দেশের বেশির ভাগ উন্নয়ন প্রকল্পই শেষ হয় না নির্দিষ্ট সময়ে। তিন বছর মেয়াদ থাকলেও কোনো প্রকল্পে লাগে পাঁচ বছর, কোনোটায় সাত বছর, আবার কোনোটায় ১০ বছর। চারবার মেয়াদ বাড়িয়ে ১৩ বছর ধরে চলছে এমন প্রকল্পও আছে। প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে এসব প্রকল্প সঠিক সময়ে শেষ হয় না। ফলে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনা বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। অর্জিত হচ্ছে না কাক্সিক্ষত লক্ষ্য। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য বলছে, গত ছয় বছরে দুই হাজার ২৫ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
আর সবচেয়ে বেশি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে ৪২৯টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই উন্নয়ন প্রকল্পের ধীরগতির পেছনে ২৮টি কারণ খুঁজে পেয়েছে আইএমইডি।
এদিকে বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন দেরির কারণে বাংলাদেশকে কমিটমেন্ট ফি বাবদ লাখ লাখ ডলার গুনতে হচ্ছে। ঋণদাতাদের কাছ থেকে ছাড় না হওয়া অর্থের জন্য এ মাসুল দিতে হয়। এ ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার পর প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ির বেশির ভাগই সরকারি দপ্তরে জমা হয় না। প্রভাবশালীরা কৌশলে এসব গাড়ি ব্যবহার করেন। ফলে প্রকল্পের গাড়ির ব্যবহার ও জমা দেওয়ার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। প্রকল্প শেষ হওয়ার তিন মাস আগে প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ির সংখ্যা এবং অবস্থা জানিয়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) প্রতিবেদন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করে পরিপত্র জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিবহন শাখা।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরেও ওই প্রতিবেদনের অনুলিপি দিতে হবে।
আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩৭৫টি প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় এসব প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এর মধ্যে ৩৪৫টির প্রতিবেদন জারি করা হয়েছে। বাকি ৩০টির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলমান। পরিকল্পনা কমিশনের কয়েকটি প্রতিবেদন ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে না পারায় ৩৫৪টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে আইএমইডি।
একনেক সভায় ৬০টি প্রকল্পের সময় ও ব্যয় দুই-ই বাড়ানো হয়। এ ছাড়া ১৫টি প্রকল্প তিনবার মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ না হওয়ায় চতুর্থবার একনেকে উঠেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৮০টি প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে। এর মধ্যে ৩২১টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে আইএমইডি। ৫৯টি প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে একনেক সভায়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪০০টি প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে। এর মধ্যে ৩৩৭টির মেয়াদ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে আইএমইডি।
একনেক সভায় ৬৩টি প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ২৮৪টি প্রকল্পের। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মেয়াদ বাড়ানো হয় ১৫৭টি প্রকল্পের।
আইএমইডির কর্মকর্তারা জানান, কিছু প্রকল্পে সময় বাড়ানোর যৌক্তিক কারণ থাকে। অনেক দেশীয় প্রকল্প চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পায় না। তবে অনেক সময় প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ও প্রকল্প পরিচালকের অদক্ষতার কারণে বাস্তবায়নে দেরি হয়। বেশির ভাগ প্রকল্প পরিচালকেরই প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা কম। জমি অধিগ্রহণের ঝামেলা না থাকলে আর বরাদ্দ ঠিকমতো দেওয়া হলে সময় বাড়ানো ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলেও জানান তারা।
তাদের মতে, বারবার মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পগুলো বছরের পর বছর টেনে নেওয়ায় সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মমূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণও ব্যাহত হচ্ছে। জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে মোট প্রকল্পের সংখ্যা এক হাজার ২৪৬টি, যার বেশির ভাগই পুরোনো। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৪টি প্রকল্প রয়েছে, যেগুলো এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে। এ ছাড়া এক দশকের বেশি সময় ধরে চললেও শেষ হয়নি ৩৬টি প্রকল্প।
সম্প্রতি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এডিপির প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রকল্প চারবার সংশোধিত হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে, এসব প্রকল্পের সংখ্যা ৫১৮। চলমান এক হাজার ১৩৮টি প্রকল্পের গড় বয়স পাঁচ বছর দুই মাস। ছয় থেকে ১০ বছর ধরে চলছে ৩৫৭টি প্রকল্প। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ৩৬টি। এর মধ্যে ১০টি প্রকল্প চলছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে।
এদিকে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের (বিআইডিএস) এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের ৯৫ শতাংশ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয় না। এসব প্রকল্পের মেয়াদ বারবার বাড়িয়ে শেষ করতে হয়। জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে প্রায় ২৭ শতাংশ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ে। কাজের পরিধি পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ে ৪৯ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে গড়ে ব্যয় বাড়ে প্রায় ২৬ শতাংশ।
বিষয়টি জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রকল্পগুলোর বড় সমস্যা হচ্ছে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা এবং ব্যয় বাড়ানো। বারবার মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে অর্থের অপচয় হচ্ছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এ কথাটি বলে আসছিলাম। প্রত্যাশা থাকবে, সামনের দিনগুলোয় সুশাসনের সঙ্গে প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে শেষ হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রকল্প দেরি হওয়ার বড় একটি কারণ ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা। অনেক প্রকল্প সম্ভাব্য সমীক্ষা ছাড়াই নেওয়া হয়। অর্থাৎ পুরোটাই অনুমাননির্ভর। এ কারণে প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় না। প্রকল্পের খরচ বেড়ে যায়।
কমিটমেন্ট ফি বাবদ লাখ লাখ ডলার গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে : বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন দেরির কারণে বাংলাদেশকে কমিটমেন্ট ফি বাবদ লাখ লাখ ডলার গুনতে হচ্ছে। ঋণদাতাদের কাছ থেকে ছাড় না হওয়া অর্থের জন্য এ মাসুল দিতে হয়। কমিটমেন্ট ফি এমন একটি চার্জ, যা ঋণদাতার কাছ থেকে ক্রেডিট লাইন খোলা রাখতে বা ভবিষ্যতে ঋণের নিশ্চয়তা পেতে ঋণগ্রহীতাকে দিতে হয়। যেমনÑএশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ২০১১ সালে পাওয়ার সিস্টেম ইফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছিল, যা ২০১৭ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পটি চারবার মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছয় বছরের প্রকল্পটি ১৩ বছর ধরে চলছে। ফলে বাংলাদেশকে ঋণের আকারের ০.৯৪ শতাংশ বা ২.৭৩ মিলিয়ন ডলার কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে বলে সাম্প্রতিক এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে জানিয়েছে এডিবি। এ ছাড়া প্রকল্পে দেরির ফলে মুদ্রাস্ফীতি এবং বিনিময় হারের ওঠানামার মতো কারণের জন্য ঋণের খরচ ৩ শতাংশ বেড়েছে। ফলে প্রকৃত ঋণের পরিমাণ কমে ২৯১.৮৭ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে এডিবি।
এডিবির পাশাপাশি অন্য আন্তর্জাতিক ঋণদাতা গোষ্ঠীগুলোও উন্নয়ন প্রকল্পের ঋণের জন্য কমিটমেন্ট ফি আরোপ করে। এডিবি সাধারণত ০.১৮ শতাংশ থেকে ১.১৮ শতাংশ পর্যন্ত, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ০.২৫ শতাংশ থেকে ০.৫০ শতাংশ পর্যন্ত এবং বিশ্বব্যাংক সাধারণত ০.৫ শতাংশ কমিটমেন্ট ফি ধার্য করে। কমিটমেন্ট ফি মূলত ঋণের অব্যবহৃত অর্থের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হিসেবে ধার্য করা হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার পর তা প্রযোজ্য হয়। যেমন ঋণচুক্তির ৬০ থেকে ৯০ দিন পর। ঋণগ্রহীতার জন্য তহবিল সক্রিয় রাখার দায় হিসেবে ঋণদাতাগোষ্ঠী এ ফি নির্ধারণ করে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যদি প্রকল্প নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা যায়, তাহলে অতিরিক্ত কমিটমেন্ট ফি দিতে হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে প্রকল্প-বিলম্ব দীর্ঘদিনের সমস্যা, যেখানে পাঁচ বছরের প্রকল্প শেষ করতে প্রায়ই ১০ বছর লেগে যায়।
তিনি আরও বলেন, বাস্তবায়নকারী সংস্থা বা প্রকল্প পরিচালকের অদক্ষতার কারণে বৈদেশিক ঋণের অতিরিক্ত ফি দিতে হচ্ছে।
সরকারি প্রকল্পের তথ্য দিতে হবে ৩ মাস পর পর : উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার পর প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ির বেশির ভাগই সরকারি দপ্তরে জমা হয় না। প্রভাবশালীরা কৌশলে এসব গাড়ি ব্যবহার করেন। ফলে প্রকল্পের গাড়ির ব্যবহার ও জমা দেওয়ার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। প্রকল্প শেষ হওয়ার তিন মাস আগে প্রকল্পে ব্যবহৃত গাড়ির সংখ্যা এবং অবস্থা জানিয়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) প্রতিবেদন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করে পরিপত্র জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিবহন শাখা। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরেও ওই প্রতিবেদনের অনুলিপি দিতে হবে। সরকারি পরিবহন পুলে প্রকল্পের গাড়ি জমা হওয়ার পর প্রকল্পওয়ারি ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন নিয়মিত পরিকল্পনা বিভাগের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পেশ করা হবে বলে পরিপত্রে জানানো হয়েছে। প্রকল্পের গাড়ি কোথায় যায়, তার হিসাব বের করা হবে বলে সম্প্রতি একনেক সভায় জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি এক কর্মকর্তা তিনটা গাড়ি ব্যবহার করেন। নিজের গাড়ি টেকে বেশিদিন, কিন্তু সরকারি গাড়ি দ্রুত নষ্ট ও অপচয় হয়। সারা দেশে কত গাড়ি আছে, তার একটা হিসাব করব। শিগগিরই আমরা তথ্য জোগাড় করব। কত গাড়ি কীভাবে ব্যবহার হয়, কারা ব্যবহার করছে, সব হিসাব হবে।
কোনো গাড়ি নষ্ট হলে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।’ পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, প্রকল্প শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে প্রকল্প পরিচালককে প্রকল্পের শ্রেণিভিত্তিক যানবাহনের সংখ্যা, অবস্থান এবং গাড়ি সচল ও অচল অবস্থা আইএমইডি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে তার অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে। এসব তথ্য আইএমইডি কর্তৃক প্রবর্তিত ই-পিএমআইএস সফটওয়্যারে এন্ট্রি করতে হবে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, আগের মতোই প্রকল্প শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে প্রকল্পের সচল যানবাহন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় পরিবহন পুলে জমা দিতে হবে। গাড়ি জমা দিয়ে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর থেকে প্রতিবেদন নেওয়ার পর আইএমইডি থেকে প্রকল্প সমাপ্তি প্রতিবেদন নিতে হবে।
প্রকল্প শেষের সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে মন্ত্রণালয় তার অধীন উন্নয়ন প্রকল্পের অচল যানবাহন বা চলমান প্রকল্পের অন্য ফেজ বা অন্য প্রকল্প থেকে স্থানান্তরিত যানবাহন অচল হলে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী তা অকেজো ঘোষণা করে বিক্রি করবে।
গাড়ি বিক্রির অর্থ সরকারের সংশ্লিষ্ট খাতে জমা দিয়ে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইএমইডি ও সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরকে অবহিত করতে হবে। শেষ হওয়া উন্নয়ন প্রকল্পের যানবাহন নতুন প্রকল্পে ব্যবহারের প্রয়োজন হলে প্রকল্প শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে শেষ হওয়া প্রকল্পের প্রয়োজনীয়সংখ্যক যানবাহন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে নতুন প্রকল্পে ব্যবহার করা যাবে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা থেকে গাড়ি কেনার জন্য যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়, সেসব প্রকল্পের যানবাহন সরকারি পরিবহন পুলে জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে এসব সরকারি দপ্তরকে যানবাহনগুলো তাদের টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে হবে এবং এ-সংক্রান্ত তথ্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইএমইডি ও সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে প্রকল্প শেষের পরেও প্রকল্পের যানবাহন ব্যবহার করতে হলে প্রকল্প শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে প্রকল্প পরিচালককে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মাধ্যমে প্রকল্পের যানবাহন টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ নিতে হবে। প্রকল্প শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের যানবাহন কেন্দ্রীয় পরিবহন পুলে জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয় ওই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও পরিপত্রে বলা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :