ঢাকা বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

মুখ থুবড়ে পড়েছে নাগরিক সেবা

মাইনুল হক ভূঁঁইয়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৯:৪২ এএম

মুখ থুবড়ে পড়েছে নাগরিক সেবা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সাত গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি থাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসনিক কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে নাগরিক সেবা। পদগুলো হলো- প্রশাসক,  প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, আইন কর্মকর্তা, নিরীক্ষা কর্মকর্তা এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা।

আগস্ট বিপ্লবের পর সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় এসব সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ডিএসসিসিতে স্থায়ীভাবে কোনো প্রশাসক দেওয়া হয়নি। 

দু’জন অতিরিক্ত সচিব কিছুদিন দায়িত্ব পালনের পর চলে গেলে সর্বোচ্চ এই পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে একজন অতিরিক্ত সচিব প্রশাসকের দায়িত্বে আসেন। মাত্র এক মাস দায়িত্ব পালন শেষে তিনি চলে গেলে আসেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম। 

৬ জানুয়ারি সরকার তাকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগে পদায়ন করে। এরপর এ প্রতিবেদন তৈরির সময় পর্যন্ত টানা ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসকের এই পদটি পূরণ করা হয়নি। পরের গুরুত্বপূর্ণ পদ হলো প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। 

এটিও দীর্ঘদিন ধরে খালি। অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান এই পদে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর তিনি বদলি হয়ে গেলে ২৭ দিন ধরে এখানে কাউকেই পদায়ন করা হয়নি।

ডিএসসিসির সচিব বশিরুল হক ভূঁইয়া আছেন এর অতিরিক্ত দায়িত্বে। এর পর থেকে তিনিই সামাল দিচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ দুই পদ। মূলত প্রশাসক এবং প্রধান নির্বাহীই হলেন সংস্থাটির প্রাণ। তাদের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক ও তৃণমূলের কাজকর্ম বলতে গেলে মুখ থুবড়ে পড়েছে। সেবাপ্রার্থীরা ঘুরে ঘুরে হয়রান-পেরেশান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে করপোরেশনের এক মাঝারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রশাসকের অভাবে কোনো উন্নয়নকাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ অন্য কারো পক্ষে এর নথিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া দুরূহ ব্যাপার। 

ডিএসসিসি যেহেতু একটি সেবামূলক সংস্থা, তাই অনেক কাজই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। এসব কাজ এখন একদম হচ্ছেই না। এ ছাড়া পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেক চাহিদা থাকছে, আসছে নানা সুপারিশ- এগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এদিকে হিসাব বিভাগে অর্থ ছাড়করণেও প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে। 

৫ আগস্টের পর ডিএসসিসির বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমার উদ্ভব হচ্ছে। এসব দেখভাল কিংবা মোকাবেলা করার কেউ নেই। তা ছাড়া গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্যপ্রাপ্তিতে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, পত্র-পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা যাচ্ছে না। কারণ জনসংযোগ কর্মকর্তা নেই।

অপরদিকে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অভাবে নগরবাসীর স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কোনো রকম অবদানই রাখতে পারছে না সংস্থাটি। এসব সার্বিক বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সংস্থার সচিব বশিরুল হক ভূঁইয়া গতকাল রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কর্মকর্তাদের আসা-যাওয়া-একটি রুটিন ওয়ার্ক। দ্রুত শূন্যপদ পূরণের জন্য মন্ত্রণালয়কে লিখেছি। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ আছে। আজকেও যোগাযোগ হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, দু-এক দিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!