ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
বেবিচকে তুঘলকী কাণ্ড

অর্ধশত নিরাপত্তা অপারেটরকে একযোগে পদোন্নতি

দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৪, ১১:২২ এএম

অর্ধশত নিরাপত্তা অপারেটরকে একযোগে পদোন্নতি

ফাইল ছবি

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ৫৪ নিরাপত্তা অপারেটরকে একযোগে পদোন্নতি দিয়ে নিরাপত্তা অধিক্ষক করা হয়েছে। ১৪ অক্টোবর এ-সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন সহকারী পরিচালক (প্রশাসন)। এককালের আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর পিএস তিরান হোসেন। তার ব্যাপারে বেবিচক উদাসীন। তিনি  এখনো বেবিচক প্রশাসনে বহাল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদস্য নিরাপত্তার নেক নজরে থাকায় এই ৫৪ নিরাপত্তাকর্মীর পদোন্নতি হলো। এরা কেউ কেউ পিআরএলে চলে যাচ্ছেন, কারও কারও আজকেই ডিউটি শেষ। শুধু এটুকু সান্ত্বনা, শেষ সময়ে তারা পদোন্নতি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন। তবুও ভালো ডিডি সেলিনার মতো ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠানে পদোন্নতির খবর এলো না!

প্রকৌশল বিভাগে পদোন্নতি বন্ধ

বেবিচকের প্রকৌশল বিভাগে পদোন্নতি বন্ধ। কোনো কোনো প্রকৌশলী ১০-১২ ধরে একই পদে কর্মরত, এদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। এদের মধ্যে কয়েকজনের ডিপিসি প্রক্রিয়া চলছে। প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাহী প্রকৌশলী মিহির চাঁদ দে-কে পদোন্নতি না দিয়ে প্রকৌশল বিভাগে কাউকে পদোন্নতিও দেওয়া হবে না। কিন্তু মিহির দে দুদকের মামলার আসামি। তাকে পদোন্নতি দেওয়া হলে বেবিচক আইনি প্রক্রিয়ায় পড়ে যাবে। প্রশ্ন উঠেছে, তার পদোন্নতি বন্ধ মানে সবার পদোন্নতি বন্ধ?
এদিকে ৬ দানবকে এখনো ডিডি পদে কনফার্ম করা হয়নি। আওয়ামী দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে। এরা এখন ভোল পাল্টে বিএনপিমনা হয়ে গেছেন।

এক পোস্টিংয়ে সেলিমের দেড়যুগ

অফিসার সেলিম এক পোস্টিংয়ে প্রায় দেড় যুগ ধরে শাহজালালে কর্মরত। তাকে বদলি করা হচ্ছে না। তার খুঁটির জোর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাকে আবার সৌদি মসজিদের ক্যাশিয়ার করা হয়েছে। মসজিদে দানবাক্স ফেলে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ওদিকে ট্রলিম্যান ও ভিআইপি লাউঞ্জ এলআরদের ঘিরে রোস্টার বাণিজ্য চলছে বেবিচকে। এই এলআররা ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে সোনা পাচারে সহযোগিতা করে থাকেন বলে গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পেরেছে। তারা এখন তা খতিয়ে দেখছে। এই এলআররা আবার মানব পাচারেও জড়িয়ে পড়ছে বলে জানা যায়। শাহিন নামের এক এলআরের সাথে সেলিমের সখ্য রয়েছে বলে শোনা যায়। পরিচালক (মানবসম্পদ) শাহজালালের ডিডি (প্রশাসন) তখন ইকরামউল্লাহ সেলিমকে প্রশ্রয় দিতেন- এমন কথাও শোনা যায়। ইমাম আখতারুজ্জামান পিআরএলএ গেলেও তাকে ও তার ছেলেকে দিয়ে গত রমজানে ইমামতি করানো হতো। এই ধারাবাহিকতা নাকি এখনো বিদ্যমান। প্রশ্ন উঠেছে, বেবিচকের চেইনম্যান আখতারুজ্জামানকে কে বা কারা সৌদি মসজিদের ইমামের দায়িত্ব দিলেন?

এ ব্যাপারে তৎকালীন ডিডি (প্রশাসন) বর্তমানে পরিচালক (মানবসম্পদ) ইকরাম উল্লাহ বলেছিলেন, ইমাম আখতারুজ্জামান চলে গেছেন। তবে সেলিমের মসজিদ ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন।

সেই তৌহিদুল ইসলাম আবার শাহজালালে

শাহজালাল বিমানবন্দরের এক সময়ের দাপুটে নির্বাহী পরিচালক এখন বিমান বাহিনী সদর দপ্তরে। তিনি আবার শাহজালাল বিমানবন্দরে নজর দিচ্ছেন বলে শোনা যায়। তার সময়ে প্রায় দুই যুগ ধরে পরিচালকের দপ্তরে কর্মরত পিয়ন মতিকে (তার আপন ভাই গার্ড রেজাউল স্বর্ণ পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়ে) দোকান বরাদ্দ দিয়ে গেছেন বলে শাহজালালে চাউর আছে। সাংবাদিক কোটায় হোটেল-রেস্টুরেন্ট বরাদ্দ দিয়ে গেছেন। কনক রেস্টুরেন্টটি সাংবাদিক পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে নবায়নের পর নবায়ন করে চালাচ্ছেন এক সাংবাদিক। ওই সাংবাদিককে বেবিচক সদর দপ্তরে আরেকটি অভিজাত রেস্টুরেন্ট বরাদ্দ দিয়েছে বেবিচক। এ হোটেলটির ডেকোরেশন খরচ প্রায় কোটি টাকা। মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে ৫০ হাজার টাকার মতো। এটি মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়। তাকে আবার থার্ড টার্মিনালে আরেকটি রেস্টুরেন্ট বরাদ্দ দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে শোনা যায়। ওই হোটেলটির সাথে সাবেক এক বেবিচক চেয়ারম্যানের নিকটজন জড়িত বলেও বেবিচকে গুঞ্জন রয়েছে।

আরেক সাংবাদিক শাহজালালে দুটি দোকানে ব্যবসা করছেন। ওই সাংবাদিককে ১৭ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিয়েছেন এক ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী। ওই প্রকৌশলী এখন প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে আছেন। পত্রপত্রিকায় বেবিচকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন বলেও শোনা যায়। তাকে ছায়া হিসেবে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এক কর্তাব্যক্তি। আইনি প্রক্রিয়ায় বর্তমান রুটিন প্রধান প্রকৌশলীকে বেবিচক দায়িত্ব দিলেও তা নিয়ে একাধিক পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ায় বেবিচক চিন্তিত। যদিও বেবিচক প্রধান বলেছেন, নতুন খবর পাবেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবছি।

আরবি/জেআই

Link copied!