আফিজুর রহমান। সাবেক সেনা কর্মকর্তা। মেজর পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। সর্বশেষ কর্মরত ছিলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থায় (ডিজিএফআই)। শেখ হাসিনা সরকারের প্রায় ১০ বছর গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যমসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর নিয়ন্ত্রইের দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের অন্যায়ভাবে তুলে নেওয়া, নির্বাচন করতে না দেীয়াসহ সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। আলোচিত-সমালোচিত এই আফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ কয়েকজন সাংবাদিক মামলা করার প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছেন। অথচ সেই আফিজুরের ঠিকানা এখন গণমাধ্যম। চাকরি থেকে অবসরের পর যোগ দিয়েছিলেন ‘দৈনিক বাংলা’য়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কিছুদিন আগে কর্মস্থল পরিবর্তন করে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) হিসেবে যোগ দিয়েছেন গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবারে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, পতিত শেখ হাসিনা সরকারে অন্তত ১০ বছর ডিজিএফআইয়ে কর্মরত থাকাকালীন জাতীয় প্রেসক্লাব, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে নগ্ন হস্তক্ষেপ করতেন আফিজুর রহমান। কে নির্বাচন করতে পারবেন, কে করতে পারবেন না, তা ঠিক করে দিতেন তিনি। তার কথার অবাধ্য হলে কখনো নিজে, আবার কখনো অন্যকে দিয়ে তুলে নিয়ে যেতেন। মানসিক নির্যাতনের দীর্ঘ সময় পর ছেড়েও দিতেন।
জানা গেছে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছিলেন সেগুনবাগিচায় একটি টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক। তাকে আফিজুর রহমান সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন না করতে নির্দেশ দেন।
আফিজুরের নির্দেশ না মানায় এই সাংবাদিককে তার কার্যালয়ের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যান এবং প্রায় আট ঘণ্টা পর ছেড়ে দেন। বিষয়টি সেই সময়ে ওই গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আফিজুর রহমান প্রিন্ট প্রকাশিত ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদের নিয়ন্ত্রণ করতেন কার্যালয়ে লোক পাঠিয়ে। কখনো কখনো আবার নিজে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে গিয়েও হুমকি দিতেন। তার এসব কর্মে এখনো অসন্তোষ ও ক্ষোভ রয়েছে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে। অভিযোগের বিষয়ে আফিজুর রহমানের বক্তব্য জানতে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি কেটে দেন।
আপনার মতামত লিখুন :