ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব মাত্র ৮ বছরেই হয়ে ওঠেন পুরো জেলার নিয়ন্ত্রক। ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট পর্যন্ত জেলায় তাঁর কথার বাইরে যাওয়ার সাহস ছিল না দলীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঠিকাদারি, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য, জমি দখল, দালালি, দলীয় মনোনয়ন এবং পদ-পদবি পাওয়া না পাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।
৮ বছরের ব্যবধানে তিনি বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যের নামে-বেনামে ভোলা, ঢাকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিপ্লব গড়ে তুলেছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ। জেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা হয়ে শুধু তোফায়েল আহমেদের পালিত পুত্র হওয়ার কারণে বিপ্লব যেন টাকার কুমির হয়েছেন।
৮ বছর ধরে ‘চুপ’ থাকা মানুষগুলো এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন। বের হতে শুরু করেছে তাঁর রাজত্বের নানা অন্যায় ও অনিয়মের তথ্য। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জেলা-উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত নিজের ‘রাজত্ব’ ঠিক রাখতে প্রিয়ন্তি কনস্ট্রাকশনসহ বহুস্তর বিপণন ব্যবসার আদলে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়াও ভোলা জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতির পদ দখল করেছেন।
এ ছাড়া জেলা বাস মালিক সমিতি, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্র্রিজ, মুসলিম লাইব্রেরির পদসহ জনপ্রতিনিধি পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের বসিয়েছিলেন বিপ্লব।
কে এই বিপ্লব: ভোলার স্থানীয় লোকজন ও পারিবারিক সূত্র থেকে জানা গেছে, ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদের কোনো ছেলে না থাকায় তার বড় ভাই আলী আশরাফের ছেলে মইনুল হোসেন বিপ্লবকে ছোটবেলা থেকে ছেলে হিসেবেই লালন-পালন করেছিলেন। এবং বিপ্লবকে ছেলে হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ।
বিপ্লবও তোফায়েল আহমেদকে আব্বু বলে ডাকেন। তোফায়েল আহমেদ বিপ্লবকে পড়ালেখার জন্য অস্ট্রেলিয়া পাঠান। সেখানেই দীর্ঘ সময় পড়ালেখা শেষে ২০১৬ সালের দিকে এলাকায় আসেন বিপ্লব। এসেই ভোলায় আওয়ামী লীগের বহু ত্যাগী নেতাকে টপকিয়ে হুট করেই জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ দখল করে নেন। এরপর হন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সঙ্গে সঙ্গে ভাগ্য খুলে যায় ‘যুবরাজ’খ্যাত বিপ্লবের। ২০২২ সালের ১১ জুন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ ছিনিয়ে নেওয়ার পর বিপ্লবকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। দলের জেলা সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়ায় ও আব্বু এমপি-মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে দুর্বার গতিতে এগিয়ে গেছেন বিপ্লব। দলের নেতাদের অভিযোগ, বিরোধী দলের মতো নিজ দলের নেতাকর্মীরাও তার কাছে জিম্মি ছিলেন। বিপ্লবের অবৈধ উপায়ে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়া এবং ভোলায় আওয়ামী লীগকে দ্বিধাবিভক্ত করা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেননি তোফায়েল আহমেদের স্ত্রী আনোয়ারা তোফায়েল ও তার একমাত্র মেয়ে ডা. তাসলিমা আহমেদ মুন্নী, ভাগ্নে ভোলার সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামানসহ ওই পরিবারের বড় একটি অংশ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের মধ্যেও দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে পলাতক বিপ্লব, তাঁর পরিবারের সদস্য ও অনুসারীরা। তিনি দেশ ছেড়েছেন বলে স্থানীয়ভাবে শোনা যায়। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি। ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ভোলা ও ঢাকায় মামলাও করা হয়েছে একাধিক। গত ২১ অক্টোবর বিপ্লব ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান বিন্তীর বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন ভোলার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত।
মনিরের পতন বিপ্লবের উত্থান: ভোলা পৌরসভার বাসিন্দারা জানান, ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি তোফায়েল আহমেদের ভাগ্নে মনিরুজ্জামান মনির মামার হাত ধরেই এলাকায় রাজনীতি করেছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। ওই সময়ে তোফায়েল আহমেদের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে মনির ভোলা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনবার। ছিলেন জেলা যুবলীগের সভাপতিও। আশা ছিল তোফায়েল আহমেদের পরে ভোলা সদর আসনে নির্বাচন করবেন মনির। সেই লক্ষ্যে দলের নেতাকর্মীদের সংঘটিতও করেছিলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু তার সেই আশা অনেকটা নিরাশায় পরিণত করেছেন তোফায়েল আহমেদের পালিত ছেলে মইনুল হোসেন বিপ্লব। তিনি যেন অনেকটা উড়ে এসে জুড়ে বসে একে একে জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে নেন। দলের কোনো সদস্যপদ না থাকলেও তোফায়েল আহমেদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ২০১৬ সালে এক লাফে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পেয়ে যান বিপ্লব।
একই প্রভাবের কারণে বিপ্লব ২০২২ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এখনো সেই পদেই আছেন। পাশাপাশি মামার ক্ষমতায় রাজনীতিতে উত্থান হওয়া মনিরকে করেন কোনঠাসা।
একপর্যায়ে যেন অনেকটা পতন ঘটে মনিরের। উত্থান হয় তোফায়েল আহমেদের পালিত ছেলে মইনুল হোসেন বিপ্লবের। এ নিয়ে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যেও দেখা দেয় চরম বিরোধ। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন।
জমি দখল, পাওয়ার প্লান্ট ও প্রাণ কোম্পানি থেকে হাতিয়ে নেন হাজারো কোটি টাকা: বিপ্লব ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শান্তিরহাট এলাকায় চায়না প্রজেক্টের নামে শতাধিক একর জমি জবর দখল করে, বোরহানউদ্দিনে নির্মিত পাওয়ার প্লান্ট ও প্রাণ কোম্পানি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে বিপ্লবের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, বিপ্লব তোফায়েল আহমেদের ক্ষমতা দেখিয়ে সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়ন ও দৌলতখান উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩ শতাধিক অসহায় দরিদ্র পরিবারের ১২৫ একরেরও বেশি জমি দখল করে নিয়েছেন। ওই জমি প্রতি শতাংশের বাজার মূল্য ৪০ হাজার টাকা হলেও কিছু পরিবারকে শতাংশ প্রতি দেওয়া হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা করে। বিপ্লবের পক্ষে স্থানীয়ভাবে এর দায়িত্ব পালন করেন ওই এলাকার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাবেক সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ ইউনুস।
শিবপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আহমেদ বলেন, তোফায়েল আহমেদের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিপ্লব আমাদের প্রায় ১০ একর জমি জোর করে নিয়ে গেছেন। জমির মালিকরা প্রথমে জমি দিতে রাজি না হওয়ায় ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে জমি দিতে বাধ্য করেন।
খোরশেদ মেম্বার বলেন, আমাদেরকে জানানো হয় ওই জমিতে ইকো ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি নামে চায়না কোম্পানি একটি প্রজেক্ট করবে। এভাবে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার জমি মাত্র ১২ কোটি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন বিপ্লব। আর সেই জমি চায়না কোম্পানির কাছে বহুগুণ বেশি দিয়ে বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। মানুষের চলাচলের জন্য জেলা পরিষদের রাস্তাসহ ওই জমি বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেছেন বিপ্লব। প্রতি স্কয়ার ফুট বালু ৪ টাকা দরে ভরাট করে চায়না কোম্পানির কাছ থেকে প্রতি স্কয়ার ফুট বালু বাবদ নিয়েছেন প্রায় ১৬ টাকা দরে। এ খাতে হাতিয়ে নেন শতকোটি টাকা।
তবে, জেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা বলছেন, জেলা পরিষদ থেকে ওই রাস্তা ১০ বছরের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছে। দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ৯৩ বছর বয়স্ক বৃদ্ধ ও সাবেক ইউপি সদস্য শফিউল্লাহ সিকদার বলেন, আমার ৩ একর ২১ শতাংশ জমি জবরদখল করে নিয়ে গেছেন বিপ্লব। সেই জমি বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে।এভাবে শত শত একর জমি দখল করে নেওয়ায় বহু পরিবার আজ নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, দখল করা জমি সীমানাপ্রাচীর দিয়ে রাখা হয়েছে। অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বালু দিয়ে ভরাট করা সেই জমি।
এলাকাবাসী বলেন, এখানে কোটি কোটি টাকার জমি জবরদখল করে যেন বিপ্লব ঘটিয়েছে তোফায়েল আহমেদের পালিত ছেলে মইনুল হোসেন বিপ্লব। বোরহানউদ্দিনে নির্মিত ২২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ইট, বালু, পাথর, সিমেন্ট, পেট্রলসহ যাবতীয় মালামাল সরবরাহ করে হাতিয়ে নিয়েছেন শতকোটি টাকা।
মনোনয়ন-বাণিজ্য : ভোলার স্থানীয় বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানান, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান, পৌরসভায় মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থী নির্ধারণ করে দিতেন বিপ্লব। এই মনোনয়ন দেওয়া হতো টাকার বিনিময়ে। এসব নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে দিতে হতো ১০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। ক্ষেত্রবিশেষে এই অঙ্ক কম-বেশি ছিল। ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন আব্দুল জলিল মাস্টার। তিনি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় ও দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি জলিল মাস্টারকে মনোনয়ন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে ওই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি এমদাদুল ইসলাম কবিরকে নৌকার মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছেন বিপ্লব। বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান ছিলেন নিরব হাওলাদার। তিনি ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিও। গত ইউপি নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে ব্যবসায়ী আ. রব কাজীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত: ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ভোলায় অনেককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার অভিযোগ রয়েছে বিপ্লবের বিরুদ্ধে। ফাতেমা খানম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম (চুন্নু) অভিযোগ করে বলেন, বিপ্লব ওই কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর আমাকে অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমনকি বিপ্লবের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে তাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। অবশ্য শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সম্প্রতি ওই কলেজের সেই অধ্যক্ষ পদ ফিরে পেতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছেন চাকরিচ্যুত অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম চুন্নু। তিনি আরও বলেন, চা পান করার নিমন্ত্রণ জানানোর অপরাধে আমাকে চাপ দিয়ে ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক জহুরুল ইসলামকে (পিকু) চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন।
দলকে আত্মীয়করণ: সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের ইশারায় তোফায়েল আহমেদের পালিত ছেলে মইনুল হোসেন বিপ্লব আসার পর এলাকার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বিপ্লবের হাতে। তবে আত্মীয় হওয়ায় অনেক সময় মনিরকেও তিনি সঙ্গে রাখতেন। বিপ্লবের নিয়ন্ত্রণে আসার পর তার ফুফাতো ভাই শফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য না হলেও তাকে দেওয়া হয় জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদকের পদ। একইসঙ্গে দেওয়া হয় ভোলা জেলা বাস মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক, ভোলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক, মুসলিম লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক, ফাতেমা খানম কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ। এই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নারী নির্যাতন, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ২০১৭ সাল থেকেই বিপ্লবের নেতৃত্বে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা হতো। তিনি আরও বলেন, শুধু পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্য করেই ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিপ্লব। স্থানীয় রাজনীতিতে দলীয় পদ-পদবি পাওয়া, মনোনয়ন বাণিজ্য, জমি দখল, ডিসি-এসপি, ইউএনও, থানার ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের বদলি, বিভিন্ন দপ্তরের ঠিকাদারি কাজের কমিশন-বাণিজ্য, চাকরির বাণিজ্য, গম-চাল, টিআর, কাবিখা ইত্যাদি সরকারি প্রকল্প থেকে কমিশন বাণিজ্যসহ এমন কোনো কাজ নেই যে বিপ্লব করেনি। সে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ৮ বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
এ বিষয়ে ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক গতকাল মঙ্গলবার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লবসহ যেসব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তাদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে। তবে, অনেক আসামিরাই এখন আত্মগোপনে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :