শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৯:৪৫ এএম

চাহিদা মতো ৫ ব্যাংকে মিলছে না টাকা

শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৯:৪৫ এএম

চাহিদা মতো ৫ ব্যাংকে  মিলছে না টাকা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দুর্বল কয়েকটি ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা অর্থ সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবুও ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট কাটেনি। যার কারণে আমানতকারীদের চাহিদা মতো অর্থ সহায়তাও দিতে পারছে না। চরম সংকটে থাকা বেসরকারি ১১টি ব্যাংকের মধ্যে এখনো পাঁচটি সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এমনকি দেশ-বিদেশে চিকিৎসা খরচ, সন্তানের শিক্ষাব্যয় এবং হজে যাওয়ার জন্য টাকাগুলো থেকে টাকা তুলতে পারছেন না অধিকাংশ গ্রাহক।

এখনো তীব্র তারল্য সংকটে ভুগছে পাঁচটি ব্যাংক। তার মধ্যে পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। চাহিদার সামান্য টাকা মিলছে এসব ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে। সংকটে ভোগা ব্যাংকগুলোর অধিকাংশ শাখা এখন দিচ্ছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। চাহিদার পরিমাণে টাকার জন্য ধরনা দিয়ে অবশেষে খালি হাতে ফিরছেন গ্রাহক। 

জমানো টাকা কবে পাবেন তারও সদুত্তর নেই। তবে ইসলামী ব্যাংক সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে। গত রোববার ও গতকাল সোমবার ঢাকার মতিঝিল, পল্টন ও আগারগাঁওয়ের দুর্বল কয়েকটি ব্যাংকের শাখা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আওয়ামী সরকারের আমলে নামে-বেনামে টাকা সরিয়ে নেওয়ায় ব্যাংকগুলো অর্থ সংকটে ভুগছে। যার কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বেসরকারি ১১টি ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠিত হলেও ব্যাংকগুলোর ব্যবসায় কোনো গতি নেই। 

তবে সংকটাপন্ন পাঁচটি ব্যাংকসহ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ-এই ছয়টি ব্যাংকের নতুন ঋণ প্রদান, নবায়ন বা বন্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগও নিষিদ্ধ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংক নতুন করে ঋণ বিতরণ বা আগের ঋণ নবায়নও করতে পারবে না।

ব্যাংকগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। তবে রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্স পাওয়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অধিকাংশ ক্লিনিক্যালি ডেথ বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার পলিসি ফর ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিহীনতার ফল এটি। এখন আরও ভয়াবহ আশঙ্কার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সহায়তা দিয়ে টেকানোর চেষ্টা করছে, তবে আগামীতে কী হবে তা বলা মুশকিল।

আমানত ফেরতের প্রসঙ্গে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের মতিঝিল শাখার গ্রাহক তারিক মাহমুদ বলেন, এই ব্যাংকে টাকা রেখে মহাবিপদে আছি। প্রতিদিন ঘুরছি কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। অথচ গণমাধ্যমে জানতে পারছি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। গ্রাহকের চাহিদা মতো টাকা দেবে এসব ব্যাংক। 

কিন্তু বাস্তবে টাকা দেওয়ার কোনো নাম নেই। তিনি বলেন, ১০ লাখ টাকার বদলে ৫ হাজার টাকা দিতে চায়। এভাবে টাকা জমা রেখে বিপদে পড়ব তা কখনো ভাবিনি। এমনকি ভারতে চিকাৎসার জন্যও যেতে পারছি না। আর ভিসার মেয়াদ আছে ২০ দিন। নতুন ভিসা পাওয়া অনেক দুষ্কর। এই ব্যাংক কেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না।

পদ্মা ব্যাংকের শাখা মতিঝিল থেকে প্রতি গ্রাহকের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৫ হাজার টাকা। অতিরিক্ত টাকা দিতে পারছে না ব্যাংক ম্যানেজার হাশমতুল্লাহ। তিনি বলেন, আমাদের সংকট রয়েছে। তবে সবাইকে অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। আপাতত আমরা গ্রাহকের চাহিদা মতো টাকা দিতে পারছি না। তবে কিছু দিয়ে চেষ্টা করছি আমরা।

দিলকুশা শাখার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক তাহুরুল হক বলেন, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ দিতে না পারলেও বাড়ানো হয়েছে পরিমাণ।

ন্যাশনাল ব্যাংকের রংপুর শাখার গ্রাহক মুনির হোসেন জানান, হজের জন্য বিদেশ যাওয়ার টাকা তুলতে পারছি না। শুধু বারবার তারিখ দেয় কিন্তু টাকা দেয় না। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানান, চাহিদা মতো টাকা দিতে ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার বাস্তবে মিল নেই। গভর্নরের নির্দেশনার পরও যদি টাকা না দেয়, তাহলে কী করার আছে?

ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তৌহিদুল আলম খান বলেন, আমরা নগদ টাকা সবাইকে দিচ্ছি না। তবে আরটিজিএস পদ্ধতিতে টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু টাকা একবারে নিতে আসলে দেওয়াটা কঠিন। কোনো গ্রাহক আর ফেরত যাবে না। 

দুর্বল ছয় ব্যাংকে এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। 

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু সব গ্রাহক যেন একবারে টাকা তুলতে না যায়। তখন বিপদ বাড়বে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক দায়িত্ব নিয়েছে। এখন সবাই টাকা পাবে। সামনে সংকট দূর হবে বলে আশা করা যায়।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!