প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি, খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি আর কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় অপরাধের ডেঞ্জার জোনে পরিণত হয়েছে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও উত্তরা এলাকা।
এসব এলাকায় প্রতিনিয়তই অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ডাকাতি ও রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। মোহাম্মদপুর, উত্তরাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ।
দুর্বৃত্তদের নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫ আগস্টের আগে পরে সবচেয়ে বেশি ভিক্টিমাইজ হয়েছে পুলিশ। এতে তাদের মনোবল নষ্ট হয়েছে। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে অপরাধীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহত্তর মোহাম্মদপুরের শ্যামলী, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এবং পুরো উত্তরা এলাকায় চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের পাশাপাশি আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অপরাধের মাত্রা অন্যান্য সময়ের তুলনায় দিগুণ হয়েছে।
মারামারিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। পুলিশ তাদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে।
দলবেঁধে অস্ত্র প্রদর্শন করে চলাচল করায় তাদের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ।
এছাড়া তারা মাদক সেবনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিল। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা রাস্তাঘাটে ইভটিজিং, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপ্রীতিকর ভিডিও শেয়ারসহ বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কার্যক্রমের সঙ্গেও জড়িত।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। হঠাৎ সারা দেশে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা নানামুখী অপরাধে যুক্ত হচ্ছে।
নিজেদের হিরোইজম জাহির করতে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক কারবার এমনকি খুনোখুনিতে লিপ্ত হচ্ছে এসব কিশোর-তরুণ। এতে আতঙ্কিত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর-পাড়া-মহল্লার বাসিন্দারা।
আওয়ামী লীগের পতন হলেও দল পাল্টে এখনো অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। অতীতের মতো এখনো রাজনৈতিক নেতা কিংবা প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তারা। তবে পুলিশের কাছে শুধু কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধের আলাদা কোনো তথ্য নেই।
সদস্য বাড়া ও তাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বলছে, কিশোর গ্যাং আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।
মোহাম্মদপুর ও উত্তরার বাসিন্দারা কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ।
এ দুই এলাকা ছিনতাইয়ের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, চিহ্নিত এলাকাগুলোয় টহল বাড়ানো হয়েছে। লাগাতার অভিযানে ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর ও উত্তরার অলিগলিতে গ্যাং সদস্যদের প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া বাড়ছে। তারা দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করছে। আধিপত্য বিস্তারে প্রতিপক্ষকে হামলা করছে।
এতে সাধারণ পথচারীরাও হচ্ছে আক্রান্ত। অধিকাংশ কিশোর গ্যাং সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের সন্তান। তারা সহজে অর্থ উপার্জনের লোভে অপরাধে জড়ায়। রাতে নির্জন রাস্তায় ছিনতাই করছে কিশোর গ্যাং।
ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকাপয়সা ছিনিয়ে নিচ্ছে। প্রতিরোধ করতে গেলে হামলা করছে। গত ছয় মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বহু কিশোর অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে, তবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। অপরাধীরা জামিনে বের হয়ে আবার একই কাজে জড়াচ্ছে।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ‘গোলাগুলি’তে দুই সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, চাঁদ উদ্যান এলাকায় ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছিল।
নিহত, গ্রেপ্তার ও পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা দুটি করে।
অন্যদিকে, উত্তরায় সম্প্রতি এক নারী ও এক পুরুষের ওপর প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র (রামদা) দিয়ে হামলা চালায় কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্য।
স্থানীয়রা হামলাকারীদের ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। দিনে-রাতে ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই ও খুনের মতো ঘটনা বাড়ছে। এমনকি কিছু ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটছে। নিরিবিলি রাস্তায় ওত পেতে থাকে ছিনতাইকারীরা।
এদের তৎপরতায় গত কয়েক মাসে শ-খানেক খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে। প্রতিদিনই তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।
অতি তুচ্ছ ঘটনা থেকে শুরু করে পান থেকে চুন খসলেই এরা প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি করে ত্রাসের রাজত্ব।
এছাড়া কুপিয়ে জখম, ছিনতাই, ডাকাতি ও খুনের মতো ভয়ংকর অভিযোগও এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক, সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ এ বি এম নাজমুস সাকিব রূপালী বাংলাদেশকে জানান, জুলাই আন্দোলনে পুলিশ সবচেয়ে বেশি ভিক্টিমাইজ হয়েছে। এতে পুলিশের মনোবল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।
হারানো মনোবল ফিরে পেতে সময় লাগবে। এদিকে এই সুযোগে অপরাধীরা অপরাধের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। ঢাকায় সব থানায় পুলিশ সদস্যরা বদলি হয়ে এসেছে সারা দেশ থেকে। তাদের থিতু হতে সময় লাগবে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধ প্রবণতায় ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে।
বর্তমানে ছিনতাই, কিশোর গ্যাং, সহিংসতা, সংঘাত, খুন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের মতো অপরাধ কমে আসার কথা থাকলেও তা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা নিম্ন আয়ের পরিবারের মাদকতাসক্ত সন্তান, তারা স্বশিক্ষিত থাকার কারণে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রের উচিত তাদের শিক্ষিত করে তোলা, তাহলে তাদের দ্বারা অপরাধের মাত্র কমবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে পুলিশের মনোবল ফেরাতে আরও তৎপর হতে হবে সরকারকে।
মোহাম্মদপুর, উত্তরাসহ নগরীর থানার পুলিশ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। পুলিশও ভয়ে ভয়ে ডিউটি করছে। তাদের যে সাপোর্ট দরকার, সেটাও তারা পাচ্ছে না।
মামলা হলেও তদন্ত করতে ভয় পাচ্ছে। সরকারের উচিত দ্রুত পুলিশ বাহিনীকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা।
পুলিশ জানায়, উত্তরা এলাকার গ্যাংগুলোর মধ্যে রয়েছে নাইন স্টার, পাওয়ার বয়েজ, বিল বস, নাইন এমএম বয়েজ, সুজন ফাইটার, ক্যাসল বয়েজ, আলতাফ জিরো, ভাইপার, তুফান।
মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারিদের নেতৃত্বে চলছে কিশোর গ্যাংগুলো। একসময় স্থানীয় ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসু ও কাসুর কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান ছিলেন ডিবি সুমন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হাসু ও কাসু পালিয়ে যাওয়ায় তাদের অনুপস্থিতিতে তার ভাই স্বাধীনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছেন তিনি। স্বাধীনের ইন্ধনে পুরো এলাকায় ত্রাস কায়েম করতে এমন মহড়া দিয়েছে চক্রটি।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও উত্তরার থানা থেকে লুট করা অস্ত্র চলে যায় অপরাধীদের হাতে।
এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত করছে স্থানীয় কিশোর গ্যাংসহ সংঘবদ্ধ চক্র।
এমন পরিস্থিতি তটস্থ হয়ে উঠেছে মোহাম্মদপুর ও উত্তরার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
এই অবস্থায় জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে মোহাম্মদপুর ও উত্তরায় সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী।
কিশোর গ্যাংসহ নানা শ্রেণির অপরাধীরা দাপটের সঙ্গে অস্ত্র ব্যবহার করছে। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ফুটপাত দখল, আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক বিরোধ কিংবা সামান্য দ্বন্দ্বÑ প্রায় সব ক্ষেত্রেই আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিশেষ করে রাতে নগরীর নিরাপত্তাহীনতা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ নাগরিকেরা।
মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় নিয়মিত গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে।
উত্তরার প্রতিটি সেক্টর এবং মোহাম্মদপুরের বসিলা, ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, বসিলা গার্ডেন সিটি, ৪০ ফিট, নবোদয় হাউজিংসহ অন্য এলাকা রীতিমতো অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরো রাজধানীতে অস্ত্রবাজির পেছনে বিগত জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুটেরাদের ভূমিকা রয়েছে।
পুলিশের তথ্যমতে, গত দুই মাসের তুলনায় রাজধানীতে অস্ত্র ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে।
চলতি মাসে অন্তত ৫০টি ঘটনায় দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। শুধু মোহাম্মদপুর বা উত্তরা নয়, প্রায় প্রতিদিনই নগরীর মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, গাবতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রের ভয়াবহ ব্যবহার বেড়েছে।
বিশেষ করে রাত নামলেই ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে। যে কারণে সম্পদ লুটের পাশাপাশি ঘটছে হতাহতের ঘটনাও।
সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরা, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া এবং অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর হামলার ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।
এসব ভিডিওতে দেখা গেছে, দ্বন্দ্ব বা আধিপত্যের বিস্তার নিয়ে সশস্ত্র ব্যক্তিরা জনবহুল সড়ক, বাজার কিংবা আবাসিক এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ৪০ শতাংশই কিশোর।
৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত দেশে দুই শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের ৫ হাজারেরও বেশি সদস্য ছিল। ৫ আগস্টের পর সেই সংখ্যা দিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দারা।
সূত্রমতে, মোহাম্মদপুর ও উত্তরা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের তৎপরতা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে, যা নিয়ে খোদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চিন্তিত।
সেনাবাহিনী ও পুলিশের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী চলমান থাকলেও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা চালিয়ে ৫ হাজার ৭৫০টি অস্ত্র লুট করা হয়েছিল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানে ৪ হাজার ৩৬৬টি অস্ত্র উদ্ধার করলেও এখনো ১ হাজার ৩৮৪টি অস্ত্র অপরাধীদের হাতে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব অস্ত্রের কারণেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে।
তাদের হাতে এখন পিস্তলসহ আধুনিক ধারালো অস্ত্রও রয়েছে। পুলিশের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ঢাকার মধ্যে বৃহত্তর মোহাম্মদপুর ও উত্তরা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি।
এ দুটি স্থানে একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের কয়েক হাজার সদস্য রয়েছে। আদাবর এলাকার আলিফ হাউজিং, শ্যামলী হাউজিং, শেখেরটেক ও ঢাকা উদ্যান এবং উত্তরা প্রতিটি সেক্টেরে সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে এদের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান রূপালী বাংলাশেকে বলেন, ‘কিশোর গাং সদস্যদের ধরতে মাঠে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বিশেষ ব্লকরেড দিয়ে চক্রের সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হবে। অপরাধীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে হঠাৎ এসে হামলা করে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। শিগগিরই চক্রগুলো নির্মূলে জোরালো অভিযান শুরু হবে।
অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে সব ধরনের অপরাধীকে ধরতে নিয়মিত অভিযান চলছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মুনীম ফেরদৌস রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সম্প্রতি মোহাম্মদপুর ও উত্তরা এলাকায় অপরাধ বেড়েছে।
কিশোর গ্যাং ও সব ধরনের অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে এর আগেও র্যাবের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।
পট পরিবর্তনের পর থেকে এসব কিশোর গ্যাং গ্রুপ কালচার আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে র্যাব। পাড়া-মহল্লার এসব কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা তৈরি ও তাদের শনাক্ত করার বিষয়ে র্যাবের সব ব্যাটালিয়নকে এরই মধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কিশোর গ্যাং গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকদের শনাক্তেও কাজ করছে র্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়ন।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে জানান, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমাতে ডিএমপি সার্বক্ষণিক কাজ করছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
ডিমএমপি কমিশনারের নির্দেশনায় ঢাকায় এলাকাভিত্তিক তালিকা তৈরি করে অপরাধে জড়িত কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের প্রতিদিনই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টেও’ কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এনামুল হক সাগর রূপালী বাংলাদেশকে জানান, শুধু মোহাম্মদপুর ও উত্তরা নয়, রাজধানীসহ সারা দেশে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার কাজ করছে পুলিশ। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।