ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

দশ প্রকৌশলী খালাস, ফেঁসে গেলেন চারজন

মাইনুল হক ভূঁইয়া ও দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০১:১৬ এএম

দশ প্রকৌশলী খালাস, ফেঁসে গেলেন চারজন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ১০ প্রকৌশলীকে অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

ফেঁসে গেলেন চার প্রকৌশলী। তারা হলেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ই এম জাকারিয়া, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, সিভিল ডিভিশনের সহকারী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম। অপরজনের নাম পাওয়া যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ দুদক অনুসন্ধান করছে। শিগগিরই দুদক তাদের তলব করবে বলে জানা গেছে।

সিভিল ডিভিশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ই এম মো. জাকারিয়া হোসেনের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগ অনুসন্ধানে থাকায় বেবিচক আইনে এ দুই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর ডিপিসি হচ্ছে না। ফলে এই দুজনের প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন আপাতত ভেস্তে যাচ্ছে। তবে দুদক যদি ক্লিনটাচ সনদ দেয়, তাহলে তাদের ডিপিসি হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, আওয়ামী দোসর ও প্রতারণার মামলায় ২৩ দিন হাজতবাস, শিক্ষা সনদ জালিয়াতির পরও দুদক থেকে খালাস পেলেন সহকারী প্রকৌশলী ই এম মাহমুদ হাসান সেলিম এবং তার আপন ভাই বেবিচকে ডবল দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী ই এম এনামুল হক।

সিলেটের কানাইঘাটে তার বিশাল মৎস্য খামার, অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট, ঢাকায় ফ্ল্যাট বা প্লট থাকার কথা শোনা গেলেও দুদকের তদন্ত থেকে তারা পার পেয়ে গেলেন। এই আপন দুই ভাই একই স্টেশনে দীর্ঘদিন চাকরি করলেও বরাবর বেবিচকের চোখ এড়িয়ে যায়। তাদের বদলির বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে তালিকা দেওয়া হলেও প্রশাসনে গিয়ে স্থবির হয়ে যায়। প্রকৌশলী সেলিম ও তার স্ত্রী সরাসরি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও বেবিচক থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বেবিচক এদের আগলে রেখেছে।

দুদকের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া আরেক সহকারী প্রকৌশলী ই এম শাহিনুর আলমকে বারবার বদলি করা হলেও বছরের পর বছর ইএম-১-এর অধীন শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত। তার পদবিও প্রশ্নবিদ্ধ। তার পদবি কি সহকারী প্রকৌশলী ‘ইএম’, না সহকারী প্রকৌশলী ‘ইলেকট্রনিকস’ এই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে। তাকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় উপসহকারী প্রকৌশলী ইলেকট্রনিকস পদে। অথচ এ পদই নাকি বেবিচক কাঠামোতে নেই। 

সফিকুল, আয়েশা, আছালত তারা প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত। প্রকল্প শেষ হলেও তাদের চাকরি শেষ হয়নি।

তাদের  রাজস্ব খাতে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু ভূতাপেক্ষ তারিখ থেকে, অর্থাৎ সেই ১৯৯৬ সাল থেকে তাদের চাকরিকাল গণনা করে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। কিন্ত তারা রাজস্ব খাতে এসেছে ২০১১ সালে।

উল্লেখ্য, গত ১৯-৯-২০২৪ তারিখে বেবিচকে কর্মরত ১৪ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকে কোনো মামলা বা অভিযোগ তদন্তাধীন আছে কি না, জানতে চেয়ে বেবিচক থেকে দুদকে দাপ্তরিক চিঠি দেওয়া হয়, যার স্মারক নং-০০.০০০০.১৩.১২.০০১.১৭.৯১৮ তারিখ: ১৯-৯-২৪ ।

দুদকের ৩৬ দিন তদন্তের পর অবশেষে সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বেবিচককে এই হালনাগাদ তথ্য জানায় দুদক।

প্রকৌশলীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান। দাপ্তরিক চিঠির বিষয়বস্তুতে বলা হয়েছে, ‘দুদক কমিশন কর্তৃক তথ্য প্রদান’।

দুদকের দাপ্তরিক চিঠির স্মারক নং: ০০.০১.০০০০.১০৩.০৬.০০৪. ২৪..১৩৪০ তারিখ: ২৪-১০-২০২৪।

আরবি/জেডআর

Link copied!