ঢাকা সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫

ঠিকাদারে জিম্মি পাঁচ লাখ পরিবার

উৎপল দাশগুপ্ত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম

ঠিকাদারে জিম্মি পাঁচ লাখ পরিবার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে ২০১৬ সাল থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস সহায়ক পদে ১৬ হাজার ১৩০ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেন জিয়াউর রহমান।

বেতনের বাইরে কোনো উৎসবভাতা পেতেন না। তবে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে জিয়াউর রহমানকে তার নিযুক্তকারী ঠিকাদার কোম্পানি সাকি ট্রেডার্সকে অগ্রিম দিতে হয়েছিল সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া প্রতিবছর কোম্পানিকে দিতে হতো ১০ হাজার টাকা।

২০১৯ সাল থেকে প্রায় পাঁচ বছর বেতন পাচ্ছেন না জিয়াউর। বকেয়া বেতন আদৌ পাবেন কি না জানেন না। তার সঙ্গে নতুন করে চুক্তিও করেনি ঠিকাদার কোম্পানি। তবে কোম্পানির চুক্তি করার আশ্বাসে প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু চরম আর্থিক কষ্টের কারণে এখন অফিসের কাজের ফাঁকে এলাকায় চুক্তিভিত্তিক কৃষিকাজ করে কোনোমতে পরিবারের ভরণপোষণ চালাচ্ছেন তিনি।

একই ঠিকাদার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিতে ওই প্রতিষ্ঠানে ওয়ার্ডবয় পদে ২০১৮ সাল থেকে ১৬ হাজার ১৩০ টাকা বেতনে কাজ করছেন মো. রাহি মোল্লা। তিনিও কোম্পানিকে অগ্রিম হিসেবে দিয়েছেন চার লাখ ও প্রতিবছর ১০ হাজার টাকা। গত ১৮ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না তিনি। ছয় মাসে আগে ঠিকাদার কোম্পানির সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। 

নতুন চুক্তি করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি গত ছয় মাসেও। নিয়মমাফিক দায়িত্ব পালন করলেও বেতন না পাওয়ায় এখন অফিসের কাজ শেষে এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার মরণপণ লড়াই করছেন রাহি। 

দেশের বিভিন্ন জেলার ভূমি অফিসে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীদের অবস্থাও অনেকটা এমনই। তাদের অনেকেই সর্ব্বনিম্ন দেড় বছর থেকে ছয় বছরের বেশি সময় বেতন না পেয়ে দুর্বিষহ সময় পার করছেন। 

রাজধানীর বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা ১০ জন গত আট মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। সম্প্রতি কোম্পানির সঙ্গে তাদের চুক্তির ফাইল অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে বলে জানা গেছে। ফাইল অনুমোদন হয়ে সব যখন চূড়ান্ত হবে তাদের চাকরির মেয়াদ থাকবে অল্পসময়। 

আনুমানিক ১২০টি ঠিকাদার কোম্পানির অধীনে দেশের সাত বিভাগের ৬৪ জেলায় সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ কর্মচারীর অধিকাংশেরই পেশাগত বঞ্চনার গল্প ওপরে উল্লেখিতদের মতোই। ঠিকাদারদের হাতে জিম্মি কর্মচারীর ভাগ্য।

ব্যানবেইসের ১০ কর্মচারীর বকেয়া ও চাকরিসংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মো. মজিবুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের নিয়োগসংক্রান্ত ফাইল অনুমোদন দিয়েছে। বকেয়া পেয়ে যাবে।  

বকেয়া পেতে পেতে বর্তমান নিয়োগের সময় শেষ হয়ে আসবে। আবার নতুন নিয়োগ নিতে গিয়ে দীর্ঘ সময়ের ফেরে বকেয়া পড়বে। এ অবস্থা থেকে স্থায়ীভাবে বেরিয়ে আসার কোনো সমাধান রয়েছে কি নাÑ প্রশ্নের উত্তরে মহাপরিচালক বলেন, এই চুক্তি প্রতিবছর করতে হয়, নীতিমালা অনুযায়ী এমনই নিয়ম। স্থায়ীভাবে সমাধানের বিষয়টি সরকারের বিষয়।  

বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ জানিয়েছে, সারা দেশে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কত সে সম্পর্কে তালিকাওয়ারি পরিসংখ্যান না থাকলেও সংগঠনের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় করা জরিপে আনুমানিক সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ কর্মীর তথ্য পাওয়া গেছে। 

আর এসব কর্মচারীর ওপর রয়েছে তাদের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব। প্রতি পরিবারে ন্যূনতম তিনজন করে ধরলেও এর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় পনেরো লাখ। আউটসোর্সিং কর্মচারীদের এই পেশাগত বৈষম্যের কারণে প্রায় ১৫ লাখ মানুষকে চরম আর্থিক দৈন্যদশায় পড়তে হয়েছে।

কল্যাণ পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, আউটসোর্সিং নীতিমালা অনুযায়ী চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারীর সর্বোচ্চ ২১ হাজার থেকে সর্বনিম্ন ১৮ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। অথচ কর্মচারীরা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১৬ হাজার থেকে সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা। অর্থাৎ মাথাপিছু সর্বোচ্চ সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে নিচ্ছে নিয়োগকারী ঠিকাদার কোম্পানি। এই হিসেবে প্রতি মাসে ২৫ কোটি ও বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদার কোম্পানিগুলো।  

কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মো. নুরুল হক নুর জানিয়েছেন, এত বঞ্চণা নিয়ে  দশ বছর ধরে কাজ করার পরও গত বছরের ১৯ অক্টোবরের পর প্রায় ২,২০০ কর্মচারী চাকরি হারিয়েছেন। 

দীর্ঘদিন বেতন পাচ্ছেন না ২,০০০ হাজার কর্মচারী। চাকরি স্থায়ীর দাবিতে গত বছরের আগস্ট ও অক্টোবর মাসে আন্দোলনের পর চুক্তি করতে টালবাহানা করছে কিছু ঠিকাদার কোম্পানি। 

এ ছাড়া চাকরি চলমান থাকার পরও অগ্রিম টাকা না দিলে নতুন চুক্তি হবে না- কোম্পানিগুলোর এমন শর্ত পালন করতে না পারায় চলতি মাসের শেষে চাকরি হারাতে পারেন আরও প্রায় পাঁচ হাজার কর্মচারী। 

কর্মচারীদের সঙ্গে কোম্পানির অসম চুক্তি ও নিয়োগ নিয়ে টালবাহানার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আগামীতে অধিকাংশ কর্মচারীই এই ভোগান্তির শিকার হবেন বলে মনে করেন কল্যাণ পরিষদের এই নেতা।

এ বিষয়ে মো. নুরুল হক নুর রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে সবার মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। ঠিকাদারি ব্যবস্থা বাতিল করে নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়োগ, চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন পরিশোধ করা না হলে আন্দোলনের কথা ভাবছে কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।

নীতিমালা বাতিল, দৈনিক ভিত্তিক ও প্রকল্পে কর্মরতদের বহাল রেখে বয়স শিথিল করে চাকরি স্থায়ীকরণসহ বেশকিছু দাবিতে গত বছরের ১৭ আগস্ট শনিবার রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন আউটসোর্সিং খাতের কর্মচারীরা। 

পরে বিকেল সাড়ে ৩টায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহকারী একান্ত সচিব শাব্বীর আহমদের কাছে কল্যাণ পরিষদের চার প্রতিনিধি স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম ও নানা বঞ্চনার উল্লেখ করে এর অবসান জানানোর দাবি জানানো হয়।

এরপর গত ১৮ অক্টোবর দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে আবার রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীরা। পরে বিকেলে বিক্ষোভকারীদের সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন। দাবি বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের আশ্বাসে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা।

বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ সূত্র জানায়, এরপর প্রায় তিন মাসেও এসব দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর মধ্যে একাধিকবার সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়। 

এ সময় আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বয়স শিথিল করে স্থায়ীকরণ করা, ঠিকাদারি নীতিমালা বাতিল, বেতন বৈষম্য দূর করা ও উৎসব ভাতার ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বারবার শুধু ‘প্রক্রিয়া চলছে’ বলে জানানো হয়। 

কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহবুবুর আনিস এ বিষয়ে রূপালী বাংলাদেশকে জানান, আউটসোর্সিং কর্মচারীদের সমস্যাসংক্রান্ত সার্বিক বিষয় নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি বুধবার কল্যাণ পরিষদের ১৫ সদস্যের একটি দল গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

এ সময় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। গণপূর্ত উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় কল্যাণ পরিষদের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, বকেয়া বেতন পরিশোধ, ঠিকাদার নিয়োগে টেন্ডার বন্ধ রাখা ও কর্মচারীরা বর্তমানে যেখানে যেভাবে আছে সেভাবে থাকার দাবি জানান। 

প্রতিনিধিদের কথা শুনে, যে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং যাদের বেতন বকেয়া রয়েছে তাদের বিস্তারিত বিবরণসহ ফাইল তৈরি করে গতকাল উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেন। কল্যাণ পরিষদ বর্তমানে সেই ফাইল তৈরি করে জমা দেওয়ার কাজ করছে। 

এ বিষয়ে কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাহবুবুর রহমান আনিস রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমরা চাই অবিলম্বে ঠিকাদার প্রথা বাতিল করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। অনেকদিন ধরে আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। তারপরও যদি আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে রাজপথে নামা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। 

বৈষম্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন নিবেদন করেও কোনো ফল না পাওয়ায় মর্মাহত বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল সরকার আলিফ। তিনি বলেন, দাবির বিষয়ে সরকার আমাদের একাধিকবার আশ্বস্ত করার পরও দৃশ্যমান উন্নতি কিছু হয়নি। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

আউটসোর্সিংয়ে চাকরি বলতে বোঝায় কোনো সরকারি দপ্তরের নিজস্ব বা রাজস্বখাতভুক্ত কর্মচারী না থাকায় কোনো কোম্পানির মাধ্যমে জনবল সংগ্রহকরণ। জনবল সংকটের কারণে তৃতীয় পক্ষ বা জনবল সরবরাহকারী কোম্পানির মাধ্যমে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো জনবল সংগ্রহ করে থাকে। 

জরুরিভিত্তিতে ১২টি সেবাগ্রহণের জন্য সরকার ১৬ থেকে ২০তম গ্রেডে শূন পদে এভাবে জনবল নিয়োগের জন্য আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবাগ্রহণ নীতিমালা-২০১৮ তৈরি করে। এই নীতিমালা অনুযায়ীই আউটসোর্সিংয়ে কর্মচারী নিয়োগ হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, সিকিউরিটি গার্ড নিরাপত্তা প্রহরী, ক্লিনার পরিচ্ছন্নতা কর্মী, সহকারী গার্ডেনার, ইলেকট্রিক্যাল হেলপার, কার্পেন্টার, কাঠমিন্ত্রী, হেলপার, স্যানিটারি হেলপার, পাম্প হেলপার, গাড়ির হেলপার, এসি মেকানিক হেলপার, চৌকিদার, ল্যাব এটেনডেন্ট, ইর্মাজেন্সি এটেনডেন্ট, স্ট্রেচার বেয়ারার, ওয়ার্ড বয়, আয়া, সহকারী বাবুর্চি, লিফটম্যান, লাইনম্যান, ফরাশ লষ্কর, মাসন হেলপার, ম্যাসেঞ্জার, মশালচি, এনিমাল এটেনডেন্ট, গেস্ট হাউস এটেনডেন্ট, হোস্টেল এটেনডেন্ট, ডোম, বাইন্ডার, অদক্ষ শ্রমিক ড্রাইভার (হেবি), সুপারভাইজর, কেয়ারটেকার, ওয়ার্ড মাস্টার, ইলেকট্রিশিয়ান, লিফট মেকানিক, এসি মেকানিক, পাম্প মেকানিক, জেনারেটর মেকানিক, অন্যান্য কারিগরী কাজসংক্রান্ত টেকনিশিয়ান এবং সহকারী ইঞ্জিন মেকানিক, টেন্ডল, গ্রিজার, টেইলর, ডুবুরি, লন্ড্রি অপারেটর, ফরাশ জমাদার, সহকারী ইলেকট্রিশিয়ান, শুকানী, বাবুর্চি, বাগানকর্মী ও দক্ষ শ্রমিক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!