সড়কে মোড়লদের মাতবরি

শাওন সোলায়মান

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫, ০১:১৭ এএম

সড়কে মোড়লদের মাতবরি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাত ১২টা ৪৪ মিনিট, রাজধানীর মিরপুরে বর্ধিত পল্লবী আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করতে পারছে না একটি অ্যাম্বুলেন্স।

কারণ এলাকায় প্রবেশের একটি সড়কে গেট (গেট নং-৩) দেওয়া, সেই গেটে ঝুলছে তালা। অ্যাম্বুলেন্সের চালক বাইরে নেমে কোনোভাবে গেটের বিপরীত পাশে দায়িত্বরত এক নিরাপত্তাকর্মীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন।

নিরাপত্তাকর্মীর জেরার পর গেটের তালা খুলতে খুলতে চলে গেল ১০ মিনিট। চালক জানান, আবাসিক এলাকা থেকে মুমূর্ষু এক রোগীকে ‘পিক’ করে হাসপাতালে নিতে অ্যাম্বুলেন্স এনেছেন তিনি।

সরেজমিন জানা যায়, অত্র এলাকার সব সড়ক এভাবে গেটে অবরুদ্ধ রেখেছে বর্ধিত পল্লবী বাড়ী মালিক কল্যাণ সমিতি। এলাকার অন্তত তিনটি সড়কের গেট সবসময় বন্ধ থাকে। বাকিগুলো সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

এই সময়ে গেট দিয়ে যানবাহন চলাচলে লাগবে সমিতির সদয় অনুমতি বা নিরাপত্তাকর্মীর দয়া অথবা টাকার বিনিময়ে নেওয়া ‘স্টিকার’।

এভাবেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গেট বসিয়ে জনগণের সড়ক আটকে মাতবরি চলছে মোড়লদের। শুধু পাড়া-মহল্লার অলিগলি কিংবা আবাসিক এলাকা নয় বরং প্রধান সড়ক লাগোয়া রাস্তায়ও রয়েছে ভূ-পতিদের গেট, যেন সড়কটা সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য নয় বরং তাদের জমিদারির প্রবেশদ্বার।

এই ঘটনা শুধু রাজধানীর কোনো একটি বা দুটি এলাকার নয়। পুরো রাজধানীই যেন অবৈধ গেটের এক মহানগরীতে পরিণত হয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এমন গেটের উপস্থিতি পাওয়া গেছে প্রায় সবখানে।

উত্তরার সব সেক্টর, বনানী, গুলশান, মিরপুরের পল্লবী, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, রূপনগর আবাসিক, আরামবাগ আবাসিক, টোলারবাগ, ইব্রাহিমপুর, কাফরুল, বনশ্রী, খিলগাঁও চৌধুরীপাড়া, মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন হাউজিং এলাকা যেমন-মোহাম্মাদিয়া হোমস, রফিক হাউজিং, প্রবাল হাউজিং, হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট, চন্দ্রিমা উদ্যান, নবোদয় হাউজিং ইত্যাদি; তেজগাঁও মনিপুরী পাড়া, পূর্ব ও পশ্চিম রাজাবাজার, পুরান ঢাকার ওয়ারীসহ এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে গেট বসিয়ে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে না।

কোনো গেট নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকে, কোনো গেট ২৪ ঘণ্টাই বন্ধ থাকে। নির্দিষ্ট সময় বন্ধ থাকা গেটে কখনো কখনো নিরাপত্তাকর্মী থাকে; তবে স্থায়ীভাবে বন্ধ গেটের দরজা খুলে দিতে থাকে না কেউ।

বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে রূপালী বাংলাদেশ জানতে পারে যে, শতভাগ ক্ষেত্রেই এলাকার নিরাপত্তা ও বহিরাগতদের চলাচল নিয়ন্ত্রণের অজুহাতে অবৈধ গেট বসানো হয়।

তবে এর পেছনে আছে প্রভাবশালীদের ক্ষমতা প্রদর্শনের মানসকিতা, সড়কে অবরোধ করে সেখানে দোকান বসিয়ে ভাড়া আদায়, অফিস বা ব্যক্তিগত গাড়ির নিরাপদ পার্কিং ব্যবস্থা, গেট ব্যবহারের জন্য স্টিকার বাণিজ্য ও চাঁদা আদায়ের সুযোগের মতো কারণ।

গেট বসানো সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে থাকেন অত্র এলাকার বিত্তবান ব্যক্তি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট মালিক, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং সরকারি আমলাদের মতো মোড়ল এবং ভূপতিরা।

বিভিন্ন কল্যাণ সমিতির নামে সাধারণ নাগরিকদের অকল্যাণ করেন তারা। অনেক ক্ষেত্রে আবাসিক এলাকার ভাড়াটিয়াদের বিপরীতে নিজেদের ক্ষমতা জাহিরে বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিকরা সিন্ডিকেট করে এসব গেট বসান।

এসব গেট ব্যবহারে মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের জন্য থাকে ভিন্ন ভিন্ন আইন। যেমন-পল্লবী ১২ নম্বর সেকশনের উত্তর পল্লবী বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এলাকায় অটোরিকশায় প্রবেশ করতে পারেন।

কিন্তু ভাড়াটিয়া, এমনকি প্রভাবহীন অন্যান্য বাড়ি মালিকরা এমনটা পারেন না। গত আগস্ট পর্যন্ত এই সমিতির সভাপতি ছিলেন অত্র এলাকার আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর ভাই বিপ্লব মোল্লাহ।

বিপ্লব মোল্লাহর রাজত্বের গাড়ি বা মোটরসাইকেল থাকা বাসিন্দাদের গেট ব্যবহারে নিতে হতো বিশেষ স্টিকার। গাড়ির জন্য বছরে এক হাজার এবং মোটরবাইকের জন্য ৩০০ টাকা হারে স্টিকার বাণিজ্য করত এই সমিতি।

অবশ্য সরকার পরিবর্তনের পর ভাই ইলিয়াসের সঙ্গে পালান বিপ্লব নিজেও। সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ দিয়েছেন। এরপর থেকে স্টিকার বাণিজ্য অত্র এলাকায় আপাতত বন্ধ। তবে বহাল তবিয়তে এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে প্রধান সড়ক এবং আশপাশের এলাকার সঙ্গে সংযোগকারী সাতটি সড়কের সাতটি গেট।

অবশ্য স্টিকার বাণিজ্য চালু আছে দক্ষিণ পল্লবী বাড়ি ও ফ্ল্যাট মালিক সমিতি এবং রূপনগরের আরামবাগ কল্যাণ সমিতিতে। গুলশান এবং বনানী সোসাইটিতেও এ ধরনের স্টিকার প্রথার উপস্থিতির তথ্য পাওয়া যায়।

রাত ১১টার পর বনানী ডাকঘরের উল্টোদিকের সড়ক বন্ধ হলে স্টিকার দেখিয়েই প্রবেশ করতে হয় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন এই সড়ক ব্যবহারকারী অনেকেই। পশ্চিম মোহাম্মদপুরের প্রতিটি হাউজিং সোসাইটিতে বন্ধ গেট খুলতে হলে দেখাতে হয় স্টিকার।

এলাকাবাসীর বাড়িতে আত্মীয়স্বজন বা মেহমান আসলে গেটের দারোয়ানকে জেরায় সন্তুষ্ট করতে না পারলে খোলে না গেট।

মোহাম্মাদীয় হাউজিংয়ের বাসিন্দা মোহাম্মদ রনি বলেন, ‘রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পুরোপুরি বন্ধ থাকে গেট। অফিস থেকে ফিরতে দেরি হলে বা কোনো কাজে বাইরে থাকলে ১২টার পরে আসলে রীতিমতো দারোয়ানের পায়ে পড়া লাগে। মনে হয় যেন আমি এক জেলখানার কয়েদি, আর সমিতির লোকজন মোড়ল বা ভূপতি’।

বিভিন্ন এলাকার গেটের দুই পাশ দখল করে দোকান বসতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার সড়কে কার, পিকআপ এবং সিএনজির পার্কিং গ্যারেজ বানাতে বসিয়েছেন গেট।

মিরপুর-১১ নম্বরে প্রধান সড়কে মেট্রোরেলের ২২১ নম্বর পিলারের উল্টোপাশের সড়ক ব্যারিকেডে আটকে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন।

সড়কমুখের প্রথম ভবনটির মালিক ব্যারিকেডের ভেতরে ট্রাক পার্কিং করেন বলে জানান স্থানীয়রা।

এসব অবৈধ গেট প্রথার কারণে নাগরিকদের জরুরি কাজ বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দৈনন্দিন স্বাভাবিক চলাফেরায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

খিলগাঁও পশ্চিম চৌধুরীপাড়া এলাকার বাসিন্দা সানজিদা খান চিকিৎসকের কাছে যেতে বুক করেছিলেন উবার। সঙ্গে জ্বরাক্রান্ত ৮ বছরের সন্তানসহ দুই শিশু থাকায় উবার চালককে বলেছিলেন নিজের বাসার সামনে আসতে। দাঁতের পীড়ায় অসুস্থ ছিলেন সানজিদা নিজেও।

কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীকে ‘খুশি’ করতে না পারায় সানজিদার বাসার নিচে যেতে পারিনি গাড়িটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকায় প্রবেশের প্রশস্ত সড়কে মাটির মসজিদ প্রান্তে সুউচ্চ গেট বসিয়েছে পশ্চিম চৌধুরীপাড়া কল্যাণ সমিতি, খিলগাঁও। গেটে কালো সাইনবোর্ডে সাদা রঙে লেখা ‘পশ্চিম চৌধুরীপাড়া কল্যাণ সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত আবাসিক এলাকা। আপনার পরিচয় দিন’।

এ বিষয়ে কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য গেট বসানো হয়েছিল। তবে বন্ধ রাখে ট্রাফিক পুলিশ।’

উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের এক বাসিন্দা পরিচয় গোপনের শর্তে বলেন, ‘রাত ৯টায় কবরস্থানের পাশেরটি বাদে বন্ধ হয়ে যায় বাকি গেটগুলো। তখন হাউস বিল্ডিং থেকে প্রবেশ করা যায় না। প্রায় এক কিলোমিটার ঘুরে কবরস্থানের গেট দিয়ে ঢুকতে হয়। 

ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে চলাচলরত ট্রাক ও দূর পাল্লার বাসের কারণে সৃষ্ট দীর্ঘ জ্যাম ঢেলে এই গেটে আসতে হয়।’ তবে গেট রাত ১০টায় বন্ধ হয় এবং নিরাপত্তার কারণে গেট বন্ধ করা হয় বলে জানান সেক্টর ৯ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।

রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘কোন গেট কখন বন্ধ বা খোলা থাকে, বাসিন্দারা সবাই জানেন। কোনো সমস্যা হয় না। নিরাপত্তার জন্য এটি করা হয়েছে।

তবে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সমিতির কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থানা পুলিশও বিষয়টি জানে। জরুরি প্রয়োজনের যানবাহন যেমন অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির চালকেরা গেট খোলা বা বন্ধ থাকার বিষয়টি মুখস্ত রেখে ৯ নম্বর সেক্টরে আসবেন কি না এমন প্রশ্নের অবশ্য কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সিটি করপোরেশনকে কর দিয়েও রাষ্ট্রের সড়ক কেন মোড়লদের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে, সেই প্রশ্ন সাধারণ নাগরিকদের। বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবছর হোল্ডিং ট্যাক্স দেই সিটি করপোরেশনকে।

সিটি করপোরেশনের কর ও হোল্ডিং ট্যাক্স সম্পর্কিত নাগরিক হ্যান্ডবুকে স্পষ্ট লেখা আছে যে, স্থানীয় সরকার অর্থ্যাৎ সিটি করপোরেশন স্থানীয় জনচাহিদা বিবেচনায় স্থানীয় রাস্তা, পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পাবলিক পার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, সড়ক বাতি ইত্যাদি পরিষেবা প্রদান করে থাকে।

আমরা যে কর দেই, তাহলে সড়ক ব্যবহার করতে পারছি না কেন? সড়ক কি তাহলে জনগণ, রাষ্ট্র বা সিটি করপোরেশনের না? সড়ক কী ভূপতি বা সমিতির’? নাগরিকদের এসব প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোথাও এ ধরনের গেট দিয়ে সড়ক বন্ধ করা হয় না।

ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) দিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারব।

প্রয়োজনে কমিটি করে দেব যারা আইনানুগ বিষয়গুলো দেখবে। লিখিত অভিযোগের অপেক্ষায় না থেকে সিটি করপোরেশন নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা নিতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী বলেন, জ্বি, সিটি করপোরেশন নিজেও ‘স্যু মটো’ভাবে বিষয়টি দেখতে পারে।

গুরুত্ব সহকারে দেখব, ইনশাল্লাহ দুই এক দিনের মধ্যেই ফল পাবেন। ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাসিন্দাদের জন্য সংস্থাটি কী করছে সেই প্রশ্নের জবাব অবশ্য পাওয়া যায়নি।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঁঞাকে একাধিকবার কল করা হলেও ধরেননি তিনি। যোগাযোগের কারণ উল্লেখ করে ক্ষুদেবার্তা দেওয়া হলেও সাড়া দেননি সেখানেও।

সড়কের ওপর নগরবাসীর মালিকানা রয়েছে উল্লেখ করে গেট বসানোকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আইনানুসারে আপনার বাড়ির সীমানার পাশ দিয়ে যদি আরেকজনের যাতায়াত থাকে, তাহলে সেটিও বাধা দিতে পারবেন না; যদিও জমিটা আপনার।

চলাচল, প্রবেশাধিকার এতটাই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, সড়ক হচ্ছে বৃহত্তর পরিসর।

এই নগরীতে যারা বাস করেন, চলাফেলা করেন; তাদের প্রত্যেকের সড়কের ওপর মালিকানা রয়েছে।

তৃতীয়ত, পুলিশ ছাড়া এভাবে সড়ক অবরোধের এখতিয়ার কোনো আইন কাউকে দেয়নি। ফলে যারা গেট দেয়, তারা গত ৩০ বছরে বাংলাদেশে ‘অলিগার্কি’ (বিপুল সম্পদের মালিকবাদ) তৈরি করেছে; যারা নিজেরাই এই রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশের মালিক বলে মনে করে। অলিগার্কি তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে রাষ্ট্র।

রাষ্ট্র তৈরি করে দিয়েছে বলেই বিভিন্ন এলাকায় অলিগার্কদের পোষ্যরা তার মতো করে সড়কে গেট বসানোর ধৃষ্টতা দেখায়। কোনো কোনো এলাকায় গেলে মনে হয়, এই রাষ্ট্রের মালিক যেন রাষ্ট্র না। যাদের নির্বাচিত করে আসনে বসিয়েছি, রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যাদের নিয়োজিত করেছি এবং বেতন দেই; তারা কেউই রাষ্ট্রের হয়ে তার জনগণের মালিকানা বুঝিয়ে দিতে পারেনি।’

অবৈধ গেটের বিষয়ে পুলিশের করণীয় জানতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় যেসব রাস্তা গেট বানিয়ে বন্ধ রাখা হয় বিশেষ করে রাতের বেলায়, এটা আবাসিক বাসিন্দাদের নিরাপত্তার স্বার্থে।

স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের ব্যবস্থাপনায় এটা করে থাকে। পুলিশের এখানে করণীয় কিছুই নেই। রাস্তার মালিক সিটি করপোরেশন, সুতরাং তারাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে যদি অনুমতি ছাড়া গেট বানানো বা রাস্তা বন্ধ রাখা হয়।

তবে পুলিশের এমন বক্তব্যকে দায়িত্বে অবহেলা ও এড়ানোর অজুহাত বলে মনে করেন স্থপতি ইকবাল হাবিব।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃংখলা বাহিনীর আবশ্যিক দায়িত্ব এসব গেট সরিয়ে ফেলা। সিটি করপোরেশন হয়তো সড়কগুলোর ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে, তবে পুলিশেরই দায়িত্ব অবৈধ এসব গেট দেখলে সরিয়ে ফেলা।

পুলিশ সেটা না করে সিটি করপোরেশনের দিকে দেখিয়ে দিলে বুঝতে হবে এটা দায়িত্বে অবহেলা এবং এড়ানোর জন্য বলছে।’

আরবি/জেডআর

Link copied!