বাইরে অরাজকতা নাটাই কারাগারে

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫, ১২:৪৩ এএম

বাইরে অরাজকতা নাটাই কারাগারে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দেড় দশক শাসন করা পতিত আওয়ামী লীগের কারাবন্দি ভিআইপি, নেতাকর্মী ও আমলারা অন্তর্বর্তী সরকারের পতনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

ঢাকাসহ সারা দেশে আন্দোলনের নামে অযৌক্তিক দাবি-দাওয়ায় রাজপথ উত্তপ্ত করা এবং হামলা-নাশকতায় জড়িত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

 সারা দেশের অরাজকতার নাটাই কারাগার ভেতরে থাকা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের হাতে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।

কারাগারের ভেতরে ও আদালতে আনা-নেওয়ার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির অভাবে তারা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

৫ আগস্টের পর দেশে অধিকাংশ হামলা-ভাঙচুর, আগুন ও নাশকতার ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত। যদিও দলটির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন, সেখান থেকেই মূলত নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মাধ্যমে নির্দেশনা দিচ্ছেন।

সম্প্রতি সালমান এফ রহমানের নির্দেশে গাজীপুরে বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের ব্যানারে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নাশকতায় জড়িয়ে পড়েন। সরকার এক সপ্তাহ চেষ্টার পর পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কারাগারে আরাম-আয়েশে জীবনযাপনের মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানান ফন্দিফিকিরে জড়িত। কারাগারের ভেতর থেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বাইরে যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন।

আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় প্রিজন ভ্যান ও কোর্টের গারদখানা থেকে চিরকুট ও মোবাইল ফোন ব্যবহার নিত্যদিনের ঘটনা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতায় কারাবন্দি প্রভাবশালী অনুসারীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। এসবের ব্যবস্থা না নিয়ে সংশ্লিষ্টরা একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ব্যস্ত।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও গাজীপুরের কাশিমপুরের কেন্দ্রীয় কারাগারসহ সারা দেশের ৬৫টি কারাগারে পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সুবিধাভোগীরা সরকারপতনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, নেতকর্মী, আমলা ও পুলিশ কর্মকর্তারা কারারক্ষীদের সহযোগিতায় আরাম-আয়েশে জীবন কাটাচ্ছেন। কারাগারে বন্দি এমপি-মন্ত্রী-আমলাদের মধ্যে অধিকাংশই ডিভিশন পেয়েছেন, অন্যদিকে আবেদন না করা এবং কাগজপত্রের জটিলতার কারণে অনেকে তা পাননি।

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী প্রভাবশালীরা কারাগারে নিজেদের অনুসারী কারাসদস্যদের সহযোগিতায় ও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বাড়তি সুবিধা নিচ্ছেন।

 কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে বিশেষ সুবিধা দাবি করলেও তাদের তা দেওয়া হচ্ছে না। কারাবিধি অনুযায়ী তারা যেসব সুবিধা পাওয়ার কথা, সেগুলোই দেওয়া হচ্ছে। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ বন্দিদের ক্ষেত্রে বাড়তি নজরদারি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, কারাগারে ভিআইপি বন্দিরা মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। জেলের ভেতরে থেকেই বাইরে যোগাযোগ রক্ষা করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র লিপ্ত বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।

জেলের ভেতরে বাড়তি নজরদারির মধ্যেই গোপনে মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য অ্যাপ দিয়ে বিভিন্ন নির্দেশ ও নির্দেশনা দিচ্ছেন।

ভিভিআইপিদের আলাদা কক্ষ থাকায় রাতের বেলায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে সুবিধা হয়। এছাড়া চিঠি লিখে কারারক্ষীদের মাধ্যমে বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

মূলত গোয়েন্দা নজরদারির অভাব ও গাফিলতির সুযোগে নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ শিকার করেছে।

অভিযোগ রয়েছে, অনেকে ডিভিশন পাওয়ার যোগ্য না হয়েও বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন। তারা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে এবং অসাধু কারা সদস্যদের সহযোগিতায় বা টাকার বিনিময়ে বিলাসী জীবন কাটাচ্ছেন। 

বাইরের খাবার, অসুস্থতার দোহাই দিয়ে দিনের পর দিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে কেবিনে থাকছেন।

সর্বশেষ অসুস্থ না হয়েও দেশ টিভির এমডি আরিফ দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলেন। মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও আমলারা নিয়ম অনুযায়ী ডিভিশন-সুবিধা পেয়ে থাকেন।

ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে কাজের লোকও পান। কাজের লোক একধরনের সেবক হিসেবে কাজ করেন। ওই সেবক ভিআইপি বন্দির কাপড় ধুয়ে দেন, খাবার সংগ্রহ করে দেন, প্লেট ধুয়ে দেন।

এছাড়া আনুষঙ্গিক কাজ করে দেন।
সম্প্রতি সাবেক মন্ত্রী দিপু মনি ও প্রতিমন্ত্রী ডা. এনাম চিঠি লিখে আইনজীবীর মাধ্যমে বাইরে থাকা স্বজন ও নেতাকর্মীদের কাছে পাঠিয়েছেন।

কারাগার থেকে আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়া ভিআইপি বন্দিদের হাতে থাকা ব্যাগে কী থাকে, তা নিয়েও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ব্যাগের ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর বন্দিদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পুলিশের।

ফলে ব্যাগের বিষয়টি পুলিশই বলতে পারবে। তবে সাধারণ বন্দিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার সময় তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় দুপুরের খাবার হিসাবে রুটি, কলা ও ডিম।

ভিআইপি বন্দিদের কোনো খাবার দেওয়া হয় না। কারণ সাধারণত তাদের দুপুর ১২টার মধ্যেই আদালত থেকে কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়।

আদালত এলাকায় অনেক সময় ভিআইপিদের স্বজনেরা রুমাল, টাওয়ালসহ ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যাগে করে আসামিদের প্রদান করে থাকেন।

সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে ভিআইপি বন্দিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানসহ অনেকের হাতে ব্যাগ দেখা গেছে।

বর্তমানে কাশিমপুর পার্ট-২ কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান।

৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার হওয়া প্রভাবশালী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে ১০৬ জন পেয়েছেন ডিভিশনের সুবিধা।

তাদের মধ্যে ৪২ জন সরকারি কর্মকর্তা, ২৯ জন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী, ২২ জন এমপি এবং অন্যান্য ১৩ জন। আর ডিভিশন পাননি ৩১ জন।

সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, টিপু মুন্সি, শাজাহান খান, নুরুল ইসলাম সুজন, আসাদুজ্জামান নূর, ফরহাদ হোসেন, নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, সাধন চন্দ্র মজুমদার, আবুল কালাম আজাদ, মুহাম্মদ ফারুক খান প্রমুখ ডিভিশন সুবিধায় কারাগারে আছেন।

আইজি প্রিজন্স (কারা মহাপরিদর্শক) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘কারাগার থেকে আদালতে হাজিরার জন্য বন্দিদের নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

জেলগেটের বাইরে যদি কোনো বিচ্যুতি ঘটে, সেটার দায়ভার আমাদের নয়। কারাগারের ভেতরে নিয়মে চলার জন্য সব ধরনের চেষ্টাই আমরা করছি।

শতভাগ সফল হচ্ছি সেটা বলব না, তবে কারা কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি গেজেটেড অফিসাররা কারাগারে এলে ডিভিশন পেয়ে যান।

বাকি যারা বিশিষ্ট ব্যক্তি বা এমপি-মন্ত্রী, তারা আবেদন করবেন অথবা এ বিষয়ে আদালত বললে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

যাদের বিষয়ে আদালত বলবেন না, তারা যদি আবেদন করেন, তখন আবেদনটি ডিসির কাছে পাঠাব।

ডিসি যদি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা তাদের ডিভিশন দিতে পারব।’
ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, কারাগারে বন্দিরা নিয়ম অনুযায়ী সুবিধা পাচ্ছেন।

সম্প্রতি গ্রেপ্তার সবাইকে কয়েকটি ভাগে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে। কারণ সাধারণ সেলগুলোতে অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাখলে তাদের সমস্যা হতে পারে।

এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থেও একই জায়গায় তাদের রাখা হয়নি। বাড়তি সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, কারাগারের ভেতরে সিনিয়র কর্মকর্তারা নিয়মিত মনিটরিং করে থাকেন, যাতে ত্রুটি না হয়।

দেড় হাজার মানুষকে হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে গত দেড় দশক দেশকে শাসন করার পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য সারা দেশে শত শত মামলা হয়েছে।

এই মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ২৭ জন মন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের ছয়জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী।

গ্রেপ্তার হয়েছেন তিন উপদেষ্টাও। এর বাইরে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন হাসিনা সরকারের সাবেক ৪৫ সংসদ সদস্য ও সাবেক ১১ জন আমলা।

এ ছাড়া পুলিশের সাবেক দুজন মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) ৩২ জন পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন।

পাশাপাশি আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি ও পাঁচজন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছেন।

আরও গ্রেপ্তার হয়েছেন বিভিন্ন ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে তার সরকার ও দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

গ্রেপ্তার সাবেক ২৭ জন মন্ত্রী হলেন- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম, গণপূর্তমন্ত্রী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস।

গ্রেপ্তার মন্ত্রীদের মধ্যে কেবল সাবের হোসেন চৌধুরী ও এম এ মান্নান জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। অন্যরা সবাই কারাগারে আছেন।

এর বাইরে গ্রেপ্তার অপর ৬ প্রতিমন্ত্রী হলেন- সাবেক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার।

আর গ্রেপ্তার তিন সাবেক উপমন্ত্রী হলেন-পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার।

বিচারের মুখোমুখি ৪৫ জন সাবেক সংসদ সদস্য। তারা হলেন-সাবেক চিফ হুইপ পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ, ঢাকা-৭ আসনের হাজি সেলিম, হাজি সেলিমের ছেলে সোলাইমান সেলিম, মাদারীপুর-৩ আসনের আবদুস সোবহান গোলাপ, হবিগঞ্জ-৪ আসনের সৈয়দ সায়েদুল হক, নেত্রকোনা-৫ আসনের আহমদ হোসেন, কক্সবাজার-৪ আসনের আবদুর রহমান বদি, চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম এ লতিফ, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের তানভীর ইমাম, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের আব্দুল আজিজ, ঢাকা-১০ আসনের শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বরিশাল-২ আসনের শাহে আলম তালুকদার, কুষ্টিয়া-৪-এর সেলিম আলতাফ জর্জ, ঢাকা-১৩-এর সাদেক খান, বগুড়া-৬ আসনের রাগেবুল আহসান, রাজশাহী-৪ আসনের এনামুল হক, রাজশাহী-৬ আসনের রাহেনুল হক রায়হান, নরসিংদী-৩ আসনের সিরাজুল ইসলাম, ভোলা-২ আসনের আলী আজম মুকুল, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের জান্নাত আরা হেনরী, খুলনা-৬ আসনের রশীদুজ্জামান মোড়ল, সিলেট-২ আসনের ইয়াহিয়া চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের মহিবুর রহমান মানিক, খুলনা-৪ আসনের আব্দুস সালাম মুর্শেদী, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের দবিরুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের মাজহারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-১৫-এর আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী, বরগুনা-১-এর ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, ঝিনাইদহ-২-এর তাহজীব আলম সিদ্দিকী, লক্ষ্মীপুর-১-এর এম এ আউয়াল, চট্টগ্রাম-৬-এর এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, ঝিনাইদহ-১ আসনের নায়েব আলী জোয়ার্দার, বরিশাল-৩-এর গোলাম কিবরিয়া টিপু, জামালপুর-৫ আসনের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা-৭-এর মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, রাজশাহী-৪-এর আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী-৩-এর আসাদুজ্জামান আসাদ, ঝালকাঠি-১-এর শাহজাহান ওমর, গাইবান্ধা-২-এর মাহবুব আরা বেগম গিনি, নোয়াখালী-৪-এর একরামুল করিম চৌধুরী, কুমিল্লা-৮ আসনের নাসিমুল আলম চৌধুরী, নীলফামারী-৩-এর রানা মোহাম্মদ সোহেল, হবিগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান, সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের আহমেদ নাজমীন সুলতানা ও মোসা. সাফিয়া খাতুন।

আমলাদের মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মহিবুল হক, সমাজকল্যাণ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার, সাবেক যুব ও ক্রীড়াসচিব মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল এবং নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. জাহাংগীর আলম। পুলিশের সাবেক দুই আইজিপিসহ গ্রেপ্তার ৩২ জন।

তারা হলেন-সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও শহীদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মশিউর রহমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম, সারদা পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর সালেহীন ইমন, ডিএমপির এসি জাবেদ ইকবাল, ডিএমপির এসি রাজন কুমার সাহা, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।

পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান ও চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েল।

আরবি/জেডআর

Link copied!