশে ১৫৬ শতাংশ জমির ওপর এম এম মাসরুর মিজান এগ্রো প্রোডাক্ট নামের রাইস মিল। পাশেই আরেকটি সার কারখানা। এসপি মিজানের গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে স্নেহালজ নামে দুইতলা বাড়ি। এলাকায় গড়ে তুলেছেন মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানা। গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়কের পাশে রয়েছে বেনজীর আহমেদের তিন মেয়ে ও মিজানের সন্তানদের নামে তিন একর জমি।
বিতর্কিত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী সালমা আক্তার ওরফে নীপা মিজানের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকলেও অদৃশ্য ক্ষমতাবলে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের আমলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া য়নি। 

যদিও তাদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ ও অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২-এ আলাদাভাবে দুটি মামলা করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও মডেল থানায় মামলা দুটি করেন। 

এসপি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ভেজাল সারের কারখানার ব্যবসা, জমি দখল করে পদস্থ কর্মকর্তাদের নামে সাইনবোর্ড টাঙানো, বাড়ি বানানোর সময় পুলিশ সদস্যদের রাজমিস্ত্রির জোগালি হিসেবে ব্যবহার, প্রভাবশালী পরিবারের দোহাই দিয়ে দুদকের তদন্ত থেকে অব্যাহতি, নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন, কনস্টেবল রিলিজে উৎকোচ গ্রহণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সদস্যদের দিয়ে নিজবাড়িতে শ্রমিকের কাজসহ গৃহস্থলির কাজও করাতেন। কোনো পুলিশ সদস্য তার ব্যক্তিগত কাজ না করলে তাকে সাসপেন্ড করে আবার সাসপেন্ড তুলতে লাখ টাকা নিতেন। 

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে নিজ ফোর্সদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সরকারি টিএ বিল থেকে নিতেন ৩০-৩৫ শতাংশ টাকা। বিভিন্ন পুলিশ লাইনে সার কারখানার গোডাউন বানাতেন। এসব গোডাউনে টিসিবির পণ্য বস্তা পাল্টিয়ে বেশি দামে কালোবাজারে বিক্রি করে দিতেন। 

সরকারি তেল চুরির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এসপি মিজান। তার এসব অপরাধ সাম্রাজ্য সামলাত ‘মিজান স্কোয়াড’। কেউ কথা না শুনলে দেওয়া হতো হত্যার হুমকি। বর্তমানে মিজান বাধ্যতামূলক অবসরে থাকলেও তেজগাঁওয়ের বাসায় পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বে রেখেছেন। 

দীর্ঘ সময় নিয়ে তদন্ত, বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন, একবার দায়মুক্তি, পুনরায় তদন্তসহ নানাবিধ ঘটনা ঘটছে এসপি মিজানুর রহমানকে কেন্দ্র করে। বেআইনি নানা কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতির অভিযোগে একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ ওঠায় ২০১০ সালে বাগেরহাটের এসপির পদ থেকে তাকে অপসারণ করা হয়েছিল। 

এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চট্টগ্রামের দুই সার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এই পুলিশ কর্মকর্তা স্ত্রী ও কন্যাদের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই সার কারখানাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের কারখানা গড়েছেন। তদন্তের মাধ্যমে এই দম্পতির আরও অবৈধ সম্পদের খোঁজ মেলে। 

২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকের খবরে জানানো হয়, রাজধানীর বাইরে হেমায়েতপুরে ৮৪ শতাংশ জমিতে বিলাসবহুল বাগানবাড়ি নির্মাণ কাজে তিনি তার ইউনিটের ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেওয়ার কাজেও ব্যবহার করেছেন সরকারি গাড়ি। উপ-পরিদর্শক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের খাটানোর অভিযোগ তোলা হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে। 

এছাড়া এসপি মিজানের মালিকানায় টিএসপি বা ট্রিপল সুপার ফসফেট সার নকল করার চারটি বড় কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়। এর মধ্যে দুটি কারখানা ছিল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতিতে আর অন্য দুটি ঢাকার অদূরে হেমায়েতপুরে। ওই চারটি কারখানায় প্রতিদিন এক হাজার টন নকল টিএসপি সার তৈরি করা হতো। 

মিজানের বিতর্কিত কার্যক্রমের এখানেই শেষ নয়। তার উল্টোপাল্টা আচরণে আগেও বহুবার বিব্রত ও অপ্রস্তুত হয়েছে পুলিশ বিভাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০১২ সাল থেকে মিজানের বিরুদ্ধে দুদকে অনুসন্ধান হলেও সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকার পরও তাকে দায়মুক্তি দিয়েছিল সংস্থাটি। অভিযোগ রয়েছে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাড়ি হওয়ায় ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এমন পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটান তিনি। 

ক্ষমতার অপব্যবহারে কাবু করেন দুদকের মতো সংস্থাকে। চাকরি জীবনে একাধিকবার মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তিনি পার পেয়ে গেছেন বারবার। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি নিজের পরিচয় দিতেন দলটির প্রভাবশালী নেতা আমানউল্লাহ আমানের ভগ্নিপতি হিসেবে। বাস্তবে তিনি আমানউল্লাহ আমানের চাচাতো বোনকে বিয়ে করেছেন। 

সর্বশেষ মিজানুর রহমান পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তবে দাপ্তরিক কাজে নিজের পরিচয়দিতে গিয়ে ব্রাকেটে লিখতেন ‘উচ্চ আদালতের রায়ে ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত’। এসপি পদে থেকে ডিআইজি র‌্যাংক ব্যাজ পরা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে উচ্চ আদালতের এক আদেশের রেফারেন্স টানতেন মিজানুর রহমান। যদিও সেই রায়ে বলা আছে ‘পদোন্নতিতে বাধা নেই’। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তের পরোয়া করেননি তিনি। ইতোমধ্যে অদৃশ্য ইশারায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আসা অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত এড়িয়েছেন তিনি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে অপকর্মের নানা অভিযোগ। 

দুদক সূত্র জানায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন এসপি মিজান। এসব সম্পদের বেশির ভাগই রেখেছেন স্ত্রী সালমা আক্তারের নামে। সালমা আক্তার একজন গৃহিণী এবং তার কোনো ব্যবসা-বাণিজ্যও নেই।

অনুসন্ধানের সময় তাদের নামে থাকা সম্পদের বৈধ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এসব সম্পদ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। মিজান ও তার স্ত্রীর নামে মোট ৩ কোটি ৫০ লাখ ২০ হাজার ৯৯৮ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মিজানের নামে ১ কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ১৮২ টাকা ও তার স্ত্রীর নামে ২ কোটি ৩২ লাখ ৫৯ হাজার ৮১৬ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। 

২০১৮ সালের মে মাসে এসপি মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থে সাভারের হেমায়েতপুরে আলীপুর ব্রিজসংলগ্ন ৮৪ শতাংশ জমির ওপর ও ঢাকার মিরপুরের মাজার রোডের আলমাস টাওয়ারের পাশে বাড়ি নির্মাণের তথ্য মেলে। এগুলোর নির্মাণকাজে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাব-ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন পদের ৬০ জন পুলিশকে শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো হয়। 

এছাড়া অবৈধ ব্যবসা হিসেবে নকল টিএসপি সারকে আসল বলে বিক্রির অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়। এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের সময় নামে-বেনামে তার আরও সম্পদ পাওয়া যায়। এর আগে ২০১৫ সালের প্রথমদিকে দুদকে মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অন্য একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ওই দুর্নীতির আমলযোগ্য তথ্য-প্রমাণও মিলেছিল। অজ্ঞাত কারণে অভিযোগটি নথিভুক্ত করে এসপি মিজানকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তখন এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছিল। 

অবসরে যাওয়া দুদক উপ-পরিচালক হামিদুল হাসান ২০১৫ সালে কয়েক মাস অনুসন্ধান চালিয়ে মিজানুর ও তার স্ত্রী নীপা মিজানের নামে ৯ কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার ৭০২ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য পেয়েছিলেন। এর মধ্যে মিজানের নামে ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার ২০২ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ পাওয়া গিয়েছিল। প্রায় তিন বছর পর বর্তমান কমিশন নতুন অভিযোগ অনুসন্ধান করে এসপি মিজান ও তার স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদের তথ্য-প্রমাণ পায়। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!