ঢাকা রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪

৬ বছর মেয়াদে পরিচালক ব্যাংক ও বিমায়

শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৪, ০১:০৪ এএম

৬ বছর মেয়াদে পরিচালক ব্যাংক ও বিমায়

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ব্যাংকে শুদ্ধাচার ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার ‘ইসলামী ব্যাংক কোম্পানি আইন-২০২৪ এর খসড়া’ প্রস্তুত করে অনুমোদন দিয়েছেন গভর্নর। ইসলামী ধারার ১০টি বাংকের ব্যাংকিং বিস্তৃতি, সুফল ও সমৃদ্ধ করতে ইসলামী ব্যাংকিং আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। ১২ বছর নয়; অনুমোদন পাওয়া খসড়া আইনে একজন পরিচালক ৬ বছর মেয়াদে ব্যাংক ও বিমার পরিচালক নির্বাচিত হবেন।

যেখানে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাংক পরিচালকের সময়সীমা আজীবন করতে গত বছরে জাতীয় সংসদে প্রস্তাব করেছিল। পরে বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ওয়াকআউট করায় ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ ৯ থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করে। সেই নীতিমালা বাতিল করে নতুন সরকার ৬ বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে।

মেয়াদ শেষে ৩ বছর বাধ্যতামূলকভাবে অবসরে থাকতে হবে। একই সঙ্গে পরিচালক হিসেবে দুটি প্রতিষ্ঠানেও যুক্ত হতে পারবেন না তিনি। ইসলামী ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া অনুমোদনের ৩৮ পৃষ্ঠার একটি ফাইল এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখান থেকেই তথ্য তুলে ধরা হয়।

ব্যাংক কোম্পানির আইনের সাংঘর্ষিক বা আমানতকারীর স্বার্থবিরুদ্ধ আচরণ হলে কোনো কারণ ছাড়াই কোম্পানির পর্যদ বাতিল করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক লুট করে অর্থ পাচার বা ব্যাংকে শুদ্ধাচার ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার ইসলামী ব্যাংক কোম্পানি আইন-২০২৪ এর খসড়া প্রস্তুত করেছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাংক পরিচালক পদের মেয়াদ ৬ বছর থেকে ৯ বছর করেছিল। পাশাপাশি একই পরিবার থেকে দুজনের পরিবর্তে চারজনকে পরিচালক করার বিধান করে। অর্থাৎ ২০১৮ সালে পরিচালক হিসেবে ব্যাংকে যারা বসেন, তাদের ২০৩০ সাল পর্যন্ত পরিচালক পদে থাকতে কোনো বাধা ছিল না। সেই অনিয়ম তুলে দিয়ে ইতোমধ্যে অধিকাংশ ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পরে একক কোনো পরিবার থেকে দুজনের অধিক পরিচালক পদে নিয়োগ হবেন না। তবে শর্ত, বিদেশি শেয়ারহোল্ডার কর্তৃক শেয়ার ধারণের বিপরীতে পরিচালকের সংখ্যা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করবে। ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা নির্বাহী প্রধান হতে ন্যূনতম ১০ বছরের ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একইসঙ্গে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে দণ্ডিত নয় এবং অন্য আইনের সব শর্ত পরিপালন করতে হবে তাকে।

নতুন আইন সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, সাধারণ মানুষের বিনিয়োগকে এই আইন নিরাপত্তা দেবে। কেননা ব্যাংকগুলো চলে আমানতকারীদের টাকায়। আমানতকারীদের স্বার্থ না থাকলে ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়ে, হয়েছেও তাই। আইনের নতুন ধারাগুলো বিনিয়োগকারী ও শুদ্ধাচার ফেরাতে সহায়ক হবে।

বিভিন্ন দেশের ইসলামী ব্যাংকের বিদ্যমান আইন পর্যালোচনা করে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইসলামী ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়ার অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতোমধ্যে কমিটি ৪টি সভা শেষে ৯ অক্টোবর গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আইনের অনুমোদন দেন। তার আগে ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (ডিভিশন-১) প্রধানকে প্রধান করে কমিটি করা হয়।

পরে দাপ্তরিক বদলি, বহাল, পদোন্নতি ইত্যাদি কারণে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এরপরে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির ভূতপূর্ব পরিচালক, মো. মেজবাহ উদ্দীন, ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের যুগ্ম পরিচালক গোলাম মোস্তফা, উপপরিচালক রেজাইল ইসলাম, সিটি ব্যাংক পিএলসির এভিপি আব্দুল্লাহ শরীফ সদস্য ও ব্যাংকিং প্রবিধি এবং নীতি বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. রবিউল করিম সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

৩৮ পৃষ্ঠার খসড়া আইনগুলো ১০টি খণ্ডে বিভক্ত। খসড়া আইনে জরিমানা অপরাধ ও দণ্ড- খসড়ায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি এই আইনের লাইসেন্সের শর্ত পরিচালন করতে ব্যর্থ হলে ১০ থেকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে। মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিলে ২০ লাখ থেকে এক কোটি টাকাও জরিমানা করা হতে পারে। কোম্পানি অবসায়ন বিষয়ে কোম্পানি আইনে যাই থাকুক ইসলামী ব্যাংক গৃহিত আমানত ফেরতে ব্যর্থ হলে সরকারে অনুমোদন সাপেক্ষে হাইকোর্ট বিভাগে আদেন করতে পারবে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে দায়ী ব্যক্তির সম্পদ অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ করাও যাবে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া অন্যকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। কোনো ব্যাংক কোম্পানি উদ্দেশ্য ছাড়া সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন নিষিদ্ধ করাসহ আরও আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৩৮ পৃষ্ঠার খসড়া নতুন আইনের মতামত আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তুন সরকার ৬ বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। মেয়াদ শেষে ৩ বছর বাধ্যতামূলকভাবে অন্যকোন ব্যাংক বা বীমা কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন না তিনি। একই সঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানের হিসেবে যুক্ত হতে পারবেন না পরিচালক।

ব্যাংক কোম্পানির আইনের সাংঘর্ষিক বা আমানতকারীর স্বার্থবিরুদ্ধ হলে কোন কারণ ছাড়াই কোম্পানির পর্যদ বাতিল করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক লুট করে অর্থ পাচার বা ব্যাংকে শুদ্ধাচার ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার ইসলামী ব্যাংক কোম্পানি আইন, ২০২৪-এর খসড়া প্রস্তুত করেছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাংক পরিচালক পদের মেয়াদ ৬ বছর থেকে ৯ বছর করেছিল। পাশাপাশি একই পরিবার থেকে দুজনের পরিবর্তে চারজনকে পরিচালক করার বিধানও করে। অর্থাৎ ২০১৮ সালে পরিচালক হিসেবে ব্যাংকে যারা বসেছেন, তাদের ২০৩০ সাল পর্যন্ত পরিচালক পদে থাকতে কোনো বাধা নেই। সেই অনিয়ম তুলে দিয়ে ইতোমধ্যে অধিকাংশ ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পরে একক কোন পরিবার থেকে দুজনের অধিক কোন পরিচালক পদে নিয়োগ হবেন না। তবে শর্ত, বিদেশি শেয়ার হোল্ডার কর্তৃক শেয়ার দারণের বিপরীতে পরিচালকের সংখ্যা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করবে। ব্যাংকের পচিালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা নির্বাহী প্রধান হতে নূন্যতম ১০ বছরের ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একইসঙ্গে দেওয়ানী ও ফৌজদারী আইনের দন্ডিত নয় এবং অন্য আইনের সকল শর্ত পরিপালন করতে হবে।

নুতন আইন সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, সাধারণ মানুষের বিনিয়োগকে এই আইন নিরাপত্তা দেবে। কেননা ব্যাংকগুলো চলে আমানতকারীদের টাকায়। আমানতকারীদের স্বার্থ না থাকলে ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়ে। হয়েছেও তাই। আইনের নতুন ধারাগুলো বিনিয়োগকারী ও শুদ্ধাচার ফেরাতে সহায়ক হবে।

বিভিন্ন দেশের ইসলামী ব্যাংকের বিদ্যামান আইন পর্যালোচনা করে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আসরামী ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া প্রস্তুত করে। ইতোমধ্যে কমিটি ৪টি সভা শেষে ৯ অক্টোবর গভর্নর আহসান এইচ মনসুর অনুমোদন দেন। তার আগে ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (ডিভিশন-১) প্রধানকে প্রধান করে কমিটি করা হয়।

পরে দাপ্তরিক বদলি, বহাল, পদোন্নতি ইত্যাদি কারণে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এরপরে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির ভূতপূর্ব পরিচালক, মো. মেজবাহ উদ্দীন, ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের যুগ্ম পরিচালক গোলাম মোস্তফা, উপপরিচালক রেজাইল ইসলাম, সিটি ব্যাংক পিএলসির এভিপি আব্দুল্রাহ শরীফ সদস্য ও ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. রবিউল করিম সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ইসলামী ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া অনুমোদনের ৩৮ পৃষ্ঠার একটি ফাইল এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ১০টি খণ্ডে বিভক্ত খসড়া আইনে জরিমানা অপরাধ ও দণ্ড -খসড়ায় বলা হয়েছে, কোন ব্যাক্তি এই আইনের লাইসেন্সের শর্ত পরিচালন করতে ব্যর্থ হলে ১০ থেকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে। মিথা ও বিভ্রান্তকর তথ্য দিলে ২০ রাখ থেকে এক কোটি টাকাও জরিমানা করা হতে পারে।

কোম্পানি অবসায়ন বিষয়ে কোম্পানি আইনে যাই থাকুক ইসলামী ব্যাংক গৃহিত আমানত ফেরতে ব্যর্থ হলে সরকারে অনুমোদন সাপেক্ষে হাইকোর্ট বিভাগে আদেন করতে পারবে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে দায়ী ব্যক্তির সম্পদ অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ করাও যাবে।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া অন্যকোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ধারণ করতে পারেব না। কোন ব্যাংক কোম্পানি উদ্দেশ্য ছাড়া সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন নিষিদ্ধ করাসহ আরো আইনে অন্তভূক্ত করা হয়েছে। ৩৮ পৃষ্ঠার খসড়া নতুন আইনের মতামত আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আরবি/জেডআর

Link copied!