মৌলভীবাজার-৩ (রাজনগর-মৌলভীবাজার সদর) আসনের সাবেক এমপি ওলিলা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের জেলা কমিটির উপদেষ্টা মো. জিল্লুর রহমান একজন প্রতারক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট ও আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তার নামে ১৩টা মামলা হয়েছে। এর আগেও প্রতারণার অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তিনি তার অপকর্ম ও দুর্নীতি ঢাকতে আত্মগোপনে চলে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জিল্লুর রহমান নিকেতন ও গুলশান এলাকায় আত্মগোপনে আছেন। গুলশানে থাকা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা তাকে সহযোগিতা করছেন বলে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। খুনের মামলার আসামি জিল্লুর রহমানকে পুলিশ, বিএনপি নেতা ও সেনাবাহনীর সাবেক এক মেজর প্রোটোকল দিচ্ছেন।
আওয়ামী সরকারের এমপি হওয়ার সুবাদে জিল্লুর রহমান অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নানা অপকর্মের কারণে সম্প্রতি শুলশান থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ এসব বিষয়ে নীরব রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, জিল্লুর রহমান বিয়ে করেছেন তার থেকে বয়সে বেশি এক নারীকে। তিনিই বর্তমানে তার সবকিছু দেখভাল করেন। তার স্ত্রীও ফ্যাসিস্টের দোসর। জিল্লুর রহমান সব অপকর্ম করেছেন ওলিলা গ্রুপ কোম্পানির মাধ্যমে। অভিযোগ আছে, এই কোম্পানি একটি ফ্যাসিস্ট মিডিয়ার ডোনার। তাদের তিনি ৫ আগস্টের আগে ও পরে ১০ কোটি টাকার বেশি দিয়েছেন।
সূত্রমতে, জিল্লুর রহমান ওলিলা গ্রুপ কোম্পানির মাধ্যমে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তাছাড়া তার আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন। সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট ও বিভিন্ন কোম্পানি দখল করার অভিযোগে বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ রূপালী বাংলাদেশের হাতে আসে। সেগুলো নিয়ে রূপালী বাংলাদেশ কাজ করে এবং এর সত্যতা পায়।
জানা যায়, নিজের ব্যাবসায়িক প্রভাব বাড়াতে ২০২২ সালে ওলিলা গ্রুপের এমডি জিল্লুর রহমান নিজের ছোট ভাই আলাউর রহমানকে বিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ আবু জাফর রাজুর ছোট বোন ফাহিমা আক্তারের সঙ্গে। তাছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তার নিকটাত্মীয় হওয়ার সুবাদে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ওলিলা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক এমপি জিল্লুর রহমান।
অন্যদিকে গোয়েন্দা সূত্র রূপালী বাংলাদেশকে জানায়, গুলশান ও নিকেতন এলাকায় আত্মগোপনে থেকেও সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন সাবেক এমপি জিল্লুর রহমান। তাকে একটি চক্র এসব কাজে সহযোগিতা করছে। তবে সাবেক এমপি জিল্লুর রহমান অনেকটা নজরদারিতে আছেন।
এ বিষয়ে গুলশান থানার ওসি (অপারেশন) আরাফাতুল হক খান রূপালী বাংলাদেশকে মুঠোফোনে জানান, এমপি জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্রের তথ্য-প্রমাণ পেলে বা তার নামে মামলা থাকলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। তাছাড়া গুলশানে আত্মগোপনে আছে কি না আমরা খোঁজ নিচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :