ঢাকা সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫

উত্তপ্ত আন্ডারওয়ার্ল্ড, নেই নজরদারি

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০১:৫৬ এএম

উত্তপ্ত আন্ডারওয়ার্ল্ড, নেই নজরদারি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নির্মাণাধীন ভবনে বেশ কয়েকজন যুবক গিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়ে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে সেই নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়। ভুক্তভোগী পরবর্তী সময়ে জানতে পারেন এটি একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী নাম্বার। তাদের চাহিদামতো চাঁদা না দিলে অস্ত্রধারী যুবকরা গিয়ে গুলি করে এবং হামলা-ভাঙচুর চালায়। পুলিশও তাদের রুখতে পারে না। এমন ঘটনা এখন রাজধানীর নিত্যদিনের ঘটনা। একে একে জামিনে মুক্তি পেয়েছে ৭ শীর্ষসহ ২৭ দাগি সন্ত্রাসী। ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনে দীর্ঘদিন ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঁপানো মোস্টওয়ান্টেড এসব শীর্ষ সন্ত্রাসী তিন মাস ধরে বেপরোয়া। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার কারণে সন্ত্রাসীরা ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। নগরবাসীর মনে আতঙ্ক দেখা দিচ্ছে। তারা তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। ব্যবসা দখল, মার্কেট নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন পিচ্চি হেলাল, ইমন, শাহাদাত, সুব্রত বাইন, কিলার আব্বাস, জিসান, মোল্লা মাসুদ ও সুইডেন আসলাম।

ঢাকায় সংঘটিত নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জামিনে বেরিয়ে আসা শীর্ষ ও দাগি সন্ত্রাসীদের নাম উঠে এসেছে। এদের অনেকের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। কারাগারে এবং দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসী এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার ও নির্মাণাধীন ভবনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অস্ত্রধারী অনুসারীদের চাঁদাবাজি করছেন। এসব চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দাবি করে আসছেন, জামিনে মুক্ত হওয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রাখছেন। কিন্তু ভুক্তভোগীরদের অভিযোগ, এত দিনেও পুলিশ ও র‌্যাবের নজরে পড়ছে না চিহ্নিত অপরাধীরা। পড়লে তো গ্রেপ্তার হতো।

এদিকে, গতকাল রোববার কেরানীগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জরুরি সেবা উদ্বোধন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) জানান, যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে কারাগারের বাইরে আছেন, তাদের আবার আইনের আওতায় আনা হবে বলে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে অনেকেই জামিনে বের হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, খুনসহ নানা অপরাধে লিপ্ত হয়েছেন। এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

গোয়েন্দা সূত্র মতে, রাজধানীর অপরাধজগতে নেতা-সন্ত্রাসীতে আঁতাতের পাশাপাশি পুরোনো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে বেপরোয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা রাজধানী জুড়ে তাদের নামে চলছে চাঁদাবাজি। চাঁদার টাকা না পেলে হুমকি, চলছে মহড়া ও হামলা রাজধানীতে টেন্ডার, বাস-ট্রাক ষ্ট্রান্ড, ডিস, ইন্টারনেট, ময়লা, ঝুট, বাজার ও ফুটপাত ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ।

নির্মাণাধীনসহ ভবন-মার্কেটের চাঁদাবাজিতে যুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। এমনকি জমি দখলেও যুক্ত হয়েছেন তারা। চাঁদা না দিলে গুলি ও বোমা মেরে আতঙ্ক তৈরি করছেন, দিচ্ছেন প্রাণনাশের হুমকিও। ৫ আগস্টের পর রাজধানীর একাধিক হামলা ও গুলির ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিভিন্ন ভবন বা প্রতিষ্ঠানে বেশ কয়েকজন যুবক গিয়ে একটি মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

পরবর্তীতে সেই নাম্বার থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী পরিচয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। চাহিদামত চাঁদা না দিলে হামলা-গুলি করে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও লাভ হয়না।

ভুক্তভোগীরাও জানাচ্ছেন, সন্ত্রাসীদের উৎপাতের কথা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, ধানমন্ডি, মিরপুর, পল্লবী, কাফরুল, ইব্রাহিমপুর, ভাসানটেক, ক্যান্টনমেন্ট, মগবাজার, মতিঝিল, মালিবাগ, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, উত্তরা ও যাত্রাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করছে জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ছাড়াও আত্মগোপনে থাকাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা ও পুলিশ বলছে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরতে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের বেশকয়েকজন সহযোগী গ্রেপ্তার হয়েছে। জামিনে মুক্তি পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এখনো ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে। ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার করতে একে অপর মধ্যে দ্বন্দ্বেও জড়িয়ে পড়ছেন। প্রকাশ্য অস্ত্রবাজিতে জড়িয়ে পড়ছেন।

বর্তমানে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণে কেউ প্রকাশ্য, কেউ আড়ালে আবার কেউ বা বিদেশে বসে ঢাকার অপরাধ জগতের কলকাঠি নাড়ছেন। ইতিমধ্যে ঢাকার অধিকাংশ এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে জানা গেছে। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকে তারা এলাকা নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, পেশি শক্তির প্রদর্শন, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণসহ একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। পেশি শক্তির প্রদর্শন থেকে শুরু করে দলবল নিয়ে মহড়া, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, হামলা, টেন্ডারবাজি, ঠিকাদারি, অস্ত্রের কেনাবেচা, সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখল, গার্মেন্টস ও হত্যাকান্ডের সঙ্গে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতিমধ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা জিডি হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সম্প্রতি শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিনে মুক্ত হয়ে ফের অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জামিন বাতিলসহ তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। রাজধানীতে যেসব ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো আলাদা করে মনিটরিং করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তপ্ত আন্ডারওয়ার্ল্ডের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনতে সরকানের নির্দেশনা রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তাদের সহযোগীদের ধরতে অভিযানও চালানো হচ্ছে। দখল ও চাঁদাবাজিসহ সবধরণের অপরাধ দমনে পুলিশ-গোয়েন্দারা কাজ করছে। ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিতে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হওয়া প্রতিটি মামলা ও জিডি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। কেউ ছাড় পাবেনা। আন্ডারওয়ার্ল্ড বা শীর্ষ সন্ত্রাসী বলেন ইতিমধ্যে আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে দিয়েছি। কঠোরভাবে তাদের দমন করা হবে। নগরবাসীর নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের কাছে দায়িত্ব, আমরা সেই চেষ্টাই করছি।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, পুরস্কার ঘোষিত ২৩ সন্ত্রাসীর অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ধানমণ্ডি-হাজারীবাগের সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গত ১৫ আগস্ট এবং ১৬ আগস্ট রাতে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার-৪ থেকে জামিনে মুক্তি পান মোহাম্মদপুরের ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল। মিরপুরের ‘কিলার আব্বাস’ ওরফে আব্বাস আলী, তেজগাঁওয়ের শেখ মোহাম্মদ আসলাম ওরফে সুইডেন আসলাম, শাহাদাত হোসেন, মোল্লা মাসুদ, খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন, খোরশেদ আলম ওরফে রাসু ওরফে ফ্রিডম রাসু, মুক্তার, ও কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এরবাইরে আরো কয়েক শীর্ষ সন্ত্রাসী বিদেশে আত্মগোপনে থাকলেও এখন দেশে ফিরেছেন বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

কারাগার থেকে বেরিয়ে আসা সন্ত্রাসীরা নিজেদের হারানো ‘অপরাধ সাম্রাজ্য’ আবার নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্রিয় হয়েছে। মূলত ৫ আগস্টের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। অনেকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এতে অবনতি ঘটছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে আগের ‘সেভেন স্টার’ ও ‘ফাইভ স্টার’ গ্রুপের মতো জোটও করতে চাইছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চার মাসে ঢাকাসহ সারাদেশে ৯৪৭ জন খুন হয়েছেন। মামলা হয়েছে ৭৯৬টি। গত বছর এই চার মাসে মামলা হয়েছিলো ৪৯৪টি। এই চা মাসে অপহরণের ঘটনায় মামলা হয় ৩০২টি। গত বছর হয়েছিলো ১৬০টি। ৫ আগস্টের আগে পরে পুলিশের থানা, ফাঁড়িসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র-গুলি লুটের ঘটনা ঘটে। লুট হয় ৫ হাজার ৭৫০টি অস্ত্র। গুলি লুট হয় ৬ লাখ ১৩ হাজার ৯৯ রাউন্ড। গোয়েন্দা তথ্যমতে, লুট হওয়া এসব অস্ত্র-গুলি হাতবদল হয়ে দাগী সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংয়ের হাতে চলে গেছে। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৫৮টি অস্ত্র উদ্ধার করা গেছে। এখনও ১ হাজার ৩৯২টি অস্ত্র বেহাত।

অন্যদিকে, গত রোববার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ৬১ বছর বয়সী শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম দাবি করেছেন, তিনি আর অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। ২৭ বছর পর কারাগার থেকে বেরিয়ে এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। তার নামে কোনো অপরাধ সংঘঠিত হলে তার সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলেও দাবি করেন আসলাম। গত ৫ আগস্ট জেল ভেঙে পালানো আসামিদের মধ্যে এখনও প্রায় ৭০০ জন পলাতক আছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, জেলা থেকে পালানো অপরাধীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

দীর্ঘদিন পর কারাগার থেকে বেরিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য তৎপরতা শুরু করেছে। এলিফ্যান্ড রোডের মার্কেট দখল নিয়ে পিচ্চি হেলাল ও ইমনের দ্বন্ধের জেরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। মূলত চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করেই এই হামলা। গত ২০ সেপ্টেম্বর রায়ের বাজারে সাদেক খান আড়তের সামনে জোড়া খুন হয়। ওই দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় পিচ্চি হেলালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এলাকার ‘দখল’ নিতে সন্ত্রাসীদের দুই পক্ষের বিরোধ থেকে জোড়া খুনের ওই ঘটনা ঘটে। তবে ওই ঘটনার পর চার মাসেও পিচ্চি হেলালকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মগবাজারের বিশাল সেন্টারে দলবল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন বাইন। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর কিলার আব্বাসও প্রকাশ্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ দুবাই বসে তার সহযোগীদের দিয়ে খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকার অপরাধ, চাঁদাবাজি, দখলবাজির কলকাঠি নাড়ছেন। তাকেও ঘিরেও বেশ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি দুই রবির (রবিউল আলম ও রবিউল ইসলাম) কাঁধে ভর করে অপরাধের নতুন সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। গত ১০ই অক্টোবর হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দীপ্ত টেলিভিশনের সমপ্রচার বিভাগের কর্মকর্তা তানজিল জাহান ইসলাম তামিম হত্যাকাণ্ডে জড়িতরাও ইমনের ঘনিষ্ঠ বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। গত ৫ই জানুয়ারি জিগাতলা ধানমণ্ডি ১৪ নম্বর এবং ৭/এ তিনটি বাড়িতে একযোগে ইমনের তিন সহযোগী তাণ্ডব চালিয়ে বহুতল নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। ককটেল নিক্ষেপ ও এলোপাতাড়ি গুলিতে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র পরিচালক সিনিয়র এএসপি মুত্তাজুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, র‌্যাব সার্বক্ষনিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে সচেষ্ট থাকে। চলতি সপ্তাহে মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে একাধিক অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করেছে। র‌্যাবে প্রতিটি ব্যাটালিয়ন টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি ছাড়াও সন্ত্রাসীদের ধরতে ডিজিটালি ফুটপ্রিন্ট সংগ্রহ করছে। ক্রাইম সিন থেকে পাওয়া তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। র‌্যাব শীর্ষ বা অস্ত্রধারী দাগি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে নগরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!