শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৪, ০১:০৫ পিএম

সিকৃবির কোটি টাকার গাছ লোপাট

সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৪, ০১:০৫ পিএম

সিকৃবির কোটি টাকার গাছ লোপাট

ছবি: রুপালী বাংলাদেশ

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনারের পেছনে ছিল নানান জাতের গাছ। উঁচু টিলাকে সজীব ও সৌন্দর্যমণ্ডিত করে রেখেছিল মেহগনি, আকাশমণিরা। কিন্তু সেই গাছগুলো এখন আর নেই, কেটে ফেলা হয়েছে। এর জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-সিকৃবি কর্তৃপক্ষ বা পরিবেশ অধিদপ্তর; কারোরই কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিও বর্তমানে ছুটিতে। ঠিক এই সময় শহীদ মিনারের পেছনের টিলা ও তার পাশের জায়গায় থাকা গাছগুলো কেটে সাবাড় করে ফেলা হয়েছে। প্রায় ৭৯টি ছোট-বড় উন্নত জাতের গাছ কাটা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গাছগুলোর বাজারমূল্য কোটি টাকা! মূলত গাছ বিক্রি করে টাকা লোপাটের মতলবেই এগুলো কাটা হয়েছে- এমনটি দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র। আর এই কাজটি করা হয়েছে এক দিনের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রভাবশালী মহলের সম্মতিতে গাছ কেটে সাবাড় করা হয়। ‘গাছ কাটা হবে’ এটি আগে জানত না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। কাটার পরই খোঁজ-খবর নেওয়া হয়।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন সিকৃবির প্রক্টর প্রফেসর জসিম উদ্দিন। বলেন, গাছ কাটার কথা শোনার পর এর কারণ জানতে চাইলে যারা গাছ কেটেছে তারা জানিয়েছে, সেখানে ঝোপঝাড় বেড়ে গিয়েছিল। এগুলো পরিষ্কার করে নতুন ঔষধি ও ফলদ গাছ লাগানোর পরিকল্পনায় কাটা হয়েছে। সেখানে মূল্যবান কোনো গাছ কাটা হয়নি। সবই আগাছা জাতীয়। গাছ কাটার আগে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে একটি সূত্র দাবি করেছে, নতুন ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর কিছু সুযোগসন্ধানী শিক্ষক-কর্মকর্তা নানা উপায়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তপ্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন। তারাই ভিসিকে বেকায়দায় ফেলতে তিনি ছুটিতে থাকা অবস্থায় ক্যাম্পাসে মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাছ কাটার অভিযোগে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়কে ২২ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছিল তৎকালীন ভিসি শহিদুল্লাহ তালুকদারের প্রশাসনকে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হল নির্মাণের জন্য ওইসব গাছ কাটা হয়। যা বিক্রি করা হয়েছিল মাত্র পাঁচ লাখ টাকা। ঠিক এ রকমই একটি পরিস্থিতিতে বর্তমান ভিসিকে ফেলার জন্য পরিকল্পিতভাবে কোনো অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাছ কেটেছেন সিকৃবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আশফাক আহমদ ও তার সহযোগী নিরাপত্তাকর্মী কবির আহমদ। তাদের পেছনে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী একটি মহল। গত মঙ্গলবার তারা লোক দিয়ে গাছ কাটান। এই গাছগুলো বিভিন্ন সময় সরকারি বনায়ন প্রকল্পের আওতায় লাগানো হয়। শহীদ মিনারের পেছনটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঢেকে দিয়েছিল গাছগুলো। টিলা ও পাশের রাস্তাকে নয়নাভিরাম করে রেখেছিল। যা ভিসির বাংলো পর্যন্ত বিস্তৃত। গাছ কেটে এরই মধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এগুলো নিলাম করা হয়নি। গাছ বিক্রির সব টাকা আশফাক, কবিরসহ তাদের সিন্ডিকেটের পকেটে গিয়ে ঢুকেছে। অবশ্য গাছ কাটার পর নতুন করে বনায়ন এবং শহীদ মিনারের পাশে ‘অনৈতিকতার আখড়া’ ভাঙার কথা বলা হচ্ছে।

প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আশফাক আহমদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, শহীদ মিনারের পাশটা আগাছায় ভরে গিয়েছিল। সেই সুযোগে পুরো জায়গাটা ‘অনৈতিকতার আখড়া’য় পরিণত হয়ে ওঠে। প্রতিদিন বহিরাগতরা এসে এখানে আড্ডা দিত। বিভিন্ন সময় এখান থেকে হেরোইনসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। এ জন্য টিলা ও তার পাশটা পরিষ্কার করে নতুন গাছ লাগানোর প্রয়োজন পড়ে। এগুলো আসলে গাছ নয়, আগাছা। আমরা আগাছা পরিষ্কার করে দিয়েছি। ভিসি এলে বৃক্ষরোপণ করা হবে। আগর, নিমসহ নানা রকম ঔষধি ও ফলদ গাছ লাগাতে ইতিমধ্যে নার্সারির সাথেও যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি জানান, ভিসির অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা হয়েছে। তাকে বেকায়দায় ফেলার জন্য গাছ কাটা হয়েছে-এ অভিযোগ সঠিক নয় জানিয়ে বলেন, তিনিই বরং গাছ কেটে এখানে ফলদ ও ঔষধি গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

সিকৃবির প্রক্টর প্রফেসর জসিম উদ্দিন বলেন, গাছগুলো পরিবেশের জন্য কাটা হয়েছে। আমাদের এখানে অনেক মূল্যবান গাছ আছে, যেগুলো চিহ্নিত করা। এগুলো কাটা হয়নি। আর যা কাটা হয়েছে তা সংখ্যায়ও কম, খুব বেশি নয়। এখানে বৃক্ষরোপণ করা হবে। এই পরিকল্পনা আছে আমাদের। বৃক্ষরোপণ হলে টিলায় যে সাময়িক প্রাকৃতিক ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ হয়ে যাবে।

আরবি/জেআই

Link copied!